শাপলা প্রতীক দিতে হবে নয়তো ধান, সোনালী আঁশ বাদ দিতে হবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
Published: 9th, October 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) হয় শাপলা প্রতীক দিতে হবে নয়তো ধান, সোনালী আঁশ বাদ দিতে হবে– এই শর্ত নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছেন এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের একথা বলেছেন তিনি।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, শাপলা প্রতীক ছাড়া এনসিপি নিবন্ধন নেবে না। তিনি বলেন, ‘শাপলা প্রতীক পেতে আইনি ও রাজনৈতিক কোনো বাধা দেখছি না। এর পরেও যদি শাপলা প্রতীক না দেওয়া হয়, তাহলে লড়াই চালিয়ে যাব। শাপলা ছাড়া এনসিপি নিবন্ধন নেবে না। শাপলা ছাড়া এনসিপি নিবন্ধন মানবে না।’
শাপলা প্রতীক দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি বা রাজনৈতিক বাধা নেই দাবি করে এনসিপির এই নেতা বলেন, অদৃশ্য শক্তির হাত রয়েছে। তিনি বলেন, কেন তারা শাপলা দেবে না সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো আইনি বা রাজনৈতিক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। নির্বাচন কমিশনের সামনে পথ দুটি- হয় প্রতীক দিতে হবে নয়তো ধান, সোনালী আঁশ বাদ দিতে হবে। এনসিপি নিবন্ধন মানবে না শাপলা ছাড়া। এ নিয়ে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হলে এর দায় কিছুটা নির্বাচন কমিশনেরও থাকবে।
শাপলা পাওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানান এনসিপির নেতা নাসীরুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘অধিকারের প্রশ্নে আপস হবে না। জল অনেক দূর গড়ানোর আশঙ্কা করছি। শাপলা ছাড়া নিবন্ধনে যাব না, নিবন্ধন ছাড়া কীভাবে একটি দল নির্বাচনে যাবে?’
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘কমিশনের অনেক সিদ্ধান্ত উনাদের মুখ দিয়ে বের না হলেও আমরা বিভিন্ন পত্রিকার প্রথম পেজের মাধ্যমে সেগুলো জানি। আমরা সে বিষয়গুলো নিয়ে তাদেরকে প্রশ্ন করেছি। “আমার দেশ’–এ একটি রিপোর্ট এসেছে যে, নির্বাচন কমিশনের নথি তাদের হাতে রয়েছে। একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নথি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় নথি একটি পত্রিকার হাতে যেতে পারে না। আমরা সেই প্রশ্নগুলো তাদের কাছে জবাবদিহি চেয়েছি।’
আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে প্রতীক প্রশ্নে সিইসি দুই ঘণ্টা নিশ্চুপ ছিলেন উল্লেখ করে নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘দুই ঘন্টা আমরা ওনাদেরকে প্রশ্ন করেছিলাম যে, প্রতীক প্রশ্নে যদি না দিতে চান সেটাতে আপনার ব্যাখ্যা কী? দুই ঘণ্টা উনারা নিশ্চুপ ছিলেন। কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেন নাই। উনাদের যে ধৈর্য শক্তি, সেটার আমরা যথেষ্ট প্রশংস করি কিন্তু আমরা এটা লাস্ট তাদেরকে বলে এসেছি যে, আপনি যদি শাপলা না দেন তাহলে আপনাকে ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
লকার থেকে উদ্ধার করা সোনা শেখ হাসিনার হলফনামায় দেখানো হয়েছিল কি
অগ্রণী ব্যাংকে দুটি লকার থেকে ৮৩২ ভরি সোনা পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে একটি লকার জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের নামে। অন্যটি শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার নামে।
দুদক আজ বুধবার বলেছে, অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদের নামে থাকা একটি লকারে ৪২২ ভরির কিছু বেশি সোনা পাওয়া যায়। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নামে থাকা একটি লকারে পাওয়া গেছে ৪১০ ভরি সোনা।
পূবালী ব্যাংকেও শেখ হাসিনার নামে একটি লকার থাকার কথা জানিয়েছে দুদক। সেখানে পাওয়া গেছে একটি ছোট চটের ব্যাগ। সেটি খালি ছিল।
দুদক বলছে, লকারের রক্ষিত চিরকুট ও বর্ণনা অনুযায়ী স্বর্ণালংকারগুলো শেখ হাসিনা, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং শেখ রেহানা ও তাঁর ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বলে ধারণা করা যাচ্ছে। সংস্থাটি সোনার মালিকানা সুনির্দিষ্ট করে আইনগত দায় নিরূপণ করবে বলে জানিয়েছে।
প্রশ্ন হলো, এই সোনা কি শেখ হাসিনার হলফনামায় দেখানো হয়েছিল?
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হতে শেখ হাসিনা হলফনামা জমা দিয়েছিলেন। তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন গোপালগঞ্জ–৩ আসন থেকে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে শেখ হাসিনার হলফনামাটি এখনো আছে। তাতে দেখা যায়, তিনি নিজের নামে ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছিলেন। সোনা ও মূল্যবান ধাতুর অর্জনকালীন মূল্য দেখিয়েছিলেন ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। সেখানে সোনার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি।
শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময়ও হলফনামায় সোনা ও মূল্যবান ধাতুর মূল্য বাবদ ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেখিয়েছিলেন।
আয়, সম্পদসহ আট ধরনের তথ্য হলফনামায় দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয় ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকেই।
দেখা যাচ্ছে, ২০০৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের হলফনামায় শেখ হাসিনার সম্পদের মধ্যে সোনা ও মূল্যবান ধাতুর মূল্যে কোনো হেরফের নেই।
রাজধানীর মতিঝিলে অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা লকারে স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি সোনার নৌকা ও হরিণ পাওয়া গেছে