নতুন ব্যাংক গঠনের কাজ শুরু করেছে সরকার
Published: 19th, October 2025 GMT
পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করতে বেশ আগেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার। উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর এখন একটি নতুন ব্যাংক গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি নেওয়া হবে। নতুন ব্যাংকের নামে কোম্পানি গঠন চূড়ান্ত হলে সেই ব্যাংকের অধীনে পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ, দায় ও জনবল চলে আসবে। এই ব্যাংক গঠনে ২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন জোগান দেবে সরকার।
নতুন ব্যাংকের জন্য নাম প্রস্তাব করা হয়েছে দুটি ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’ ও ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’। একীভূত হতে যাওয়া পাঁচ ব্যাংক হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নতুন ব্যাংকের মালিকানা থাকবে সরকারের হাতে। এ জন্য পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এতে সহায়তা করছে। চলতি সপ্তাহে পাঁচ ব্যাংক একীভূত এবং নতুন ব্যাংক গঠনে কোনো আইনগত জটিলতা আছে কি না, তা জানতে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। সেখান থেকে অনাপত্তি পেলে বাংলাদেশ ব্যাংকে আগ্রহ পত্রের (এলওওয়াই) জন্য চিঠি দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দিয়ে রেখেছে, তাই স্বল্প সময়ে এলওওয়াইয়ের চিঠি ইস্যু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর কোম্পানি গঠন ও নাম চূড়ান্তের জন্য যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর (আরজেএসসি) চিঠি দেওয়া হবে। এভাবেই গঠন হবে নতুন ব্যাংক।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, নতুন ব্যাংক গঠনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক চিঠি দিলে আরজেএসসি তাতে অনাপত্তি দেয়নি। এ জন্য এখন অর্থ মন্ত্রণালয় প্রক্রিয়া মেনে নতুন ব্যাংক গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন হওয়ায় সরকার চাইলে এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন ব্যাংক গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে। তবে বিষয়টি এখনো ঢিমেতালে চলছে। নতুন ব্যাংক গঠন হলে পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত মূল্যায়ন করতে হবে। এ ছাড়া জনবলের দক্ষতা ও যোগ্যতা যাচাই করতে হবে। তখন বাস্তবিক অর্থে বেশ সময় লেগে যাবে। তাই নতুন ব্যাংক গঠন ও সরকারের তহবিল জোগান দেওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছে।
টাকা পাওয়ার আগে নাকি পরে বসবে প্রশাসক
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, পাঁচ ব্যাংক একীভূত করতে প্রশাসক নিয়োগ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য প্রশাসক দলের নামও চূড়ান্ত হয়েছে। প্রশাসকেরা সরকারি তহবিল পাওয়ার পর সেখানে যাবেন, নাকি আগে যাবেন এ নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। কারণ, প্রশাসকেরা ব্যাংকগুলোতে যাওয়ার পর টাকা উত্তোলনের বাড়তি চাপ শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই টাকা পাওয়ার পরই ব্যাংকগুলোতে যেতে চান প্রশাসকেরা। এদিকে প্রশাসক ব্যাংকগুলোতে যাওয়ার পর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
অধ্যাদেশ মেনে ব্যাংক একীভূত করতে হবে
দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকের সমস্যা সমাধানে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুমোদন করেছে সরকার। এর আওতায় একীভূত করতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে অধ্যাদেশে, সে অনুযায়ী একীভূত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, সমন্বয়হীনতার কারণে প্রক্রিয়াটি এগোচ্ছে না। আবার অধ্যাদেশে যেভাবে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে বলা আছে, তা অনুসরণ করা হচ্ছে না। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ব্যাংক রেজিস্ট্রেশন–সংক্রান্ত সব ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে থাকবে। এই ক্ষমতা ও দায়িত্ব ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান কার্যক্রম থেকে পৃথক হওয়ার কথা। অর্থাৎ ব্যাংক রেজল্যুশন কার্যক্রম হবে স্বতন্ত্র।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে শুরু থেকেই এটি অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে মিশে গেছে। বর্তমানে ডেপুটি গভর্নর হিসেবে ব্যাংক রেজল্যুশন বিভাগের দায়িত্ব পালন করছেন কবির আহাম্মদ। একই সঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও ১৩টি বিভাগের ডেপুটি গভর্নর এবং একাধিক কমিটির সদস্য। নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলামও এই বিভাগের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। ফলে একীভূতকরণ প্রক্রিয়ার বাইরে অন্য কাজে তাঁদের ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী বলেন, একসঙ্গে পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণের অভিজ্ঞতা আমাদের নেই। তাই পুরো আইনি প্রক্রিয়া মেনে এটি করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কোনো প্রশ্ন না ওঠে। একীভূত কার্যক্রমে আগে ছোট ছোট গ্রাহকদের স্বার্থ দেখা উচিত। তাঁরা যাতে আরও আতঙ্কিত না হন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এক ভ ত করত প রক র য় ক এক ভ ত এক ভ ত ক নত ন ব য ক গঠন র এ জন য র প রক ইসল ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জ সদরে জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য বিষয়ক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
ব্রাক সদর উপজেলার আয়োজনে ব্রাক স্বাস্থ্য কর্মসূচি জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য প্রকল্প’র জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি মোকাবেলা ও প্রতিরোধ বিষয়ক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের সভাকক্ষে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.উম্মে ফারহানা’র সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাছলিমা শিরিন।
সভায় বক্তব্য রাখেন মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. ইসরাত জাহান শীলা, ব্রাক জেলা সমন্বয়ক সুমন চৌধুরী, ব্রাক স্বাস্থ্য কর্মসূচি জেলা ব্যবস্থাপক মো শামীম আল মামুন খান ও জেলা প্রোগ্রাম অফিসার (যক্ষ্মা-কুষ্ঠ) মো. শহীদুল্লাহ্ প্রমূখ।
ক্লাইমেট চেইঞ্জ এন্ড হেলথ প্রোজেক্ট অফিসার মাহমুদুল হাসান’র সঞ্চালনায় সভায় সরকারি স্বাস্থ্য সহকারি, এনজিও প্রতিনিধি ধর্মীয় প্রতিনিধি, শিক্ষক ও কমিউনিটি সদস্যগণ অংশগ্রহণ করেন।