গণতান্ত্রিক উন্নত বাংলাদেশ গঠনে প্রকৌশলীদের অগ্রণী ভূমিকা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেছেন, “প্রকৌশলীরা কেবল অবকাঠামো নির্মাতা নন, বরং তারা একটি জাতির টেকসই উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণের অন্যতম চালিকাশক্তি।

আরো পড়ুন:

‘আগামীর প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন’

শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে একমত বিএনপি

রবিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীতে আয়োজিত এক সেমিনারে সালাহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক ও উন্নত বাংলাদেশের ভিত্তি গড়ে তুলতে প্রকৌশলীদের শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতা নয়, সামাজিক দায়বদ্ধতাও থাকতে হবে। সরকার পরিচালনায় নীতি নির্ধারণ পর্যায়েও তাদের মতামত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

‘গণতান্ত্রিক উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রকৌশলীদের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনাসভাটি আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব)।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট প্রকৌশলী এএনএইচ আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, “প্রযুক্তি ও গণতন্ত্রের সমন্বয় ছাড়া কোনো উন্নয়নই টেকসই হতে পারে না। প্রকৌশলীরা আজ শুধু সেতু বা ভবন নির্মাণ করছেন না, বরং তারা আগামী বাংলাদেশের নকশাও তৈরি করছেন।”

সভাপতিত্ব করেন অ্যাব-এর আহ্বায়ক প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন। তিনি বলেন, “বর্তমান প্রজন্মের প্রকৌশলীদের মধ্যে সামাজিক সচেতনতা ও নেতৃত্বের গুণ বিকাশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে একটি আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে প্রকৌশলীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।”

সভায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা তাদের আলোচনায় দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো খাতে দুর্নীতিমুক্ত কার্যক্রম, পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন এবং প্রকৌশল শিক্ষার আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

শেষে একটি খোলা আলোচনার মাধ্যমে উপস্থিত বাপাবিপ্রস- ডিপিডিসি ইউনিটের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানসহ প্রকৌশলীরা নানা প্রস্তাব ও মতামত তুলে ধরেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ গণত ন ত র ক

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনা-১ আসনে জামায়াতের চমক, চূড়ান্ত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী

প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে খুলনা-১ আসনে বড় চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। প্রাথমিক পর্যায়ে মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করে সংগঠনটির হিন্দু শাখার নেতা কৃষ্ণ নন্দীকে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। 

খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা এমরান হোসাইন বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রার্থী পরিবর্তনের এ কৌশলের মধ্যে দিয়ে আসনটিতে নিজেদের বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী দলটি।

আরো পড়ুন:

‘আমি রাজমিস্ত্রির ছেলে, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি’

লটারির মাধ্যমে ৫২৭ থানার ওসি পদে রদবদল

এর আগে বুধবার বিকেলে খুলনা মহানগর জামায়াতের কার্যালয়ে জেলার কর্মী সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি জেনারেল ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। 

জামায়াতের হয়ে প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কৃষ্ণ নন্দীও। জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাসে এবারই প্রথম অন্য ধর্মের কোনো ব্যক্তিকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলো, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এক মাস ধরে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণ নন্দীর নাম রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-১ আসনে অবশেষে তাকে প্রার্থী করা হয়েছে।

ব্যবসায়ী কৃষ্ণ নন্দীর গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকায়। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার ‘জামায়াতে ইসলাম সনাতনী‘র সভাপতি। এ উপজেলা ও ফুলতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রায় এক বছর ধরে গোলাম পরওয়ারের ডুমুরিয়া ও ফুলতলায় বিভিন্ন সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীর সক্রিয় উপস্থিতি দেখা গেছে। তার নেতৃত্বে হিন্দু নারী-পুরুষের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো।

মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কৃষ্ণ নন্দী বলেছেন, ‘আমাকে কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে জামায়াতের আমিরসহ উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ছিলেন। তারা আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। আমি তাদের নির্দেশনা পেয়েছি। এলাকায় গিয়ে কাজ শুরু করব।”

এর আগে এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন মাওলানা আবু ইউসুফ। তাকে নিয়ে প্রশ্ন করলে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “বুধবার জামায়াতের আমির আমাদের দুজনকে বুকে বুক মিলিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি নিজেই আমার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন। জামায়াতের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।”

ডুমুরিয়ার চুকনগর গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ নন্দী ২০০৫ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার সভাপতি এবং স্থানীয় সনাতন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে বেছে নেওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “কঠোরভাবে আদর্শভিত্তিক জামায়াত হলো ন্যায় ও সততার দল। এখানে দুর্নীতি নেই, চাঁদাবাজি নেই, মাদক নেই। শান্তি-সমৃদ্ধি আনার দল বলে আমি জামায়াতকে বেছে নিয়েছি। ২০০৫ সাল থেকে এটি করছি, হঠাৎ নয়।”

আগের সরকারের আমলে কোণঠাসা ছিলেন বলে অভিযোগ তার। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দাপটে থাকা এই এলাকায় তিনি জামায়াত করার কারণে বিভিন্নভাবে চাপের মুখে ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন। 

এর আগে খুলনা-১ আসনে মাওলানা মো. আবু ইউসুফকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল জামায়াত।

কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “গত ১ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান খুলনায় এলে আমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। পরে আগের প্রার্থী মাওলানা ইউসুফকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে আমাকে প্রার্থী হিসেবে কাজ করতে বলা হয়। মাওলানা ইউসুফও আমার সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।”

খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুন্সী মঈনুল ইসলাম বলেন, “খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তন হয়েছে। বাবু কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্তে সবাই দাঁড়িপাল্লার হয়ে কাজ করবেন।”

সাবেক প্রার্থী মাওলানা আবু ইউসুফ বলেছেন, “দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে। আমি কৃষ্ণ নন্দীর বিজয়ের জন্য সর্বাত্মক কাজ করব। তার পক্ষে আমি প্রচারণা শুরু করেছি। যেহেতু আমাকেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে, সেহেতু সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি যথাসম্ভব কাজ করব, ইনশাআল্লাহ।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ