আমাদের ঘাড়ের ওপর গণভোট ও সনদ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে: মির্জা ফখরুল
Published: 9th, November 2025 GMT
ওপরতলার কিছু শিক্ষিত লোক যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে ঘাড়ের ওপর গণভোট ও সনদের মতো বিষয় চাপিয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কয়েকটা দল বলছে, নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। আর আমরা বলছি, নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে হবে।’ উপস্থিত লোকজনকে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কি গণভোট, সনদ এসব বোঝেন? এসব বোঝেন শিক্ষিত কিছু ওপরতলার লোক। যাঁরা আমেরিকা থেকে এসে এসব আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপাচ্ছেন। আমরাও মেনে নিয়েছি। তাঁরা যতগুলো সংস্কার করতে চান, তাতে আমরা রাজি আছি। যেটাতে রাজি হব, সেটা বাস্তবায়িত হবে। যেটাতে রাজি হব না, সেটা পার্লামেন্টে যাবে। সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, এরপর তা পাস হবে।’
‘সবাই ভোট দিতে চাই’আজ দেশে যত সংকট, তা তৈরি করা এবং নাটক বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তাঁর ভাষায়, সাধারণ মানুষ সব দেখছেন। সাধারণ মানুষ এত কিছু বোঝেন না, তাঁরা ভোট দিতে চান। তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছর আমরা কোনো নির্বাচন করতে পারিনি। সে সময় যে সরকার ছিল, তারা আমাদের নির্বাচন করতে দেয়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। ২০১৮ সালে নির্বাচন করেছি, কিন্তু সেই নির্বাচনে আগের রাতে ভোট নিয়ে চলে গেছে। এবার আমরা সবাই ভোট দিতে চাই।’
গণ–অভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। হাসিনা পালিয়ে গিয়ে নিজের দলের নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের অসহায় অবস্থায় ফেলে গেছেন। এতে বোঝা যায়, কর্মী ও জনগণের ওপর শেখ হাসিনার কোনো দরদ নেই। আমাদের এই মাটিতেই জন্ম। মারা গেলে এখানেই মারা যাব, কিন্তু দেশের মাটি ছেড়ে কখনো যাব না।’
‘মানুষের কষ্ট এই সরকার বোঝে না’বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় পাশে থাকবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বাজারে ধানের দাম নেই। আলুতেও কিছু ধরা খেয়েছেন কৃষক। তার মানে, কৃষক কৃষিকাজ করে লাভবান হতে পারছেন না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষক যেন তাঁর ফসলের ন্যায্যমূল্য পান, সেই ব্যবস্থা করা হবে। বর্তমান সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ভোট করে আসেনি, আমরা সবাই মিলে এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছি। সরকারের পেছনে তো কোনো লোক নেই। এ কারণে মানুষের কষ্ট এই সরকার বোঝে না। কৃষকের কষ্ট কোথায়, সমস্যা কোথায়, এই সরকার বোঝে না।’
‘এটা আমার শেষ নির্বাচন’বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি তেমন ভালো নয়। তাই আসছে নির্বাচন তাঁর জীবনের শেষ নির্বাচন হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আপনাদের মানুষ। আমার অনেক বয়স হয়ে গেছে। কত দিন বাঁচব, জানি না। আমি এই আসন থেকে নির্বাচন করি। কখনো হেরেছি, কখনো জিতেছি। কিন্তু আপনাদের ছেড়ে যাইনি। আমি বলেছি, এটা আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। নির্বাচনের সময় আমার শক্তি থাকবে কি না, জানি না। আপনাদের কাছে আকুল আবেদন, আমার শেষ নির্বাচনে, আমাকে সাহায্য করবেন, সহযোগিতা করবেন। আমাকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে আপনাদের কাজ করার সুযোগ করে দেবেন।’
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই সরক র আপন দ র ব এনপ র আম দ র র ওপর গণভ ট ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
আমার সঙ্গে হাত মেলানোর জন্য হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন মামদানি
আমি বাংলাদেশি-মার্কিন, নিউইয়র্কের কুইন্সে থাকি। কাজ করি আর স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি। সেই আমিও এমন স্বপ্ন কখনো দেখিনি যে অভিবাসী হিসেবে এই শহরের রাজনীতিতে আমাদের শক্ত কোনো অবস্থান থাকতে পারে। কারণ, এত দিন আমাদের কষ্ট বুঝে, পাশে থেকে, আমাদের পক্ষে উচ্চ স্বরে কথা বলার কেউ ছিলেন না। জোহরান মামদানির সঙ্গে পরিচয়ের পর থেকে এই ধারণা বদলাতে শুরু করেছে। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষেরা ধর্ম, বর্ণ, উচ্চারণ, নাম নিয়ে পদে পদে রেসিজম বা বৈষম্যের শিকার হই। কিন্তু এসব আমরা ভুলে যেতে বাধ্য হই কাজের চাপে, নিউইয়র্ক শহরে টিকে থাকার যুদ্ধে। জীবনযাপনের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে থাকতে ক্লান্ত নিউইয়র্কবাসীর কাছে নতুন আশার নাম জোহরান মামদানি।
মামদানির সঙ্গে প্রথম দেখাহাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছেন জোহরান মামদানি