দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘সামনে নির্বাচন। সুষ্ঠু ও আনন্দঘন পরিবেশে নির্বাচন হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে আপনারা বেছে নেবেন না। আমরা যদি ১৫ বছরের ইতিহাস দেখি, তাহলে দেখব, একটি সরকারের পতনের মূল কারণ ছিল দুর্নীতি। কাজেই সামনের নির্বাচনে সঠিক ও সৎ মানুষকে জয়ী করে আনতে হবে।’

আজ রোববার যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দুর্নীতিবিষয়ক গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল মোমেন এ কথা বলেন। জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় দুদক যশোর কার্যালয়ের আয়োজনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের যতই দিন যাচ্ছে, দুর্নীতির ধরন ক্রমাগতই পাল্টে যাচ্ছে। অনেক ধরনের দুর্নীতি বাড়ছে। আমি যশোরে এসে নতুন একটি দুর্নীতির খবর জানতে পারি। মানুষ পারাপার করেও টাকা আদায় করা যায়। যশোরের যাঁরা রাজনৈতিক এলিট, তাঁদের মাধ্যমেও নাকি মানুষ ওপারে পার হয়ে যায়। এ–ই যদি হয়, তাহলে তো রাষ্ট্রের প্রত্যাশা বিলীন হয়ে যাবে। আপনারা লক্ষ রাখবেন, এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুনানির মাধ্যমে জনগণকে সরকারি কর্মকর্তাদের মুখোমুখি করে দিচ্ছি না। আমি দুই পক্ষের মধ্যে সম্পৃক্ততা তৈরি করছি। এতে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হবে।’

আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত গণশুনানি চলে। এ সময় মঞ্চে অভিযোগকারী ও প্রতিষ্ঠানের অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মুখোমুখি বসানো হয়। অনেক অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

গণশুনানি অনুষ্ঠানে রুস্তম আলী নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে কাজ করে দেওয়ার জন্য পাকা কলা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করার কথা স্বীকার করেন যশোর জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেন। অভিযোগকারীর দাবি, তাঁর কাছ থেকে কলা ছাড়াও ১০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন ওই কর্মচারী। এরপর আরও ছয় লাখ টাকা দাবি করেন। এ ঘটনায় ওই কর্মচারীকে বদলি ও এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন দুদকের কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী।

জেলা প্রশাসক মো.

আজাহারুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুদকের কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। শুনানিতে জেলার সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ৩৭টি দপ্তরের ৭৫টি অভিযোগের শুনানি গ্রহণ করা হয়। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া কিছু বিষয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহণ কর গণশ ন ন অন ষ ঠ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

১০ জন নিয়ে ৯ উইকেটে উইন্ডিজকে হারাল নিউ জিল্যান্ড

দ্বিতীয় টেস্টে ছিল কিউইদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। কারণ পেসার ব্লেয়ার টিকনারের চোটে দল পরিণত হয়েছিল ১০ জনের স্কোয়াডে। কিন্তু সেই প্রতিকূলতাকেই যেন শক্তিতে পরিণত করলো নিউ জিল্যান্ড। ওয়েলিংটন টেস্টে দাপুটে পারফরম্যান্স দেখিয়ে তৃতীয় দিনেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯ উইকেটে পরাজিত করে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। প্রথম টেস্টে ৫৩০ রানের বিশাল পুঁজি নিয়েও ১১ জনের কিউই দল ক্যারিবিয়ানদের হারাতে ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু এবার চিত্রটি ভিন্ন।

ম্যাচের তৃতীয় দিনে লাঞ্চ বিরতির পরপরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে পড়ে মাত্র ১২৮ রানে। এই ধসে মূল ভূমিকা রাখেন পেসার জ্যাকব ডাফি। যিনি ১৭.২ ওভার বোলিং করে মাত্র ৩৮ রান খরচায় ৫টি মূল্যবান উইকেট শিকার করেন। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ‘ফাইফার’ (এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট)।

আরো পড়ুন:

মেঘ বর্ষণের পর ক্রাইস্টচার্চে উইকেট বৃষ্টি

৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাত্র ৩ রানে হারল উইন্ডিজ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং ছিল প্রথম ম্যাচের মতোই হতাশাজনক। ২ উইকেটে ৩২ রান নিয়ে দিন শুরু করা ক্যারিবিয়ানরা লাঞ্চের আগে ৬ উইকেট হারিয়ে ৯৮ রানে পৌঁছায়। লাঞ্চের পর কেবল ৯.২ ওভারের মধ্যেই বাকি উইকেটগুলোও পড়ে যায়।

ক্যারিবিয়ান ইনিংসের ধস শুরু হয় জাস্টিন গ্রিভস (২৫) আউট হওয়ার পর। ডাফির বলে এলবিডব্লিউ হওয়া গ্রিভসের উইকেটটি নিউ জিল্যান্ড রিভিউ নিয়ে নিশ্চিত করে। দিনের শুরুতে ব্র্যান্ডন কিং এবং হজ উইকেটের অসমান বাউন্স সামলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও কিং ২২ রানে মাইকেল ব্রেসওয়েলের দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হন। এরপর শাই হোপ এবং অধিনায়ক রোস্টন চেজ দ্রুত প্যাভিলিয়নে ফেরেন। হজ ধৈর্য ধরে ৩৫ রান করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পুল শট খেলতে গিয়ে উইল ইয়ংয়ের দারুণ ডাইভিং ক্যাচে তার ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।

জয়ের জন্য নিউ জিল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য ছিল মাত্র ৫৬ রান। ডেভন কনওয়ে ২৮ এবং কেন উইলিয়ামসন ১৬ রান করে দ্রুতই দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। চা বিরতির আগেই শেষ হয় ম্যাচের আনুষ্ঠানিকতা। যা ১০ জনের দল নিয়ে কিউইদের মনোবলেরই সাক্ষ্য দেয়।

প্রথম ইনিংসে ১টি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের ডাফি।

মাউন্ড মঙ্গানুইয়ে আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট।

:: সংক্ষিপ্ত স্কোর ::

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০৫ ও ১২৮ (হজ ৩৫, চেজ ২৫, কিং ২২; ডাফি ৫/৩৮, রায়ে ৩/৪৫)
নিউ জিল্যান্ড: ২৭৮/৯ ডিক্লেয়ার ও ৫৭/১ (কনওয়ে ২৮*, উইলিয়ামসন ১৬*, ল্যাথাম ৯; ফিলিপ ১/১৭)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: জ্যাকব ডাফি (নিউ জিল্যান্ড)
সিরিজ: নিউ জিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ