খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কুকুরের উৎপাত বন্ধে শুরু হচ্ছে বন্ধ্যত্বকরণ ও টিকাদান কর্মসূচি
Published: 10th, October 2025 GMT
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক সময়ে কুকুরের উৎপাত বেড়েছে। একাডেমিক ভবন, ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ কিংবা আবাসিক হল—সব জায়গাতেই দেখা যায় তাদের চলাচল। কুকুরের কারণে আতঙ্কিত হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা; কেউ কেউ আক্রমণের শিকারও হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি আলোচনায় এলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রাণিপ্রেমী শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এনেছেন মানবিক সমাধানের পথে।
প্রথমবারের মতো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হচ্ছে কুকুর নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক ও মানবিক উদ্যোগ– বন্ধ্যত্বকরণ (স্পে-নিউটার) ও টিকাদান কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রাণিপ্রেমী শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘স্নেহটেইল’-এর আয়োজনে এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে বিশেষায়িত দল ‘ফারি ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশন’। ১৬ অক্টোবর তারা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কুকুরগুলোর বন্ধ্যত্বকরণ অস্ত্রোপচার শুরু করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করেছে। দুটি কক্ষ প্রস্তুত রাখা হয়েছে—একটি আগত দলের আবাসনের জন্য, অন্যটি পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার ইউনিট হিসেবে। অস্ত্রোপচারের পর দুই দিন কুকুরগুলোর খাবার সরবরাহ এবং পর্যবেক্ষণের জন্য একজন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
স্নেহটেইলের প্রতিষ্ঠাতা তামান্না রহমান বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসে ৬০ থেকে ৭০টি কুকুর আছে। অনেক সময় এসব কুকুর শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে বা আক্রমণাত্মক আচরণ করে। আবার অনেক শিক্ষার্থী কুকুরগুলোকে খাবার দেন। তাঁরা এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছেন, যাতে মানুষ ও প্রাণী উভয়ই নিরাপদে থাকতে পারে। প্রাণী নিধনের পরিবর্তে নিয়ন্ত্রণ ও সহাবস্থানের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সবচেয়ে মানবিক পথ।
তামান্না রহমান আরও বলেন, ইতিমধ্যে কুকুরগুলো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এরপর বন্ধ্যত্বকরণ অস্ত্রোপচার ও র্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। অস্ত্রপচারের পর প্রতিটি কুকুরের গলায় পরিচয় বেল্ট পরানো হবে এবং কানের একটি অংশ কেটে চিহ্নিত করা হবে, যাতে সহজে বোঝা যায়, কুকুরটি নিরাপদ ও বন্ধ্যত্ব করা। কুকুরের পাশাপাশি বিড়ালগুলোকেও র্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীরা যে সচেতনতা, দায়িত্ববোধ ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছে, তা প্রশংসার দাবিদার। প্রশাসন এই উদ্যোগে পূর্ণ সহযোগিতা করছে। এর ফলে ক্যাম্পাস আরও নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লকার থেকে উদ্ধার করা সোনা শেখ হাসিনার হলফনামায় দেখানো হয়েছিল কি
অগ্রণী ব্যাংকে দুটি লকার থেকে ৮৩২ ভরি সোনা পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে একটি লকার জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের নামে। অন্যটি শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানার নামে।
দুদক আজ বুধবার বলেছে, অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদের নামে থাকা একটি লকারে ৪২২ ভরির কিছু বেশি সোনা পাওয়া যায়। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার নামে থাকা একটি লকারে পাওয়া গেছে ৪১০ ভরি সোনা।
পূবালী ব্যাংকেও শেখ হাসিনার নামে একটি লকার থাকার কথা জানিয়েছে দুদক। সেখানে পাওয়া গেছে একটি ছোট চটের ব্যাগ। সেটি খালি ছিল।
দুদক বলছে, লকারের রক্ষিত চিরকুট ও বর্ণনা অনুযায়ী স্বর্ণালংকারগুলো শেখ হাসিনা, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং শেখ রেহানা ও তাঁর ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বলে ধারণা করা যাচ্ছে। সংস্থাটি সোনার মালিকানা সুনির্দিষ্ট করে আইনগত দায় নিরূপণ করবে বলে জানিয়েছে।
প্রশ্ন হলো, এই সোনা কি শেখ হাসিনার হলফনামায় দেখানো হয়েছিল?
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হতে শেখ হাসিনা হলফনামা জমা দিয়েছিলেন। তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন গোপালগঞ্জ–৩ আসন থেকে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে শেখ হাসিনার হলফনামাটি এখনো আছে। তাতে দেখা যায়, তিনি নিজের নামে ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছিলেন। সোনা ও মূল্যবান ধাতুর অর্জনকালীন মূল্য দেখিয়েছিলেন ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা। সেখানে সোনার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি।
শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময়ও হলফনামায় সোনা ও মূল্যবান ধাতুর মূল্য বাবদ ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেখিয়েছিলেন।
আয়, সম্পদসহ আট ধরনের তথ্য হলফনামায় দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয় ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকেই।
দেখা যাচ্ছে, ২০০৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের হলফনামায় শেখ হাসিনার সম্পদের মধ্যে সোনা ও মূল্যবান ধাতুর মূল্যে কোনো হেরফের নেই।
রাজধানীর মতিঝিলে অগ্রণী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা লকারে স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি সোনার নৌকা ও হরিণ পাওয়া গেছে