নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে জনসভা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার বনপাড়া বাইপাস চত্বরে বড়াইগ্রাম উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে জনসভা হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দিয়ে জামায়াতকে বিজয়ী করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফলই জনগণের মনোভাবের প্রতিফলন।”

আরো পড়ুন:

রাকসু: ছাত্রীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ ছাত্রদল

রাকসু: শীর্ষ তিন পদে ছাত্রদলের ‘ডরাডুবি’

তিনি আরো বলেন, “জামায়াত সরকার গঠন করতে পারলে পাঁচ বছরের মধ্যে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে, যাতে বিদেশের কাছে ভিক্ষা করতে না হয়।”

এ সময় তিনি পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন— জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, পিআর পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান, গণহত্যাকারীদের বিচার, দুর্নীতিবাজদের শাস্তি, নির্বাচনে সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বড়াইগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নাটোর জেলা জামায়াতের আমীর ড.

মীর নূরুল ইসলাম, নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খাঁন, অধ্যাপক ইউনুস আলী, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক সাদেকুর রহমান। 

এছাড়া নাটোর-১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, নাটোর-২ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক ইউনুস আলী, নাটোর-৩ আসনের প্রার্থী অধ্যাপক সাইদুর রহমান এবং নাটোর-৪ আসনের প্রার্থী মাওলানা আব্দুল হাকিম বক্তব্য দেন। 

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নাটোর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি আতিকুল ইসলাম রাসেল, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি জাহিদুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা। 
 

ঢাকা/আরিফুল/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম আসন র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জামায়াতের সঙ্গে এক মঞ্চে ৭ দল, পিআরসহ ৫ দাবিতে নতুন কর্মসূচি

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) সংসদ নির্বাচন, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে নভেম্বরে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দাবিতে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা সাতটি দল।

তাদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামীকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল, ২৫ অক্টোবর সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল এবং ২৭ অক্টোবর জেলা শহরগুলোতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল।

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জুলাই সনদে সই করার পরও রাজপথে কর্মসূচি দেওয়ার ব্যাখ্যা দেন।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, এখনো জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং এ সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে গণভোট আয়োজনের কাজ বাকি রয়ে গেছে। জুলাই সনদেও বাস্তবায়ন আদেশ ও গণভোট কখন হবে, সে তথ্য উল্লেখ নেই। এ জন্য জুলাই সনদে স্বাক্ষরের পরও মাঠের কর্মসূচি দিয়েছেন তাঁরা।

এর আগে প্রায় অভিন্ন দাবিতে জামায়াতসহ ৭টি দল সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দুই দফা কর্মসূচি পালন করে। অন্য দলগুলো হলো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)। আজ তাদের সঙ্গে যুক্ত হলো বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি। ফলে এই যুগপৎ আন্দোলনে দলের সংখ্যা বেড়ে হলো ৮।

তাদের পাঁচ দাবি হলো জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের ওপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে/ উচ্চ কক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা; ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের বলেন, ‘আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, কালোটাকার ব্যবহার বন্ধ, ভোটকেন্দ্র দখল, পেশিশক্তি প্রদর্শন ও ভোটের বিভিন্ন অনিয়ম ও অপতৎপরতা বন্ধ, কোয়ালিটিসম্পন্ন পার্লামেন্ট, দক্ষ আইনপ্রণেতা তৈরিসহ প্রতিটি ভোট মূল্যায়নের লক্ষ্যে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছি। বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।’

আরও পড়ুনপিআর নিয়ে জামায়াতের আন্দোলন রাজনৈতিক প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়: নাহিদ১ ঘণ্টা আগে

২৭ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মানা না হলে দেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। গোলাম পরওয়ার ছাড়াও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুছ আলী ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ।

উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির যুগ্ম সম্পাদক লস্কর তাজভীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন প্রমুখ।

জামায়াত সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে এলেও তার বিরোধিতা করেছে বিএনপি। এর মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জামায়াতের এই দাবি তোলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

নাহিদ এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, তাঁরা ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার দাবি তুললেও জামায়াত এবং তার সহযোগীরা তা ‘ছিনতাই’ করে তাদের ‘ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ উদ্ধারের জন্য দর–কষাকষির একটি হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করেছে।

আরও পড়ুনজুলাই সনদে সইয়ের পরও কেন কর্মসূচি, ব্যাখ্যা দিলেন জামায়াত সেক্রেটারি১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জামায়াতের সঙ্গে এক মঞ্চে ৭ দল, পিআরসহ ৫ দাবিতে নতুন কর্মসূচি