জাপানের ক্ষমতাসীন ও প্রধান বিরোধী দল একত্রে জোট সরকার গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সানায়ে তাকাইচির দায়িত্ব নেওয়ার পথ খুলে যাচ্ছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

জাপানের কিয়োদো সংবাদ সংস্থা আজ রোববার জানিয়েছে, রক্ষণশীল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতা সানায়ে তাকাইচি ও ছোট ডানঘেঁষা দল জাপান ইনোভেশন পার্টির (জেআইপি বা ইশিন) প্রধান হিরোফুমি ইয়োশিমুরা আগামীকাল সোমবার জোট সরকার গঠনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন।

এ মাসের শুরুতে তাকাইচি ক্ষমতাসীন দল এলডিপির নেতা নির্বাচিত হন। তবে তাঁর নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ভেঙে পড়লে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। এর পর থেকে এলডিপি নতুন রাজনৈতিক জোট গঠনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে, যা তাকাইচির প্রধানমন্ত্রিত্বের সম্ভাবনাকে আবারও জোরদার করেছে।

আরও পড়ুনজাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরুর পদত্যাগের ঘোষণা০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কিয়োদো নিউজ জানিয়েছে, এলডিপি তাকাইচিকে জোট গঠনের দায়িত্ব দিয়েছে। অন্যদিকে জেআইপি আজ ওসাকায় নির্বাহী বোর্ডের বৈঠক করবে ও আগামীকাল পার্লামেন্ট সদস্যদের পূর্ণাঙ্গ সভায় এলডিপির সঙ্গে চুক্তির চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে।

জাপানের প্রভাবশালী দৈনিক ইয়োমিউরি শিমবুনও জানিয়েছে, আগামীকাল বৈঠকের পর তাকাইচি ও ইয়োশিমুরা সম্ভবত জোট সরকার গঠনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।

এ মাসের শুরুতে তাকাইচি ক্ষমতাসীন এলডিপির নেতা নির্বাচিত হন। তবে তাঁর নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ভেঙে পড়লে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। এর পর থেকে এলডিপি নতুন রাজনৈতিক জোট গঠনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে, যা তাকাইচির প্রধানমন্ত্রিত্বের সম্ভাবনাকে আবারও জোরদার করেছে।

এলডিপির দীর্ঘদিনের সহযোগী দল কোমেইতো ২৬ বছর পর সরকার থেকে সরে দাঁড়ালে নতুন জোট সরকার গঠনের আলোচনা শুরু হয়। এতে জাপান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় পড়ে।

এলডিপি ও জেআইপি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে জোট বাঁধে, তবে তাকাইচি আগামী মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হতে পারেন। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের ক্ষেত্রে দুই দল মিলে এখনো দুটি আসনের ঘাটতি রয়েছে।

আরও পড়ুনজীবনযাত্রার ব্যয়ে ক্ষুব্ধ ভোটার: পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যদি ভোট দ্বিতীয় দফায় গড়ায়, তাহলে তাকাইচিকে শুধু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে বেশি পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থন পেতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাপান সফরের মাত্র কয়েক দিন আগে এ জোট সরকার গঠনের প্রস্তুতি চলছে।

ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় বার্ষিক এশিয়া–প্যাসিফিক ইকোনমিক কো–অপারেশন (অ্যাপেক) সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে জাপান সফরে যাবেন।

আরও পড়ুনসানায়ে তাকাইচি যে পথে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী০৫ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনজাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর সময় কি চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বৈরী হবে০৪ অক্টোবর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ট সরক র গঠন র ন জ ট সরক র প রথম ন র এলড প র গঠন র চ ন র জন

এছাড়াও পড়ুন:

জয়েন্টের ব্যথা মানেই কি বাত? আর কী কী কারণে ব‍্যথা হতে পারে

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা ও কাজকর্মে জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নানা কারণে সন্ধিতে বা জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। বেশির ভাগ মানুষ জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথা অনুভব করলেই ধরে নেন, হয়তো বাত হয়েছে। যদিও জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথার একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো বাত, তবে সব ব্যথাই বাত নয়। অনেক ক্ষেত্রেই এই ব্যথার উৎস হতে পারে মাংসপেশি, টেন্ডন, বা স্নায়ুতন্ত্র।

সব জয়েন্টের ব্যথা বাত নয়

প্রথমেই জানা দরকার, ‘বাত’ আসলে কোনো একক রোগ নয়। এটি মূলত আর্থ্রাইটিস বা গাঁটে প্রদাহের সাধারণ নাম, যার মধ্যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, গাউটসহ আরও অনেক ধরনের রোগ অন্তর্ভুক্ত। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত জয়েন্ট ফুলে যায়, লালচে বা গরম অনুভূত হয় এবং নড়াচড়ায় ব্যথা বাড়ে। যেমন-
অস্টিওআর্থারাইটিস: বয়সজনিত কারণে জয়েন্টের ক্ষয় হলে বা ভেঙে গেলে দেখা দেয়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস: এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভুল করে জয়েন্টে আক্রমণ করে।

জয়েন্টের আশপাশে ব্যথা সৃষ্টি হওয়ার আরও বেশ কিছু কারণ আছে—
টেন্ডিনাইটিস বা বার্সাইটিস: জয়েন্টের কাছের টেন্ডন (পেশি ও হাড়ের সংযোগকারী অংশ) বা বার্সা (জয়েন্টের ভেতরের তরল থলি)-তে প্রদাহ হলে ব্যথা হতে পারে।
আঘাত বা অত্যধিক ব্যবহার: খেলাধুলা বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে মাংসপেশি বা লিগামেন্টে টান লাগা।

নিউরোলজিক্যাল কারণ

অনেক সময় জয়েন্টের কাছাকাছি যে ব্যথা অনুভব হয়, তা আসলে সেই জয়েন্টের সমস্যা নয়, বরং স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা। নিউরোলজিক্যাল কারণে সৃষ্ট জয়েন্ট ব্যথার প্রধান উৎসগুলো হলো—  

নার্ভ কম্প্রেশন: মেরুদণ্ড থেকে বেরিয়ে আসা কোনো স্নায়ু বা নার্ভে চাপ পড়লে (যেমন: কোমরে ডিস্ক প্রোল্যাপস বা সায়াটিকা) সেই ব্যথা বাহু বা পায়ে অবস্থিত জয়েন্ট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। একে রেফার্ড পেইন বলে। উদাহরণস্বরূপ, ঘাড়ের নার্ভে চাপ পড়লে কাঁধ বা কনুইতে ব্যথা হতে পারে।

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি: ডায়াবেটিস বা অন্যান্য কারণে হাত-পায়ের প্রান্তীয় স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে জয়েন্টে বা তার আশপাশে জ্বালাপোড়া, তীব্র ব্যথা বা অসারতা অনুভূত হতে পারে।

অন্যান্য স্নায়বিক রোগ: কিছু স্নায়বিক রোগ, যেমন ফাইব্রোমায়ালজিয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে জয়েন্টের চারপাশে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা সৃষ্টি করে।

করণীয় কী?

যদি আপনার জয়েন্টের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, সকালে বেশি থাকে, ফোলা থাকে বা এর সঙ্গে অসারতা বা ঝিনঝিন ভাব দেখা দেয়, তবে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিপদে না পড়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনি পরীক্ষা করে বাত নাকি স্নায়বিক কোনো সমস্যা, তা নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন।

আরও পড়ুনসহজ এই ১২টি উপায় মানলে মস্তিষ্ক থাকবে চাঙা ও কর্মক্ষম১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ