সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আসবেন। তাই কিশোরগঞ্জের ভৈরব স্টেশন সড়কের পাশের ময়লা-আবর্জনার স্তূপ ঢেকে দেওয়া হয়েছে রঙিন কাপড়ে। বিশেষ ব্যবস্থায় আবর্জনা আড়াল করা গেলেও দুর্গন্ধ আটকাতে না পারায় বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।

ভৈরব পৌর শহরের ঘোড়াকান্দা এলাকায় একটি বেসরকারি স্কুলের পরিচালক আক্তারুজ্জামান। আবর্জনার দুর্গন্ধে স্টেশন সড়ক লাগোয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আক্তারুজ্জামান দুঃখ করে বললেন, ‘উপদেষ্টা যাবেন বিলাসবহুল গাড়িতে। গাড়ির জানালা বন্ধ থাকার কথা। দুর্গন্ধ তাঁর নাক পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ নেই। সত্য আড়াল করতে স্থানীয় প্রশাসনের কত তৎপরতা। অথচ প্রতিকার পেতে আমরা কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করেও কিছুই হয়নি; বরং দিন দিন আবর্জনার স্তূপ বড় হচ্ছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভৈরব পৌর শহরের প্রধান সড়কের একটি স্টেশন সড়ক। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রেনের যাত্রাবিরতি দেয় ভৈরব স্টেশনে। সড়কের এক পাশে রেলওয়ের বড় পুকুর। পুকুরের মধ্যভাগ দিয়ে একটি সড়ক আছে। সড়কের এক পাশের পুকুরে কয়েক বছর ধরে পৌর কর্তৃপক্ষ আবর্জনা ফেলার স্থান হিসেবে ব্যবহার করছে। মূল শহরের প্রধান সড়কের পাশে আবর্জনা ফেলায় পথচারীদের নাক চেপে চলতে হয়। প্রতিকার পেতে স্থানীয় লোকজন আন্দোলনও করেছেন। শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করলেও প্রতিকার মেলেনি। সরকারি কাজে আজ বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে গিয়েছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সরাইলে যেতে তিনি ঢাকা থেকে ট্রেনে প্রথমে ভৈরবে আসেন। তাঁর আগমন উপলক্ষে পৌর কর্তৃপক্ষ আবর্জনার স্তূপ রঙিন কাপড় দিয়ে ঢেকে ফেলে।

বিকেল পৌনে চারটায় গিয়ে দেখা যায়, উপদেষ্টা চলে গেলেও পর্দা নামানো হয়নি। আসা-যাওয়ার পথে অনেকের নজর পড়ছে সেখানে। তবে আবর্জনা ঢাকা থাকলেও দুর্গন্ধের কারণে বেশির ভাগ পথচারীকে নাক চেপে সড়ক পার হতে দেখা যায়।

কিশোরগঞ্জের ভৈরব স্টেশন সড়কের ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। বিশেষ ব্যবস্থায় আবর্জনা আড়াল করা গেলেও দুর্গন্ধ আটকানো সম্ভব হয়নি। বুধবার বিকেলে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন সড়ক র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

ধানের শীষ আর দাঁড়িপাল্লার বাইরে ভোট করে জেতা কি কঠিন হয়ে গেল

জোট করলেও ভোট করতে হবে নিজ দলের প্রতীকে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের পর এখন বিধান এমনই দাঁড়িয়েছে। তাতে আগামী জাতীয় সংসদে দুই–তিনটি দল কর্তৃত্ব করবে কি না, এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে নৌকার অনুপস্থিতিতে প্রতীক হিসেবে ধানের শীষ ও দাঁড়িপাল্লার প্রাধান্য বিস্তারের ইঙ্গিতও স্পষ্ট হচ্ছে।

এত দিন জোট গড়লে বড় শরিক দলের প্রতীকে অন্যদের ভোট করার সুযোগ ছিল। এবার সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সংশোধিত আইন অনুসারে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য কোনো দলের প্রতীকে অংশ নিতে পারবে না।

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভোটের মাঠে সবচেয়ে বেশি তৎপর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল। বিএনপি প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেও ৩৭টি আসন ফাঁকা রেখেছে। বলা হচ্ছে—এগুলোতে জোটের শরিকদের ছাড় দেওয়া হবে। জামায়াত সারা দেশেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তবে তারাও ইসলামী সাতটি দলকে নিয়ে একধরনের জোট করার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো কোনো জোটে ভিড়ে কি না, সেই আলোচনা আছে।

২০০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পাঁচটি সংসদ নির্বাচনে প্রধান দলগুলো জোটবদ্ধ হয়েই অংশ নেয়। এসব নির্বাচনে সবাই না হলেও জোটের শরিক দলগুলোর অনেক প্রার্থীই নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করে জয়ী হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। মূলত নিজ দলের প্রতীকে ভোট করে জয়ী হওয়া কঠিন ভেবেই জোটের বড় দলের জনপ্রিয় প্রতীকে ভোট করা হতো।

বিএনপির ধানের শীষ এবং জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা পুরোনো প্রতীক। অন্যদিকে অনেক আলোচনা-জটিলতার পর শাপলা কলি প্রতীক পেয়েছে এনসিপি। জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙল রয়েছে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় নৌকা থাকবে না ভোটে।

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও সংশোধন করেছে। জোটবদ্ধ দলের প্রতীক বরাদ্দ প্রসঙ্গে সংশোধিত আরপিওতে বলা হয়েছে, যদি দুই বা ততোধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে যৌথ প্রার্থী দিতে সম্মত হয়, তবে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। তবে ভোট করতে হবে প্রার্থীর নিজ দলের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকেই।

গত ২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়া নীতিগত অনুমোদন পায়। দলীয় প্রতীকে ভোটের বাধ্যবাধকতাকে জামায়াত ও এনসিপি স্বাগত জানালেও বিএনপি আপত্তি তুলেছিল। সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই ৩ নভেম্বর অধ্যাদেশ জারি হয়।

তরুণ ও যুবকদের নিয়ে গত মে মাসে ঢাকায় তারুণ্যের উৎসব করেছিল বিএনপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ