পরিবার, ফিটনেস আর উৎসব-একসঙ্গে ফ্যামিলি রানার্স ৭.৫ কিলোমিটার রান ২০২৫
Published: 19th, October 2025 GMT
সকালের শিশিরভেজা ঘাস, দিগন্তে উঠতি সূর্য আর দৌড়ের উচ্ছ্বাসে মুখর রাজধানীর এক প্রভাত। এমনই প্রাণবন্ত দৃশ্য ছিল ‘জি-১ অ্যাডভান্স প্রেজেন্টস ফ্যামিলি রানার্স ৭.৫ কিমি রান ২০২৫’–এর সকালে।
ভোর ৫টা ৩০ মিনিট থেকেই অংশগ্রহণকারীদের ভিড় জমতে শুরু করে। কেউ পরিবারের সঙ্গে, কেউ বন্ধুদের নিয়ে হাজির হন উৎসবমুখর পরিবেশে। ঠিক সকাল ৬টায় উষ্ণায়নের পর শুরু হয় দৌড়, যা চলে সকাল ৭টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।
মোট ১ হাজার ৫০০ জন দৌড়বিদ অংশ নেন এবারের আয়োজনে—পুরুষ ১ হাজার ৭৩ জন, নারী ২১৮ জন এবং শিশু ২০৯টি। এ ছাড়া প্রায় ১৪০টি পরিবার একসঙ্গে অংশগ্রহণ করে, যা এই আয়োজনে এনে দেয় এক অনন্য পারিবারিক বন্ধনের রূপ।
দৌড়ের প্রতিটি ধাপে অংশগ্রহণকারীদের পাশে ছিল সার্বক্ষণিক মেডিকেল সাপোর্ট, অ্যাম্বুলেন্সসহ অভিজ্ঞ চিকিৎসক দল। আর পাঁচটি হাইড্রেশন পয়েন্টে ছিল পানি ও এনার্জি ড্রিংকসের ব্যবস্থা।
পরিবারসহ রেজিস্ট্রেশনকারীদের জন্য ছিল বিশেষ ক্রেস্ট, আর ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে অংশগ্রহণকারীদের দেওয়া হয় সম্মাননা ক্রেস্ট। বিজয়ীরা পান ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ পুরস্কার।
ইভেন্টের সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের রানিং জগতের পরিচিত মুখ খবীর উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মো.
আয়োজক মফিজুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী সালমা আক্তার ঝিনুক সার্বিকভাবে পুরো অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধান করেন। মফিজুল ইসলামের ভাষায়, ‘এটা শুধু দৌড় নয়, এটা পরিবার, ফিটনেস আর একসঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার উৎসব।’
ইভেন্টে ১১ জন পেসার দায়িত্ব পালন করেন—২ জন নারী ও ৯ জন পুরুষ। তাঁদের মধ্যে পেসার মোহাম্মদ আলী ফিরোজ বলেন, ‘এই আয়োজন প্রমাণ করে, দৌড় শুধু ফিটনেস নয়, এটি জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিরও প্রতীক।’
আয়োজনটির টাইটেল স্পনসর ছিল জি–১ অ্যাডভান্স ব্লাড গ্লুকোজ মনিটর। সাপোর্ট পার্টনার হিসেবে ছিল আমানত ফুডস, আর অ্যাসোসিয়েট পার্টনার হিসেবে যুক্ত ছিল প্রথম আলো। মেডিক্যাল পার্টনার হিসেবে সহযোগিতা করেছে হেলথকেয়ার ডায়াগনস্টিকস সেন্টার লিমিটেড, আর আইসক্রিম পার্টনার ছিল স্যাভয় আইসক্রিম।
টিভি মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল যমুনা টিভি এবং কমিউনিকেশন পার্টনার হিসেবে যুক্ত ছিল আরসা (এআরএসএ)। স্ন্যাকস পার্টনার ছিল ডেকো টেস্টি অ্যান্ড হেলদি, ড্রিংকস পার্টনার হিসেবে সহযোগিতা করেছে আলট্রা, আর টাইমিং পার্টনার ছিল টোটাল অ্যাকটিভ স্পোর্টস।
এ ছাড়া ভিডিও কনটেন্ট পার্টনার হিসেবে কাজ করেছে আপসাইট বাংলাদেশ, গার্মেন্টস পার্টনার ছিল অ্যাডভারগো, নিউট্রিশন পার্টনার হিসেবে যুক্ত ছিল সিক্সার্স চকলেট এবং ভলান্টিয়ার পার্টনার হিসেবে সহযোগিতা করেছে কিউটিএস (কোয়ালিটি ট্রেইনিং সলিউশন)।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র টন র হ স ব প র টন র ছ ল পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
নায়িকা-পরিচালক কেন প্রেমে পড়েন?
পরিচালকের সঙ্গে নায়িকার প্রেম-বিয়ে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন কিছু নয়। হলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এটি যেমন ঘটে, তেমনই ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও কম নেই। যেমন—‘বাহুবলি’খ্যাত রম্যা কৃষ্ণা বিয়ে করেন পরিচালক কৃষ্ণা ভামসিকে, খুশবু মালা পরান পরিচালক সুন্দর সির গলায়, বলিউড অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম বিয়ে করেন পরিচালক আদিত্য ধরকে। বলতে গেলে এ তালিকা অনেক দীর্ঘ। কয়েক দিন আগে পরিচালক রাজ নিদিমোরুকে বিয়ে করে এই আলোচনা নতুন করে জন্ম দিয়েছেন অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু।
সামান্থা-রাজের বিয়ের পর প্রশ্ন উঠেছে—নায়িকা-পরিচালক কেন প্রেমে পড়েন? যদিও এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর পাওয়া কঠিন। কারণ কে কখন এবং কেন কারো প্রেমে পড়েন তা ব্যাখ্যা করে বোঝানো মুশকিল। তারপরও শুটিং সেটে নায়িকা-পরিচালকের কর্মকাণ্ড ও পরিবেশ-পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন দক্ষিণী সিনেমার পরিচালক অশোক তেজা।
আরো পড়ুন:
বয়স, শিক্ষাদীক্ষা, অর্থ-সম্পদে স্বামীর চেয়ে এগিয়ে সামান্থা?
গোপন বিয়ের ছবি প্রকাশ করলেন সামান্থা
সম্প্রতি তামান্না ভাটিয়াকে নিয়ে সুপারন্যাচারাল-থ্রিলার ঘরানার ‘ওডেলা টু’ সিনেমা নির্মাণ করেন পরিচালক অশোক তেজা। এ নির্মাতা মনে করেন, চলচ্চিত্র নির্মাণের সময়ে অভিনেত্রী-পরিচালকের মধ্যে প্রায়ই আন্তরিক বোঝাপড়া তৈরি হয়। ব্যাখ্যা করে এই পরিচালক বলেন, “শুটিং সেটে প্রেমের সূচনা হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে। কারণ পরিচালক আর অভিনয়শিল্পীরা প্রতিদিন ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন। চরিত্রের বৈশিষ্ট্য, লুক, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ—সবকিছু নিয়ে আলোচনা হয়। ভালো চলচ্চিত্র তৈরি করার জন্য পেশাগতভাবে পরস্পরের সঙ্গে থাকতে হয়।”
বন্ধুত্ব থেকে ব্যক্তিগত জীবনে উঁকি দেওয়ার সূত্রপাত বলে মনে করেন পরিচালক তেজা। তিনি বলেন, “তারা যখন একে অপরকে বন্ধু হিসেবে দেখতে শুরু করেন, তখন ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দও শেয়ার করতে থাকেন। সময়ের সঙ্গে তারা হয়তো পরস্পরকে পরস্পরের উপযোগী মনে করেন। সেই বন্ধনকে একসময় বিয়েতে রূপ দিতে পারেন। তেলেগু বা বলিউড—উভয় ক্ষেত্রেই এমন বহু ঘটনা ঘটেছে।”
মজার ছলে অশোক তেজার কাছে জানতে চাওয়া হয়, শুটিং সেটে আপনার সঙ্গে এমনটা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে কি না? জবাবে অশোক তেজা বলেন, “আমি ইতোমধ্যে বিবাহিত।” অশোক তেজা মনে করেন, সামান্থা গত এক বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘন ঘন পোস্টের মাধ্যমে সূক্ষ্মভাবে এ পরিকল্পনার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তারা বিভিন্ন সময়ে একসঙ্গে ছবিও পোস্ট করতেন।”
কয়েক সপ্তাহ আগে জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা ও অভিনেতা বিজয় দেবরকোন্ডা গোপনে বাগদান সেরেছেন। দু’জনই বাগদানের আগে সূক্ষ্ম ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন, একসঙ্গে বিদেশে ছুটি কাটানো, বিয়ের আংটির ছবি, আর ‘দ্য গার্লফ্রেন্ড’ সিনেমার প্রচারে প্রেম ও সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করেন। যদিও সরাসরি ঘোষণা করেননি। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারা বিয়ে করবেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
রাশমিকা-বিজয়ের প্রেম-বিয়ের প্রসঙ্গ টেনে অভিনেতা-অভিনেত্রীর বিয়ে নিয়ে অশোক তেজা বলেন, “তাদের অন-স্ক্রিন কেমিস্ট্রি বাস্তব জীবনেও ছড়িয়ে পড়েছে। অভিনেতার সঙ্গে অভিনেত্রীর বিয়ে হওয়া যুক্তিসঙ্গত। কারণ তারা একে অপরের চাপ ও শিডিউল বোঝেন। এই পারস্পরিক বোঝাপড়া ইন্ডাস্ট্রির বাইরের সঙ্গীর তুলনায় মানিয়ে নিতে অনেক বেশি সাহায্য করে।”
মানুষ কেন প্রেমে পড়েন?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৃবিজ্ঞানী হেলেন ফিসার। হিউম্যান বিহেবিয়ার নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির কিনসে ইনস্টিটিউটে বায়োলজিক্যাল অ্যানথ্রোপলজি নিয়ে সিনিয়র গবেষণাকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। মানুষ কেন প্রেমে পড়েন, তার কারণ তিনটি স্তরে ভাগ করেছেন হেলেন ফিসা। এই তিন স্তরের মধ্যে হেলেন প্রথমে রেখেছেন কামপ্রবৃত্তিকে। এটি নিয়ন্ত্রিত হয়, শরীরের টেস্টোস্টেরন (পুরুষ) ও ইস্ট্রোজেন (নারী) হরমোন দ্বারা। এটি পৃথিবীর অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর ক্ষেত্রেও খুব ভিন্ন কিছু নয় বলে দাবি তার।
দ্বিতীয় স্তরটি হলো—আকর্ষণ। এই অনুভূতি কিছুটা মাদকতা বা অ্যালকোহলিকের মতো। মানুষ উচ্ছ্বাসের অনুভূতি প্রকাশ করলে তার মস্তিষ্কে ডোপামিন (আনন্দ), অ্যাড্রিনালিন (লড়াই বা প্রতিক্রিয়া) এবং নরএপিনেফ্রিন (সতর্কতা) সহ নানা হরমোনের নিঃসরণ ঘটে। আর এসবই প্রেমে পড়াকে এক ধরনের নেশার মতো অনুভব করায়। বিশেষ করে অ্যাড্রিনালিনের কারণে প্রথমবার কারো সঙ্গে দেখা হলে গাল লাল হয়ে ওঠা, হাত ঘামা এবং হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।
তৃতীয় স্তরে ডোপামিন ও নরএপিনেফ্রিনের জায়গা নেয় অক্সিটোসিন হরমোন। আর তখনই সেই ব্যক্তির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত হওয়ার অনুভূতি অনুভব করতে শুরু করতে পারেন। কেবল তাই নয়, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও করতে পারেন। প্রেমে পড়ার এই তিনটি ধাপ সহজ মনে হতে পারে। কিন্তু আরো বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যা, নির্ধারণ করে কে কাকে ভালোবাসবেন। নায়িকা-পরিচালকেরাও রক্তে-মাংসের মানুষ। ফলে হেলেনের তিন স্তরের প্রভাব তাদের মাঝে কার্যকরী।
ঢাকা/শান্ত