গাজায় ত্রাণ প্রবেশের জন্য রাফা সীমান্ত খুলে দিতে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। একই সঙ্গে গাজা পুনর্গঠনে কাজ শুরুর বিষয়ে জোর দিয়েছে তারা। গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে হামাস। তাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য দুই বছর ধরে মিসর, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতার প্রশংসা করেছে হামাস।

গত ১০ সেপ্টেম্বর গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শুরু হয়। যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী গাজার নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত সেনা সরিয়ে নিয়েছে ইসরায়েল। দুই পক্ষের মধ্যে বন্দিবিনিময়ও হয়েছে। তবে মৃত জিম্মিদের সবার মরদেহ ফেরত দিতে পারেনি হামাস। একে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন উল্লেখ করে গাজায় নির্দিষ্ট ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল।

ত্রাণ প্রবেশ ও গাজাবাসীর নির্বিঘ্ন যাতায়াতের জন্য গত বুধবার থেকে গাজা-মিসর সীমান্তে রাফা ক্রসিং খুলে দেওয়ার কথা ছিল ইসরায়েলের। তবে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতি দিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাফা সীমান্ত খুলে দেওয়ার কথা বলা হয়নি। তাই সীমান্তটি বন্ধ থাকবে। গাজায় সব ত্রাণ প্রবেশ করবে ইসরায়েলের কারেম আবু সালেম সীমান্ত দিয়ে।

যদিও ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেয়ন সারের বরাতে ইতালির বার্তা সংস্থা এএনএসএর খবরে বলা হয়েছে, আগামী রোববার রাফা সীমান্ত খুলে দেওয়া হতে পারে। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

এদিকে রাফা সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ ব্যাহত হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করতে দিতে হবে। তবে এখন প্রবেশ করতে পারছে ৩০০ ট্রাকের কম। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের জন্য সব সীমান্ত খুলে দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) মুখপাত্র আবির ইতেফা।

এদিকে রাফা সীমান্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কাছে কৌশল খাটানোর একটি উপাদান বলে মনে করেন রোমের আমেরিকান ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক আন্দ্রিয়া দেসি। তিনি বলেন, আপাতত ইসরায়েল এই ক্রসিং খুলে দেবে বলে মনে হয় না। তবে ত্রাণ প্রবেশ ও আহত ফিলিস্তিনিদের চিকিৎসা দিতে গাজার বাইরে নেওয়ার জন্য সীমান্তটি খুলে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ফলে সীমান্তটি খুলতে ইসরায়েল যে বাধা দিচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র ণ প রব শ আহ ব ন জ ন ইসর য় ল র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধ বন্ধে জেলেনস্কিকে চুক্তি করতে বললেন ট্রাম্প

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে চুক্তি করতে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, উভয় পক্ষের ‘বিজয় দাবি করা’ উচিত এবং এই রক্তপাত থামানো উচিত।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে এ কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প এ কথা জানান।

ট্রাম্প বলেন, ‘জেলেনস্কির সঙ্গে খুবই আগ্রহোদ্দীপক এবং আন্তরিক বৈঠক হয়েছে। তবে আমি তাঁকে বলেছি, যেমনটি আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকেও জোর দিয়ে বলেছি, এখন খুনোখুনি বন্ধের সময় আর চুক্তি করে ফেলো।’

বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।

জেলেনস্কি বলেন, তিনি এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আলাপ করেছেন। তবে এ বিষয়ে জনসমক্ষে ‘আমরা কোনো কথা না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র চায় না (মস্কোর সঙ্গে) উত্তেজনা তৈরি হোক।’

এ সময় বিবিসির এক প্রশ্নের জবাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রয়োজন। আমাদের জনগণ আতঙ্কে আছেন যে, যদি (যুদ্ধবিরতি) হয়, তাহলে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রয়োজন, যাতে পুতিন আবার আগ্রাসন না চালাতে পারেন।’

জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের আগের দিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপ হয় ট্রাম্পের। ওই ফোনালাপে দুই নেতা হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে বৈঠকে বসার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। তবে এই বৈঠকের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

আরও পড়ুনট্রাম্প-পুতিন দীর্ঘ ফোনালাপ, হাঙ্গেরিতে হবে বৈঠক১৬ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনপুতিন যুদ্ধ না থামালে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন ট্রাম্প১৩ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ