ভারতের ত্রিপুরায় গরুচোর সন্দেহে তিন বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে খোয়াই থানার কারেঙ্গিছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত তিনজন হলেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাসুল্লা গ্রামের পণ্ডিত মিয়া (৪০), কবিলাসপুর গ্রামের সজল মিয়া (২৫) ও আলীনগর গ্রামের জুয়েল মিয়া (৩৫)। তাঁরা পেশায় দিনমজুর।

এ সম্পর্কে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এ এন এম সাজেদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনায় ত্রিপুরার অতিরিক্ত এসপি জাস্টিন জোসেফের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। জাস্টিন জোসেফের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এলাকার লোকজন চোর সন্দেহে তিন বাংলাদেশিকে আটক করেছিলেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিজিবি ও বিএসএফ সমন্বয় করে দুই দেশের পুলিশ লাশগুলো হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গতকাল ত্রিপুরা রাজ্যের কারেঙ্গিছড়া এলাকায় গরুচোর সন্দেহে জনতা তিন বাংলাদেশিকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে ভারতের বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। বিজিবি খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, নিহত ওই তিনজনের বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায়। পরে বিজিবির চুনারুঘাট বাল্লা ক্যাম্পের পক্ষ থেকে ওই তিন ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করা হয়। এরপর নিহত ব্যক্তিদের নাম ও পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

বিজিবির হবিগঞ্জ ৫৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিলুর রহমান আজ প্রথম আলোকে বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা পুলিশবিষয়ক কেস। এর সঙ্গে সীমান্তের কোনো ঘটনা জড়িত নয়। নিহত তিনজন চুনারুঘাট উপজেলার রেমা–কালেঙ্গা বনের সীমান্ত দিয়ে ত্রিপুরায় সংগোপনে প্রবেশ করেন। যেখানে ঘটনাটি ঘটে, স্থানটি সীমান্তের শূন্যরেখার চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার ভারতের অভ্যন্তরে। ভারতের ৭০ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক তাঁকে জানিয়েছেন, সেখানকার জনতা গরুচোর সন্দেহে ওই তিন বাংলাদেশিকে আটক করেন। পরে তাঁদের লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ।

নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই তিনজন গত মঙ্গলবার সকালে লাকড়ির সন্ধানে বনে ঢুকেছিলেন। সেখান থেকে না ফেরায় তাঁদের মধ্যে নানা শঙ্কা তৈরি হয়। পরে পুলিশ ও বিজিবির মাধ্যমে তাঁদের নিহত হওয়ার কথা জানতে পেরেছেন।

নিহত পণ্ডিত মিয়ার স্ত্রী রোজিনা আখতার বলেন, তাঁর স্বামী মঙ্গলবার কাজের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর ফেরেননি। আজ পুলিশ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তখন তাঁরা জানতে পারেন, তাঁর স্বামীকে ত্রিপুরায় হত্যা করা হয়েছে। রোজিনা আখতার আরও বলেন, তাঁর স্বামী খেটে খাওয়া মানুষ। তিনি কখনো চুরি করেননি। পুলিশের তালিকায়ও তাঁর নাম নেই। যে অপবাদ দিয়ে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে, তা ঠিক নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই ত ন ত নজন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে কুপিয়ে ও তীর মেরে ৩ বাংলাদেশিকে হত্যা

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই এলাকায় কুপিয়ে ও তীর মেরে তিন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (৫৫ বিজিবি) পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

‘সাজিদ হত্যার ৯০তম দিন, এরপর কি আমি?’

দুই স্ত্রীর বিবাদে প্রাণ গেল যুবদল নেতার

নিহতরা হলেন- হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার আলীনগর গ্রামের আশ্বব আলীর ছেলে জুয়েল মিয়া (৩২), বাসুল্লা গ্রামের কনা মিয়ার ছেলে পতি মিয়া (৪৫) ও কবিলাশপুর গ্রামের কদ্দুস মিয়ার ছেলে সজল মিয়া (২০)।  

ত্রিপুরার স্থানীয় দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সাংবাদিক আশীষ চক্রবর্তী জানান, বুধবার সকালে খোয়াই জেলার বিদ্যাবিল এলাকায় পাহাড়ি আদিবাসীরা তিন বাংলাদেশিকে কুপিয়ে ও তীর মেরে হত্যা করে। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে খোয়াই থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে।  

চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তারেকুর রহমান বলেন, “রাতে বিজিবি নিহতদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে ভারতে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে পাঠানো লাশের ছবিতে জুয়েল, পতি ও সজলকে শতভাগ শনাক্ত করা গেছে।”  

৫৫ বিজিবির (হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন) ক্যাপ্টেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান বুধবার রাত ১২টায় বলেন, ‍“মরদেহগুলো বাংলাদেশি তিনজনের। বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের প্রক্রিয়া চলছে।”

ঢাকা/মামুন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে কুপিয়ে ও তীর মেরে ৩ বাংলাদেশিকে হত্যা