অটোরিকশার পেছনে নছিমনের ধাক্কা, ভাই–বোনসহ নিহত ৩
Published: 9th, October 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের দুই শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাড়াশ পৌরসভার উলিপুর সেতুর পূর্ব পাশে খুঁটিগাছা-মহিষলুটি আঞ্চলিক সড়কে নছিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন তাড়াশ পৌর শহরের দক্ষিণপাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে অটোরিকশার যাত্রী জনি (১০) ও মেয়ে তুবা (৮ মাস) এবং কোহিত গ্রামের বাসিন্দা অটোরিকশার আরেক যাত্রী হাইফোত হোসেন (৫২)। এ দুর্ঘটনায় রফিকুল ইসলামের স্ত্রী জান্নাতী খাতুন ও আরেক মেয়ে মালাইশা (৭) আহত হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর বরাতে জানা গেছে, সকালে গরুবোঝাই নছিমন একটি অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে হাইফোত হোসেন, শিশু জনি ও তুবা গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক হাইফোত ও জনিকে মৃত ঘোষণা করেন। সিরাজগঞ্জ শহরের হাসপাতালে নেওয়ার পথে তুবা মারা যায়।
বেলা দেড়টার দিকে তাড়াশ দক্ষিণপাড়ায় রফিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের মানুষ ভিড় করেছেন। কেউ শোকাহত পরিবারটিকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, কেউ নিহত শিশুদের জন্য কবর খোঁড়ার ও গোসল করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নিজ হাতে আমার ছেলেটাকে ব্রাশ করিয়ে দিয়েছি। হাত-মুখ ধুয়ে চুল আঁচড়ে দিয়েছি। নিজে স্ত্রী, ছেলে আর দুই মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় তুলে দিয়েছিলাম। চালককে অনুরোধ করে বলি, ভাড়া বেশি দেব—শুধু সন্তানদের আর স্ত্রীকে মহাসড়ক পার করে ওই পাশে নামিয়ে দিতে হবে। কিন্তু ওই পর্যন্ত যেতেই পারল না। পথেই এক ছেলে আর এক মেয়ে মারা গেল। স্ত্রী আর এক মেয়ে আহত হয়ে কাতরাচ্ছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাজেদুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই দুজন মারা যায়।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, মরদেহ স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ধানের শীষ আর দাঁড়িপাল্লার বাইরে ভোট করে জেতা কি কঠিন হয়ে গেল
জোট করলেও ভোট করতে হবে নিজ দলের প্রতীকে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের পর এখন বিধান এমনই দাঁড়িয়েছে। তাতে আগামী জাতীয় সংসদে দুই–তিনটি দল কর্তৃত্ব করবে কি না, এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে নৌকার অনুপস্থিতিতে প্রতীক হিসেবে ধানের শীষ ও দাঁড়িপাল্লার প্রাধান্য বিস্তারের ইঙ্গিতও স্পষ্ট হচ্ছে।
এত দিন জোট গড়লে বড় শরিক দলের প্রতীকে অন্যদের ভোট করার সুযোগ ছিল। এবার সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সংশোধিত আইন অনুসারে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য কোনো দলের প্রতীকে অংশ নিতে পারবে না।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভোটের মাঠে সবচেয়ে বেশি তৎপর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল। বিএনপি প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেও ৩৭টি আসন ফাঁকা রেখেছে। বলা হচ্ছে—এগুলোতে জোটের শরিকদের ছাড় দেওয়া হবে। জামায়াত সারা দেশেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তবে তারাও ইসলামী সাতটি দলকে নিয়ে একধরনের জোট করার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো কোনো জোটে ভিড়ে কি না, সেই আলোচনা আছে।
২০০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পাঁচটি সংসদ নির্বাচনে প্রধান দলগুলো জোটবদ্ধ হয়েই অংশ নেয়। এসব নির্বাচনে সবাই না হলেও জোটের শরিক দলগুলোর অনেক প্রার্থীই নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করে জয়ী হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। মূলত নিজ দলের প্রতীকে ভোট করে জয়ী হওয়া কঠিন ভেবেই জোটের বড় দলের জনপ্রিয় প্রতীকে ভোট করা হতো।
বিএনপির ধানের শীষ এবং জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা পুরোনো প্রতীক। অন্যদিকে অনেক আলোচনা-জটিলতার পর শাপলা কলি প্রতীক পেয়েছে এনসিপি। জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙল রয়েছে। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় নৌকা থাকবে না ভোটে।আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও সংশোধন করেছে। জোটবদ্ধ দলের প্রতীক বরাদ্দ প্রসঙ্গে সংশোধিত আরপিওতে বলা হয়েছে, যদি দুই বা ততোধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে যৌথ প্রার্থী দিতে সম্মত হয়, তবে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। তবে ভোট করতে হবে প্রার্থীর নিজ দলের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকেই।
গত ২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়া নীতিগত অনুমোদন পায়। দলীয় প্রতীকে ভোটের বাধ্যবাধকতাকে জামায়াত ও এনসিপি স্বাগত জানালেও বিএনপি আপত্তি তুলেছিল। সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই ৩ নভেম্বর অধ্যাদেশ জারি হয়।
তরুণ ও যুবকদের নিয়ে গত মে মাসে ঢাকায় তারুণ্যের উৎসব করেছিল বিএনপি