গায়িকা থেকে সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক, মৈথিলীকে কতটা জানেন?
Published: 18th, November 2025 GMT
ভারতের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন গায়িকা মৈথিলী ঠাকুর। এর মধ্য দিয়ে বিহারের সর্বকনিষ্ঠ বিধায়কের তকমা এখন তার দখলে। জেন-জি মৈথিলী গায়িকা থেকে বিধায়ক হয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে রাজনীতির মাঠে কীভাবে এতটা সাফল্য পেলেন সেই প্রশ্ন অনেকের মাথায়ই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে! বলা যায়, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু রয়েছেন এই শিল্পী।
২০০০ সালের ২৫ জুলাই বিহারের মধুবনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন মৈথিলী। সংগীতসমৃদ্ধ পরিবারে তার বেড়ে ওঠা। তার শিক্ষাজীবন ছিল প্রচলিত ধারা থেকে আলাদা। ভারতীয় একটি গণমাধ্যম এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়িতেই পড়াশোনা করেন মৈথিলী। ১২-১৩ বছর বয়সে ভর্তি হন একটি এমসিডি স্কুলে। ছোটবেলায়ই তার গানের প্রতিভা সকলের চোখে পড়ে। তারপর বাল ভবন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে সংগীতে বৃত্তি পান। সেখানে পড়াশোনা এবং সংগীতচর্চা একসঙ্গে চালিয়ে যান।
আরো পড়ুন:
প্রযোজক আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল: পায়েল
জয়ার ‘কমফোর্ট জোন’ আবির
মৈথিলী মূলত ভারতীয় ধ্রুপদি ও লোকসংগীতের ওপর বেশি দক্ষ। বিহারের ভাষা ছাড়াও হিন্দি, ভোজপুরিসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় গান করতে পারেন। এর আগে ভারতীয় গণমাধ্যমে মৈথিলী জানিয়েছিলেন, তার বাবা ও দাদার তত্ত্বাবধানে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় ও লোকসংগীতে প্রথম শিক্ষা নেন। পাশাপাশি হারমোনিয়াম ও তবলা শিখেছেন।
তবে মৈথিলীর সংগীতে পথচলা সহজ ছিল না। ‘সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পস’ এবং ‘ইন্ডিয়ান আইডল জুনিয়র’-এর মতো একাধিক রিয়েলিটি শোয়ে অডিশন দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে বাদ পড়েন। তবে হাল ছাড়েননি তিনি। ২০১৭ সালে স্কুলে পড়ার সময়ে ‘রাইজিং স্টার’ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার-আপ নির্বাচিত হয়ে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা লাভ করেন এই শিল্পী।
টিকটক বা শর্ট-ভিডিওর যুগ শুরু হওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে লোকসংগীত পরিবেশন করে জনপ্রিয় হতে থাকেন মৈথিলী। তার গান দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। জানিয়ে রাখা ভালো, তার ফেসবুকে অনুসারীর সংখ্যা দেড় কোটি। ঐতিহ্যবাহী-ভক্তিমূলক সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে নিজের আঞ্চলিক পরিচয় যেমন ধরে রেখেছেন, তেমনই আন্তর্জাতিক শ্রোতাদের কাছেও পৌঁছে গিয়েছেন। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে স্টে শোয়ে পারফর্ম করছেন।
ভারতীয় একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর বলিউডে থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এ অভিনেতার মৃত্যুর ঘটনাটিকে অন্যায় মনে হওয়ায় বেশ কয়েক বছর হিন্দি সিনেমার সংগীত থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন মৈথিলী। বিরতি ভেঙে ২০২৪ সালে ‘আউরো মে কহা দম থা’ সিনেমার ‘কিসি রোজ’ গান দিয়ে বলিউডে ফিরেন তিনি। এ সিনেমায় অভিনয় করেন অজয় দেবগন, টাবু, জিমি শেরগিল।
২০২১ সালে সংগীত নৃত্য অ্যাকাডেমি মৈথিলীকে ‘উস্তাদ বিসমিল্লা খাঁ যুব পুরস্কার’ প্রদান করে। তরুণ শিল্পীদের জন্য এটি দেশের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। সাংস্কৃতিক প্রভাব ও লোকসংগীতে অবদান রাখার জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশন তাকে বিহারের ‘স্টেট আইকন’ ঘোষণা করেন।
গানের মানুষ মৈথিলী বিহারের নির্বাচন শুরুর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির টিকিট নিয়ে আলিনগর আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়ে তাক লাগিয়ে দেন এই গায়িকা।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘নতুন কুঁড়ি’র ‘খ’ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন শুভমিতাকে নিজ বিদ্যালয়ের সংবর্ধনা
এবারের ‘নতুন কুঁড়ি’ প্রতিযোগিতায় ‘খ’ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন শুভমিতা তালুকদারকে সংবর্ধনা দিয়েছে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুনামগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয়ের হলরুমে এ সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শুভমিতা তালুকদার ‘নতুন কুঁড়ি-২০২৫’ প্রতিযোগিতায় রবীন্দ্রসংগীতে প্রথম, নজরুলসংগীতে দ্বিতীয় এবং দেশাত্মবোধক গানে পঞ্চম হয়ে ‘খ’ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সে সুনামগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। শুভমিতার মা সান্ত্বনা সরকার সুনামগঞ্জ সদরের ইয়াকুব উল্লাহ পাবলিক উচ্চবিদ্যালয় ও বাবা দ্বীপন কুমার তালুকদার পাইগাঁও উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। শুভমিতা সুনামগঞ্জ সদরে মা-বাবার সঙ্গে থাকে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দ মহিবুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক বিজন সেন রায়, সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি পঙ্কজ কান্তি দে, সুনামগঞ্জের দিগেন্দ্র বর্মন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মশিউর রহমান, সুনামগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন, সংগীতশিক্ষক সোহেল রানা এবং শুভমিতার তালুকদারের মা সান্ত্বনা সরকার।
অধ্যাপক সৈয়দ মহিবুল ইসলাম বলেন, শুভমিতার দেশসেরার সাফল্য সুনামগঞ্জের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নতুন পরিচিতি এনেছে। নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীল ও আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে শুভমিতা তালুকদার জানায়, মা-বাবার পরিশ্রম, সংগীতশিক্ষকদের শিক্ষা এবং বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের সহযোগিতায় তার এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করতে সবার দোয়া চায় সে।
অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শাহজাহান মিয়া, সানজিদা আক্তার, সহকারী শিক্ষক স্নেহাংশু দাস পল্লব, শিক্ষার্থী রাজনন্দিনী ও তুষ্টি দাস বক্তব্য দেন। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আয়োজনের শেষ হয়।
আরও পড়ুন‘নতুন কুঁড়ি’র দুই চ্যাম্পিয়নের গল্প১৬ নভেম্বর ২০২৫