বাংলাদেশের সংগীত জগতের ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’খ্যাত শিল্পী বেবী নাজনীন পেলেন বিশেষ সম্মাননা। দীর্ঘ চার দশকের সংগীতযাত্রায় অসংখ্য জনপ্রিয় গান উপহার দেওয়া এই শিল্পীকে সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা জানায় কালচারাল জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (সিজেএফবি)।

১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় সিজেএফবি পারফরমেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৪-এর ২৪তম আসর। সংগীত, টেলিভিশন, ওটিটি, চলচ্চিত্রসহ সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেওয়া হয় পুরস্কার।

এবারের আয়োজনে বিশেষ সম্মাননা পেয়েছেন দুই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব— সংগীতে বেবী নাজনীন ও চলচ্চিত্রে পূর্ণিমা। তাদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন গ্লোব সফট ড্রিংকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো.

হারুনুর রশীদ, একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালাম এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাহাদ করিম।

জুরি বোর্ডের বিচারে এ বছর আরও সম্মাননা পেয়েছেন সোমনুর মনির কোনাল (সেরা গায়িকা), ইমরান মাহমুদুল (সেরা গায়ক), প্রিন্স মাহমুদ (সেরা সংগীত পরিচালক), আসিফ ইকবাল (সেরা গীতিকার) প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শুরু হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গানে অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী চাঁদনীর মনোজ্ঞ পরিবেশনা দিয়ে। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম এস রানা, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা তামিম হাসান। সংগঠনের সভাপতি এনাম সরকারের সভাপতিত্বে এই পর্বে আরও বক্তব্য রাখেন গ্লোব সফট ড্রিংকস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশীদ, একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান এবং সিইও আব্দুস সালাম, একুশে টেলিভিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসনুভা মাহবুব সালাম, অ্যাডভান্স হোমস প্রাইভেট লিমিটেডের এমডি তওহিদা সুলতানা রুনু প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন বেবী নাজনীন, ইমরান মাহমুদুল, সোমনুর মনির কোনাল, মেহজাবীন চৌধুরী, সাবিলা নূর, তানজিন তিশা, তাসনুভা তিশা, মন্দিরা চক্রবর্তী প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন আরজে নীরব, শান্তা জাহান ও সানজানা আইভী। কোরিওগ্রাফি করেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ।

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত সিজেএফবি শিল্পী-কলাকুশলীদের কাজের মূল্যায়ন ও উৎসাহ প্রদানে ২০০০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে এই পুরস্কার প্রদান করে আসছে।

ঢাকা/রাহাত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন জন ন

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনা-১ আসনে জামায়াতের চমক, চূড়ান্ত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী

প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে খুলনা-১ আসনে বড় চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। প্রাথমিক পর্যায়ে মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করে সংগঠনটির হিন্দু শাখার নেতা কৃষ্ণ নন্দীকে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। 

খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা এমরান হোসাইন বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রার্থী পরিবর্তনের এ কৌশলের মধ্যে দিয়ে আসনটিতে নিজেদের বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী দলটি।

আরো পড়ুন:

‘আমি রাজমিস্ত্রির ছেলে, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি’

লটারির মাধ্যমে ৫২৭ থানার ওসি পদে রদবদল

এর আগে বুধবার বিকেলে খুলনা মহানগর জামায়াতের কার্যালয়ে জেলার কর্মী সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি জেনারেল ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। 

জামায়াতের হয়ে প্রার্থিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কৃষ্ণ নন্দীও। জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাসে এবারই প্রথম অন্য ধর্মের কোনো ব্যক্তিকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলো, যা স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এক মাস ধরে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণ নন্দীর নাম রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। খুলনার দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-১ আসনে অবশেষে তাকে প্রার্থী করা হয়েছে।

ব্যবসায়ী কৃষ্ণ নন্দীর গ্রামের বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর এলাকায়। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার ‘জামায়াতে ইসলাম সনাতনী‘র সভাপতি। এ উপজেলা ও ফুলতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রায় এক বছর ধরে গোলাম পরওয়ারের ডুমুরিয়া ও ফুলতলায় বিভিন্ন সমাবেশে কৃষ্ণ নন্দীর সক্রিয় উপস্থিতি দেখা গেছে। তার নেতৃত্বে হিন্দু নারী-পুরুষের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো।

মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কৃষ্ণ নন্দী বলেছেন, ‘আমাকে কেন্দ্রে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে জামায়াতের আমিরসহ উচ্চ পর্যায়ের নেতারা ছিলেন। তারা আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। আমি তাদের নির্দেশনা পেয়েছি। এলাকায় গিয়ে কাজ শুরু করব।”

এর আগে এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন মাওলানা আবু ইউসুফ। তাকে নিয়ে প্রশ্ন করলে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “বুধবার জামায়াতের আমির আমাদের দুজনকে বুকে বুক মিলিয়ে দিয়ে গেছেন। তিনি নিজেই আমার জন্য প্রচারণায় নেমেছেন। জামায়াতের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই।”

ডুমুরিয়ার চুকনগর গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ নন্দী ২০০৫ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু শাখার সভাপতি এবং স্থানীয় সনাতন কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে বেছে নেওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “কঠোরভাবে আদর্শভিত্তিক জামায়াত হলো ন্যায় ও সততার দল। এখানে দুর্নীতি নেই, চাঁদাবাজি নেই, মাদক নেই। শান্তি-সমৃদ্ধি আনার দল বলে আমি জামায়াতকে বেছে নিয়েছি। ২০০৫ সাল থেকে এটি করছি, হঠাৎ নয়।”

আগের সরকারের আমলে কোণঠাসা ছিলেন বলে অভিযোগ তার। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের দাপটে থাকা এই এলাকায় তিনি জামায়াত করার কারণে বিভিন্নভাবে চাপের মুখে ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন। 

এর আগে খুলনা-১ আসনে মাওলানা মো. আবু ইউসুফকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল জামায়াত।

কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “গত ১ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. শফিকুর রহমান খুলনায় এলে আমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। পরে আগের প্রার্থী মাওলানা ইউসুফকে নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে আমাকে প্রার্থী হিসেবে কাজ করতে বলা হয়। মাওলানা ইউসুফও আমার সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।”

খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুন্সী মঈনুল ইসলাম বলেন, “খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তন হয়েছে। বাবু কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্তে সবাই দাঁড়িপাল্লার হয়ে কাজ করবেন।”

সাবেক প্রার্থী মাওলানা আবু ইউসুফ বলেছেন, “দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে। আমি কৃষ্ণ নন্দীর বিজয়ের জন্য সর্বাত্মক কাজ করব। তার পক্ষে আমি প্রচারণা শুরু করেছি। যেহেতু আমাকেই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির পরিচালক করা হয়েছে, সেহেতু সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি যথাসম্ভব কাজ করব, ইনশাআল্লাহ।”

ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ