জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের জোর করে বোরকা পরাবে না: শফিকুর রহমান
Published: 25th, November 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, তাঁদের দল দেশের শাসনক্ষমতায় গেলে নারীদের জোর করে বোরকা পরানো হবে না। তিনি বলেছেন, জামায়াত ক্ষমতায় এলে নারীদের বোরকা পরতে বাধ্য করবে—এমন ভয় দেখানো হয়। তবে জামায়াত ক্ষমতায় গেলে কাউকে জোর করে বোরকা পরাবে না।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে রূপসী প্রো-অ্যাকটিভ ভিলেজ রোডে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এ কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর পেশাজীবী পরিষদ।
সমাবেশে শফিকুর রহমান বলেন, যোগ্যতা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নারীরা দেশ গড়ার কাজে অংশ নেবেন। বর্তমানে নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা ও সম্মান নেই। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে।
জনগণকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ভোটের মাধ্যমে যাতে বিবেকের প্রতিফলন ঘটে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যারা ক্ষমতায় আসবে, জামায়াত তাদের অভিনন্দন জানাবে। আর জামায়াত জিতলেও যেন তারা অভিনন্দন জানায়।
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে উল্লেখ করে দলটির আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের অঙ্গীকার একেবারেই স্পষ্ট। আমরা শিক্ষা-স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব।’
বর্তমানে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভালো নয় আর স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভঙ্গুর বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের আমির। এ ছাড়া তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখা, সবার জন্য সমান সুযোগ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা, ভাঙাচোরা অর্থনীতিকে পুনরায় গড়ার এবং আমূল পরিবর্তন করার অঙ্গীকার করেন।
জামায়াত একটা অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। তিনি রাজনৈতিক দল, নির্বাচনের প্রার্থী, প্রার্থীর কর্মী, সহযোগীসহ সবাইকে রাজনীতিতে নেমে ‘কাদা–ছোড়াছুড়ি’ না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রাজনীতি যেন নীতি দিয়ে করা হয়। কেউ যেন গায়ের জোর খাটানোর চেষ্টা না করে, কালোটাকা দিয়ে মানুষের বিবেক কেনার দুঃসাহস না দেখায়।
শফিকুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগ ঘোষণা দিয়েছিল, ২০৪১ সাল পর্যন্ত তারা ক্ষমতায় থাকবে। সবকিছু সাজানো হয়েছিল ৪১ সালের জন্য। কিন্তু ২৪ সাল যে ৪১ হয়ে যাবে, তারা বুঝতে পারেনি।
গত বছর নিরস্ত্র মানুষের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘যারা বলেছিলেন আমরা পালাই না, তারা জানি না এখন কীভাবে কোথায় গেলেন। আমরা কোনো দিন এটা বলিনি যে আমরা পালাই না। তবে আলহামদুলিল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আমাদের এটুকু মেহেরবানি করেছেন যে আসলেই আমরা পালাইনি। আমরা ফাঁসির রশি গলায় নিয়েছি, কিন্তু দেশ থেকে পালাইনি।’
জামায়াত সংস্কারের দিকে যতবার এগোতে চেয়েছে, ততবার পেছনের দিকে টেনে ধরা হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এটা চাই না, ওটা চাই না, এটার দরকার নাই, শুধুমাত্র ইলেকশন দরকার। তো ইলেকশন তো আগেও হয়েছে, এই ইলেকশন তো এ দেশের মানুষকে কল্যাণ এবং মুক্তি তো দিতে পারেনি।’
শফিকুর রহমান আরও বলেন, নির্বাচন অবশ্যই প্রয়োজন। তবে নির্বাচনের মতো নির্বাচন প্রয়োজন। পুরোনো স্টাইলের নির্বাচন দিয়ে দেশে কেউ কল্যাণ আনতে পারবে না।
জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য, দুর্নীতি—তোমাকে লাল কার্ড। সন্ত্রাস—তোমাকে একেবারে কালো কার্ড। অবিচার—তোমার জায়গা সমাজে হবে না। একটা দুর্নীতিমুক্ত, সামাজিক সুবিচারে পরিপূর্ণ, একটা ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনীতির দেশ হিসেবে বুক চিতিয়ে যুদ্ধ করা যুবকদের হাতে, তাদের মেধার মূল্যায়ন করে, তাদের এ দেশের দেশ গঠনে কাজে লাগানো—সেই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে জামায়াত।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ক ষমত য় গ ল র আম র
এছাড়াও পড়ুন:
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর কঠিন পরীক্ষায় ভারত
ইডেনের পর গৌহাটিতে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি ভারত। নিজেদের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটে এমন পরীক্ষা শেষ কবে যে তারা দিয়েছিল!
ইডেনে হেরে গৌহাটিতে এসেছিল টিম ইন্ডিয়া। সিরিজ বাঁচানোর পরীক্ষা ছিল তাদের। কিন্তু স্কোরবোর্ডের যা চিত্র তাতে মনে হচ্ছে, এবার হোয়াইটওয়াশ হতেই হবে প্রোটিয়াদের কাছে! আজ বুধবার শেষ দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা ৮ উইকেট তুলে নিলেই হোয়াইটওয়াশ হবে ভারত।
আর স্বাগতিকদের পুরো দিন ব্যাটিং করে ম্যাচ বাঁচাতে লড়তে হবে। তাদের টার্গেট ৫৪৯ রান। চতুর্থ ইনিংসে ২৭ রান তুলতে ২ উইকেট হারিয়েছে রিশভ পান্তের দল। আউট হয়ে গেছেন যশস্বী জয়সোয়াল ও লোকেশ রাহুল। বাকিদের দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা।
টেস্টে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ৪১৮। এশিয়াতে এই রেকর্ড ৩৯৫ রান। উইকেটের যা অবস্থা তাতে ভারত রান তাড়া করতে গেলে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে আনবে। এক্ষেত্রে একটাই উপায় ম্যাচটাকে ড্র করা। তাতে হোয়াইটওয়াশ এড়ানো যাবে। কিন্তু সিরিজ বাঁচানো যাবে না।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে ২৬০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসে তারা ২৮৮ রানের লিড পেয়েছিল। মধ্যাহ্ন বিরতির পর তারা ৪০ মিনিট ব্যাটিং করেছিল। মূলত স্টাবসের সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিল তারা। তাকে ৪০ মিনিট সময় বেঁধে দিয়েছিল। চেষ্টায় প্রায় সফল হয়ে গিয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
৯৪ রানে থাকতে জাজেদাজে সুইপ করে ছক্কা উড়াতে গিয়েছিলেন। টাইমিং মেলাতে না পেরে বোল্ড হন স্টাবস। এরপরই ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্টাবস ছাড়া রান পেয়েছেন টনি জর্জি (৪৯), রিকেলটন (৩৫) ও মার্করাম (২৯)। ভারতের ৪টি উইকেটই নিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা।
পাহাড় টপকানোর চ্যালেঞ্জে শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছে ভারত। জানসেনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জয়সোয়াল। কিছুক্ষণ পর দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে লোকেশ রাহুলের স্টাম্প ভেঙে দেন সাইমন হার্মার। শাই সুদার্শান ও কুলদ্বীপ যাদব অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন।
ঢাকা/ইয়াসিন