রাস্তার কারণে মানুষ মারা গেলে কবর দেওয়ার জন্য কোনো জায়গা থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেছেন, “সবাই রাস্তা চায়, যার টু লেন আছে তাকে চার লেন করতে হবে। যার ফোর লেন আছে, তাকে সিক্স লেন করতে হবে। রাস্তা করে যানযট সমস্যার সমাধান করা যাবে না। রাস্তা যেভাবে হচ্ছে তাতে বাসাবাড়ির জন্য কোনো জায়গা পাওয়া যাবেনা, শিল্প-কারখানার জন্যও কোনো জায়গা থাকবে না, এমনকি মানুষ মারা গেলে কবর দেওয়ার জন্যও কোনো জায়গা থাকবে না।”

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে বাসচাপায় হেফাজত নেতার মৃত্যু, সড়ক অবরোধ

৬ ঘণ্টা পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক

তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, “রাস্তার ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। রেল ও নৌপথের ব্যবহার বাড়াতে হবে। শুধু রাস্তা রাস্তা করলে আমরা কিন্তু আগাতে পারব না।”

বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের নাজুক অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, “ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যানজটের মূল কারণ ট্রাফিক বিভাগের গাফিলতি। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীসহ ১২ জন কর্মকর্তাকে ঢাকায় অফিসে না বসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোডের অস্থায়ী কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এ নির্দেশনা অমান্য করলে বা দায়িত্বে অবহেলা করলে তাদের বরখাস্ত করা হবে।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্বরোড এলাকায় যানজট নিরসনে একটি উড়াল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থের যোগান দেওয়া হবে এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ডিজাইন প্রণয়নসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মহাম্মদ দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার এহতেশামুল হকসহ সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

২০১৭ সালে একনেক সভায় আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন পায়। ২০২০ সালে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড তিনটি প্যাকেজের কাজ শুরু করে। তবে করোনা মহামারি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রকল্পের অগ্রগতি একাধিকবার পিছিয়ে যায়।

২০২৫ সালের ৩১ জুলাই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সম্প্রতি মেয়াদ আরো ১ বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। একইসঙ্গে ব্যয় বেড়েছে ১৬৩ কোটি টাকা।

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন প রকল প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ধানের শীষ আর দাঁড়িপাল্লার বাইরে ভোট করে জেতা কি কঠিন হয়ে গেল

জোট করলেও ভোট করতে হবে নিজ দলের প্রতীকে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের পর এখন বিধান এমনই দাঁড়িয়েছে। তাতে আগামী জাতীয় সংসদে দুই–তিনটি দল কর্তৃত্ব করবে কি না, এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে নৌকার অনুপস্থিতিতে প্রতীক হিসেবে ধানের শীষ ও দাঁড়িপাল্লার প্রাধান্য বিস্তারের ইঙ্গিতও স্পষ্ট হচ্ছে।

এত দিন জোট গড়লে বড় শরিক দলের প্রতীকে অন্যদের ভোট করার সুযোগ ছিল। এবার সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সংশোধিত আইন অনুসারে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য কোনো দলের প্রতীকে অংশ নিতে পারবে না।

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভোটের মাঠে সবচেয়ে বেশি তৎপর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল। বিএনপি প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেও ৩৭টি আসন ফাঁকা রেখেছে। বলা হচ্ছে—এগুলোতে জোটের শরিকদের ছাড় দেওয়া হবে। জামায়াত সারা দেশেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তবে তারাও ইসলামী সাতটি দলকে নিয়ে একধরনের জোট করার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো কোনো জোটে ভিড়ে কি না, সেই আলোচনা আছে।

২০০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পাঁচটি সংসদ নির্বাচনে প্রধান দলগুলো জোটবদ্ধ হয়েই অংশ নেয়। এসব নির্বাচনে সবাই না হলেও জোটের শরিক দলগুলোর অনেক প্রার্থীই নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করে জয়ী হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। মূলত নিজ দলের প্রতীকে ভোট করে জয়ী হওয়া কঠিন ভেবেই জোটের বড় দলের জনপ্রিয় প্রতীকে ভোট করা হতো।

বিএনপির ধানের শীষ এবং জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা পুরোনো প্রতীক। অন্যদিকে অনেক আলোচনা-জটিলতার পর শাপলা কলি প্রতীক পেয়েছে এনসিপি। জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙল রয়েছে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় নৌকা থাকবে না ভোটে।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও সংশোধন করেছে। জোটবদ্ধ দলের প্রতীক বরাদ্দ প্রসঙ্গে সংশোধিত আরপিওতে বলা হয়েছে, যদি দুই বা ততোধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে যৌথ প্রার্থী দিতে সম্মত হয়, তবে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। তবে ভোট করতে হবে প্রার্থীর নিজ দলের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকেই।

গত ২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়া নীতিগত অনুমোদন পায়। দলীয় প্রতীকে ভোটের বাধ্যবাধকতাকে জামায়াত ও এনসিপি স্বাগত জানালেও বিএনপি আপত্তি তুলেছিল। সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই ৩ নভেম্বর অধ্যাদেশ জারি হয়।

তরুণ ও যুবকদের নিয়ে গত মে মাসে ঢাকায় তারুণ্যের উৎসব করেছিল বিএনপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ