ফিরে দেখা সময়ে পুনরাবৃত্তির অনুসন্ধান
Published: 25th, November 2025 GMT
আমাদের গন্তব্য কোথায়? তার খেই না পেয়ে অদৃষ্টের লিখনের ওপর নির্বিবাদে এই যাত্রা ছেড়ে দিয়েও দায়মুক্তি কি মেলে? পেছনে ফিরে তাকাতেই তো দেখি সেই অমোঘ নিষ্ঠুর বলে পশ্চাতের আমি ঠেলছে সেই আমাকেই, তারই গতিতে এগিয়ে চলেছি সামনে। অর্থাৎ অনির্দেশ্য, অলীক কিছু নয় এই এগিয়ে চলা। বেদনাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও হৃদয় খুঁড়ে দেখতেই হয় তাই। সেই সুবাদেই ফিরে দেখার প্রয়াস থেকে যায়, স্মৃতি কিংবা ইতিহাসের গ্রন্থিতে ব্যক্তি কিংবা গণের আলেখ্য থেকেই করে নিতে হয় সাম্প্রতিক সময়ের সূত্র নির্ণয়।
সেই ফিরে দেখার প্রসঙ্গেই ‘ফিরে দেখা’ শিরোনামে রাজধানীর লালমাটিয়ার কলাকেন্দ্রে, গ্যালারি পরিসরে ফিরে এসেছে বাংলাদেশের বিগত শতকের সাত থেকে নয়ের দশকের শিল্পীদের গড়া কিছুসংখ্যক চিত্র ও ভাস্কর্য। কাজী রকিব, দীপা হক, রতন মজুমদার, রুহুল আমিন কাজল, ঢালী আল মামুন, দিলারা বেগম জলি, নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য, সাইদুল হক জুইস, ফারেহা জেবা, হাবিবুর রহমান, লালা রুখ সেলিম, তৌফিকুর রহমান ও ওয়াকিলুর রহমান—এই ১৪ শিল্পীর কাজ স্থান পেয়েছে গ্যালারিতে। বর্তমানের প্রবীণ ও বয়োজ্যেষ্ঠ এই শিল্পীরাই সে সময়ের তারুণ্যোদ্দীপ্ত চোখে যে সময়কে দেখেছেন, অনুভব করেছেন, তারই সম্মিলিত অভিপ্রকাশ এ প্রদর্শনী। এখানে প্রত্যেক ব্যক্তিশিল্পীর সৃষ্টিই তাঁর নিজস্ব অনুভূতির তাড়নাজাত হলেও অভিব্যক্তিগতভাবে একটি ঐকতানের আভাস পাওয়া যায়।
১৯৪৭ সালের দেশ বিভাজনের পর থেকেই শুরু হওয়া এ দেশের প্রাতিষ্ঠানিক দৃশ্যশিল্পের অভিযাত্রায় ঐতিহাসিকভাবে প্রতি দশকেই সমকালীন শিল্পীদের কাজে তাঁদের প্রজন্মের ঐক্যসুরটিকে লক্ষ করা গেছে, যেখানে ব্যক্তিগত বোধের সঙ্গে সমাজ ও সময়ের বাস্তবতার সম্মিলন শিল্পীদের কাজের উপজীব্য।ঐকতানের এই সুর কেমন? ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাজনের পর থেকেই শুরু হওয়া এ দেশের প্রাতিষ্ঠানিক দৃশ্যশিল্পের অভিযাত্রায় ঐতিহাসিকভাবে প্রতি দশকেই সমকালীন শিল্পীদের কাজে তাঁদের প্রজন্মের ঐক্যসুরটিকে লক্ষ করা গেছে, যেখানে ব্যক্তিগত বোধের সঙ্গে সমাজ ও সময়ের বাস্তবতার সম্মিলন শিল্পীদের কাজের উপজীব্য। এটি বাস্তব যে ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের সুবাদে পাওয়া আধুনিকতার ধারণা ও অভ্যাসের মধ্য দিয়ে উপনিবেশোত্তর দেশগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক বনিয়াদ গড়ে উঠেছে; সেই বৃহৎ প্যারাডাইমের জেরে নিজস্ব স্টাইল ও পরিচয় নিয়ে ব্যক্তিশিল্পীর উঠে আসা অস্বাভাবিক ছিল না, হয়েছেও তা–ই। কিন্তু একক শিল্পী এখানে কখনোই বিচ্ছিন্ন নন তাঁর সমাজ ও যুগচিন্তা থেকে। এই প্রদর্শনীতেও একই প্রবণতার অনুরণন দেখা যায়। যেসব শিল্পীর কাজ উপস্থাপিত হয়েছে এখানে, তা নিছক তাঁদের ব্যক্তিক আত্মমগ্নতা নয়, এই প্রকাশকে উতরেও বিগত শতকের যে সময়ের মধ্য দিয়ে তাঁরা গিয়েছেন, এর সঙ্গে শিল্পীদের একটি মনস্তাত্ত্বিক সংযোগ পাওয়া যায় কাজগুলোয়।
১ / ১৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফিরে দেখা সময়ে পুনরাবৃত্তির অনুসন্ধান
আমাদের গন্তব্য কোথায়? তার খেই না পেয়ে অদৃষ্টের লিখনের ওপর নির্বিবাদে এই যাত্রা ছেড়ে দিয়েও দায়মুক্তি কি মেলে? পেছনে ফিরে তাকাতেই তো দেখি সেই অমোঘ নিষ্ঠুর বলে পশ্চাতের আমি ঠেলছে সেই আমাকেই, তারই গতিতে এগিয়ে চলেছি সামনে। অর্থাৎ অনির্দেশ্য, অলীক কিছু নয় এই এগিয়ে চলা। বেদনাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও হৃদয় খুঁড়ে দেখতেই হয় তাই। সেই সুবাদেই ফিরে দেখার প্রয়াস থেকে যায়, স্মৃতি কিংবা ইতিহাসের গ্রন্থিতে ব্যক্তি কিংবা গণের আলেখ্য থেকেই করে নিতে হয় সাম্প্রতিক সময়ের সূত্র নির্ণয়।
সেই ফিরে দেখার প্রসঙ্গেই ‘ফিরে দেখা’ শিরোনামে রাজধানীর লালমাটিয়ার কলাকেন্দ্রে, গ্যালারি পরিসরে ফিরে এসেছে বাংলাদেশের বিগত শতকের সাত থেকে নয়ের দশকের শিল্পীদের গড়া কিছুসংখ্যক চিত্র ও ভাস্কর্য। কাজী রকিব, দীপা হক, রতন মজুমদার, রুহুল আমিন কাজল, ঢালী আল মামুন, দিলারা বেগম জলি, নিসার হোসেন, শিশির ভট্টাচার্য, সাইদুল হক জুইস, ফারেহা জেবা, হাবিবুর রহমান, লালা রুখ সেলিম, তৌফিকুর রহমান ও ওয়াকিলুর রহমান—এই ১৪ শিল্পীর কাজ স্থান পেয়েছে গ্যালারিতে। বর্তমানের প্রবীণ ও বয়োজ্যেষ্ঠ এই শিল্পীরাই সে সময়ের তারুণ্যোদ্দীপ্ত চোখে যে সময়কে দেখেছেন, অনুভব করেছেন, তারই সম্মিলিত অভিপ্রকাশ এ প্রদর্শনী। এখানে প্রত্যেক ব্যক্তিশিল্পীর সৃষ্টিই তাঁর নিজস্ব অনুভূতির তাড়নাজাত হলেও অভিব্যক্তিগতভাবে একটি ঐকতানের আভাস পাওয়া যায়।
১৯৪৭ সালের দেশ বিভাজনের পর থেকেই শুরু হওয়া এ দেশের প্রাতিষ্ঠানিক দৃশ্যশিল্পের অভিযাত্রায় ঐতিহাসিকভাবে প্রতি দশকেই সমকালীন শিল্পীদের কাজে তাঁদের প্রজন্মের ঐক্যসুরটিকে লক্ষ করা গেছে, যেখানে ব্যক্তিগত বোধের সঙ্গে সমাজ ও সময়ের বাস্তবতার সম্মিলন শিল্পীদের কাজের উপজীব্য।ঐকতানের এই সুর কেমন? ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাজনের পর থেকেই শুরু হওয়া এ দেশের প্রাতিষ্ঠানিক দৃশ্যশিল্পের অভিযাত্রায় ঐতিহাসিকভাবে প্রতি দশকেই সমকালীন শিল্পীদের কাজে তাঁদের প্রজন্মের ঐক্যসুরটিকে লক্ষ করা গেছে, যেখানে ব্যক্তিগত বোধের সঙ্গে সমাজ ও সময়ের বাস্তবতার সম্মিলন শিল্পীদের কাজের উপজীব্য। এটি বাস্তব যে ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের সুবাদে পাওয়া আধুনিকতার ধারণা ও অভ্যাসের মধ্য দিয়ে উপনিবেশোত্তর দেশগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক বনিয়াদ গড়ে উঠেছে; সেই বৃহৎ প্যারাডাইমের জেরে নিজস্ব স্টাইল ও পরিচয় নিয়ে ব্যক্তিশিল্পীর উঠে আসা অস্বাভাবিক ছিল না, হয়েছেও তা–ই। কিন্তু একক শিল্পী এখানে কখনোই বিচ্ছিন্ন নন তাঁর সমাজ ও যুগচিন্তা থেকে। এই প্রদর্শনীতেও একই প্রবণতার অনুরণন দেখা যায়। যেসব শিল্পীর কাজ উপস্থাপিত হয়েছে এখানে, তা নিছক তাঁদের ব্যক্তিক আত্মমগ্নতা নয়, এই প্রকাশকে উতরেও বিগত শতকের যে সময়ের মধ্য দিয়ে তাঁরা গিয়েছেন, এর সঙ্গে শিল্পীদের একটি মনস্তাত্ত্বিক সংযোগ পাওয়া যায় কাজগুলোয়।
১ / ১৫