বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
Published: 18th, October 2025 GMT
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুনের ঘটনায় সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে আগুন লাগার প্রায় ৭ ঘণ্টা পর রাত ৯টা ১৮ মিনিটের পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।
আজ শনিবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক মো.
কমিটিতে বিমানের ফ্লাইট সেফটি শাখার প্রধানকে সভাপতি এবং ইনস্যুরেন্স শাখার উপব্যবস্থাপককে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এ ছাড়া বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, করপোরেট সেফটি অ্যান্ড কোয়ালিটি শাখার মহাব্যবস্থাপক, কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স শাখার প্রধান প্রকৌশলী, নিরাপত্তা শাখার উপমহাব্যবস্থাপক, কার্গো রপ্তানি শাখার উপমহাব্যবস্থাপককে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
অফিস আদেশে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটিকে অগ্নিকাণ্ডের কারণ, ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ, দায়দায়িত্ব শনাক্তকরণ এবং ভবিষ্যতে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে সুপারিশ প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে।
এদিকে রাত ৯টা ১৮ মিনিটের পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনাস্থল থেকে এই প্রতিবেদক জানান, আগুন লাগার সাত ঘণ্টা পরও কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স থেকে প্রচুর ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। সেখানে উৎসুক জনতার ভিড় থাকায় বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে মাইকিং করে সবাইকে সরে যেতে বলা হচ্ছে। আগের চেয়ে আগুন কিছুটা কমলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
আজ বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। খবর পেয়েই ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট রওনা হয়। আগুন ছড়াতে থাকলে ইউনিটের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। আগুন নেভাতে ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট কাজ করছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনা-১ আসনে জামায়াতের চমক, চূড়ান্ত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী
প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে খুলনা-১ আসনে বড় চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। প্রাথমিক পর্যায়ে মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করে সংগঠনটির হিন্দু শাখার নেতা কৃষ্ণ নন্দীকে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা এমরান হোসাইন বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রার্থী পরিবর্তনের এ কৌশলের মধ্যে দিয়ে আসনটিতে নিজেদের বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী দলটি।
আরো পড়ুন:
‘আমি রাজমিস্ত্রির ছেলে, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি’
লটারির মাধ্যমে ৫২৭ থানার ওসি পদে রদবদল
এর আগে বুধবার বিকেলে খুলনা মহানগর জামায়াতের কার্যালয়ে জেলার কর্মী সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি জেনারেল ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক।
জামায়াতের হয়ে প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কৃষ্ণ নন্দীও। জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাসে এবারই প্রথম অন্য ধর্মের কোনো ব্যক্তিকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলো, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এক মাস ধরে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণ নন্দীর নাম রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-১ আসনে অবশেষে তাকে প্রার্থী করা হয়েছে।
ব্যবসায়ী কৃষ্ণ নন্দীর গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকায়। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার ‘জামায়াতে ইসলাম সনাতনী‘র সভাপতি। এ উপজেলা ও ফুলতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রায় এক বছর ধরে গোলাম পরওয়ারের ডুমুরিয়া ও ফুলতলায় বিভিন্ন সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীর সক্রিয় উপস্থিতি দেখা গেছে। তার নেতৃত্বে হিন্দু নারী-পুরুষের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো।
মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কৃষ্ণ নন্দী বলেছেন, ‘আমাকে কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে জামায়াতের আমিরসহ উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ছিলেন। তারা আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। আমি তাদের নির্দেশনা পেয়েছি। এলাকায় গিয়ে কাজ শুরু করব।”
এর আগে এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন মাওলানা আবু ইউসুফ। তাকে নিয়ে প্রশ্ন করলে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “বুধবার জামায়াতের আমির আমাদের দুজনকে বুকে বুক মিলিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি নিজেই আমার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন। জামায়াতের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।”
ডুমুরিয়ার চুকনগর গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ নন্দী ২০০৫ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার সভাপতি এবং স্থানীয় সনাতন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে বেছে নেওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “কঠোরভাবে আদর্শভিত্তিক জামায়াত হলো ন্যায় ও সততার দল। এখানে দুর্নীতি নেই, চাঁদাবাজি নেই, মাদক নেই। শান্তি-সমৃদ্ধি আনার দল বলে আমি জামায়াতকে বেছে নিয়েছি। ২০০৫ সাল থেকে এটি করছি, হঠাৎ নয়।”
আগের সরকারের আমলে কোণঠাসা ছিলেন বলে অভিযোগ তার। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দাপটে থাকা এই এলাকায় তিনি জামায়াত করার কারণে বিভিন্নভাবে চাপের মুখে ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন।
এর আগে খুলনা-১ আসনে মাওলানা মো. আবু ইউসুফকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল জামায়াত।
কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “গত ১ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান খুলনায় এলে আমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। পরে আগের প্রার্থী মাওলানা ইউসুফকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে আমাকে প্রার্থী হিসেবে কাজ করতে বলা হয়। মাওলানা ইউসুফও আমার সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।”
খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুন্সী মঈনুল ইসলাম বলেন, “খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তন হয়েছে। বাবু কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্তে সবাই দাঁড়িপাল্লার হয়ে কাজ করবেন।”
সাবেক প্রার্থী মাওলানা আবু ইউসুফ বলেছেন, “দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে। আমি কৃষ্ণ নন্দীর বিজয়ের জন্য সর্বাত্মক কাজ করব। তার পক্ষে আমি প্রচারণা শুরু করেছি। যেহেতু আমাকেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে, সেহেতু সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি যথাসম্ভব কাজ করব, ইনশাআল্লাহ।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক