পৃথিবী থেকে ১৮ আলোকবর্ষ দূরে সুপার-আর্থের খোঁজ
Published: 18th, November 2025 GMT
মহাবিশ্বের অন্য কোনো প্রান্তে জীবনের বসবাস আছে কি না, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা ২৪ ঘণ্টা আকাশের নানা কোণে উঁকি দিচ্ছেন। সেই উঁকিতে এবার পৃথিবী থেকে মাত্র ১৮ আলোকবর্ষ দূরের একটি গ্রহের খোঁজ মিলেছে। পৃথিবীর মতো কিন্তু আকারে বড় বলে এ ধরনের গ্রহ সুপার-আর্থ নামে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া (ইউসি), আরভিনের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই রোমাঞ্চকর সুপার–আর্থ আবিষ্কার করেছেন।
নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটি তার নক্ষত্রের বাসযোগ্য অঞ্চল থেকে প্রদক্ষিণ করছে। এই অঞ্চলের তাপমাত্রার কারণে তরল পানি থাকার সম্ভাবনা বেশ। গ্রহটিতে জীবনধারণের উপযোগী পরিবেশ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। এই নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটি মিল্কিওয়ে ছায়াপথের একটি নিকটবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত। এটি পাথুরে বলে মনে করা হচ্ছে। আকারে পৃথিবীর সমান হলেও ওজনে পৃথিবীর চেয়ে বহু গুণ বেশি। গ্রহের বিভিন্ন তথ্য দ্য অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ইউসি আরভিনের পদার্থবিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের বিজ্ঞানী পল রবার্টসনের বলেন, আজকাল নতুন বহির্গ্রহ বা এক্সোপ্ল্যানেট আবিষ্কার করা সাধারণ হয়ে গেছে। নতুন এই গ্রহকে বিশেষ বলা যায়। এর নক্ষত্রটি আমাদের খুব কাছাকাছি অবস্থিত প্রায় ১৮ আলোকবর্ষ দূরে। মহাজাগতিক পরিভাষায়, এই দূরত্বকে প্রায় আমাদের প্রতিবেশে থাকার মতো বলা যায়।
জিজে ২৫১ সি নামের এই গ্রহ একটি এম-বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। এই নক্ষত্র মিল্কিওয়েতে সবচেয়ে সাধারণ ও প্রাচীন নক্ষত্রের মধ্যে অন্যতম। এই সব নক্ষত্রের মধ্যে তারার মতো দাগ ও সৌরশিখার মতো তীব্র কার্যকলাপ দেখা যায়। এমন সংকেত দেখে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গ্রহ খোঁজার চেষ্টা করেন। প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, নতুন গ্রহটি স্বল্প দূরত্বের কারণে বেশ আকর্ষণীয়। ভবিষ্যতে সরাসরি চিত্রগ্রহণের সুযোগ রয়েছে গ্রহটির। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার থার্টি মিটার টেলিস্কোপের মতো শক্তিশালী টেলিস্কোপ এমন ক্ষীণ বহির্গ্রহের স্পষ্ট ছবি তুলতে ও পানির সম্ভাব্য উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সক্ষম হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানী কোরি বেয়ার্ড বলেন, নতুন গ্রহটির মতো গ্রহের সরাসরি ছবি তোলার ক্ষমতা রয়েছে অনেক টেলিস্কোপের।
এই বহির্গ্রহ আবিষ্কার করতে হাবিটেবল-জোন প্ল্যানেট ফাইন্ডার থেকে পাওয়া ডেটা ব্যবহার করা হয়। এই সব যন্ত্র কাছাকাছি গ্রহ থেকে সৃষ্ট মহাকর্ষীয় টানের কারণে নক্ষত্রের আলোতে খুব সামান্য পরিবর্তন শনাক্ত করতে পারে। যখন গ্রহটি তার নক্ষত্রের ওপর মহাকর্ষীয় বল প্রয়োগ করে, তখন নক্ষত্রের আলোতে ক্ষুদ্র ও নিয়মিত তারতম্য দৃশ্যমান হয়। এই দুর্বল সংকেত রেকর্ড করে গ্রহটিকে চিহ্নিত করা হয়।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র গ রহ গ রহ র গ রহট
এছাড়াও পড়ুন:
মুশফিকুরের শততম টেস্ট: শত রঙে ছড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পা রাখলেই এখন শোনা যাবে একটাই নাম, মুশফিকুর রহিম। যার সাফল্য মুকুটে বুধবার যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন এক পালক। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার অপেক্ষায় তিনি।
২০০৫ সালে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, ২০২৫ সালে সেই পথ মিশেছে মিরপুরে। নিজেদের হোম ভেন্যু মিরপুরের জন্য বাড়তি রঙে সেজেছে। স্টেডিয়ামের ভেতরে-বাইরে তুলির আঁচড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ক্রিকেট আলপনা।
আরো পড়ুন:
মুশফিকুরের পর্দার আড়ালের পরিশ্রমের গল্প শোনালেন আয়ারল্যান্ডের কোচ
‘একশটা টেস্টই যেন শেষ না হয়’
তার সতীর্থরাও তাকে নিয়ে গর্বিত। শততম টেস্টের মাইলফলক ছোঁয়া ম্যাচটি মুশফিকুর নিজের মতো করে রাঙিয়ে তুলুক এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
তামিম বলেছেন, “তোকে নিয়ে বলার আছে অনেক কিছু্ই। সেই ছেলেবেলা থেকে একসঙ্গে খেলছি, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে, বিভিন্ন পর্যায়ে, রুমমেট ছিলাম অনেকবার। কাছ থেকে দেখেছি তোকে। কোনো এক সময় কোনো এক উপলক্ষে কোনো প্ল্যাটফর্মে নিশ্চয়ই বলব সবকিছু। তবে আজকের দিনের জন্য শুধু একটিই কথা, বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলক তোর চেয়ে বেশি আর কেউ ডিজার্ভ করে না। আশা করি, ভবিষ্যতে এই অর্জনে তোর পাশে নাম লেখাবে আরো অনেকেই। কিন্তু তুই প্রথম, এটা তোরই প্রাপ্য।”
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শুধু মুশফিকুর রহিমের সতীর্থই নন, পরিবারের একজন। সম্পর্কে তারা ভায়েরা-ভাই। মুশফিকুরের অর্জনে মাহমুদউল্লাহ খুঁজে পেয়েছেন পরিবারের গর্ব, “আশা করি ভালো আছ। তোমার শততম টেস্টের জন্য আমি শুভকামনা জানাচ্ছি। আমি মনে করি একটা বিরাট অর্জন তোমার জন্য। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য। এছাড়া আমাদের সবার বিশেষ করে আমাদের পরিবারের জন্য বিরাট একটি গর্বের মুহূর্ত। আমার জন্যও তা-ই। আমি তোমার সঙ্গে অনেক বছর ক্রিকেট খেলেছি। এটা অনেক অনেক বড় অর্জন। যেটা বলতে চাই শুধু, অনেক অনেক শুভকামনা। তোমার অনুপ্রেরণা, তাড়না, পরিশ্রম সবকিছু তোমার মাইলফলকের হয়ে কথা বলছে। তোমার জন্য অনেক অনেক খুশি। ভালো থেক। আশা করি ভালো যাবে সময়টা।”
উইকেটরক্ষক ব্যাটার লিটন বলেছেন, “অনেক অনেক অভিনন্দন আপনার বিশাল অর্জনের জন্য। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। আমি অনেক দিন ধরে আপনার সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করি। আমি খুবই ভাগ্যবান যে আপনার সঙ্গে বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছি। আপনার একশতম টেস্ট যেন স্মরণীয় হয়ে থাকে এই দোয়া করি। শুভ কামনা।”
বাংলাদেশ দলের সাবেক অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলে কাজ করেছেন। মুশফিকুরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এই ভারতীয় বলেছেন, “মুশি ভাই! ১০০ টেস্ট। অবিশ্বাস্য এক মাইলস্টোন। পরিশ্রম, কঠোরতা ও শৃঙ্খলা—এ সবকিছুর মধ্য দিয়ে এগিয়ে গর্বের সঙ্গে বয়ে চলছে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে। দেশের প্রথম হওয়ায় এটা আরো আইকনিক হয়ে উঠেছে। এগিয়ে যাও চ্যাম্প! তুমি চারপাশে সবার প্রেরণা। বিশেষ এই দিনে সেখানে থাকতে পারলে ভালো লাগত। অবিস্মরণীয় করে তোলো।”
ঢাকা/ইয়াসিন/সাইফ