নোনাজমিতে ভরসার বাগান, কয়রার নারীদের উদ্ভাবনী চাষাবাদ
Published: 20th, November 2025 GMT
সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রার নোনাজল আর ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যেও স্থানীয় নারীরা বদলে দিয়েছেন নিজেদের বাড়ির চেহারা, বদলে দিয়েছেন কৃষির ধরন। কোথাও বারান্দায় ঝুলছে বস্তাভরা সবজি, কোথাও উঠানে উঁচু টাওয়ার গার্ডেন, কেউবা পুকুরের ওপর ভাসমান কাঠামোয় গড়ে তুলেছেন ছোট ছোট সবুজ বাগান।
ঘরের সামনে ঝুলে থাকা দুটি প্লাস্টিকের বস্তায় বাড়তি নজর পড়ে কয়রা গ্রামের জেসমিন নাহারের বাড়িতে গেলে। ভেতরে জৈব সার-মেশানো মাটিতে গজিয়েছে পুঁইশাক। দূর থেকে সাজানো কোনো শোপিস মনে হলেও কাছে গেলে স্পষ্ট হয়—এটি একটুকরা জীবন্ত বাগান। বাড়ির পাশেও বাঁশ ও চটা দিয়ে উঁচু কাঠামো বানিয়ে জেসমিন সাজিয়েছেন আরও অনেক বস্তা—কোথাও বেগুন, কোথাও আদা, কোথাও মিষ্টিকুমড়া ও লাউ।
সম্প্রতি জেসমিনের বাড়িতে গেলে তিনি বলেন, ‘বর্ষার সময় বাড়ির চারপাশে পানি জইমে যায়, শুকনোর সময় আবার মাটিতে লবণ ওঠে। তাই বস্তায় জৈব সার মাটি দিয়ে উঁচু করি সবজি লাগাইছি। এখন নিজেরা খাচ্ছি, কিছু বিক্রিও করিছি।’
পাশের বাড়ির মরিয়ম বেগমও উঠানে বস্তায় মরিচ, ঢ্যাঁড়স ও লাউ লাগিয়েছেন। মাচার পাশে ঝুলছে এক জোড়া পুরোনো জুতা। হাসতে হাসতে মরিয়ম বলেন, ‘দুষ্টু মানুষের নজর লাগে গাছে, তাই জুতা ঝুলাই দিছি। আগে নিচু জমিতে কিছুই হতো না, এখন ফলন ভালো হয়।’
ঘরের বারান্দার ছাউনির নিচে ঝুলছে দুটি বস্তাভর্তি সবুজ গাছ। এভাবে নারীরা জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় নিজেদের মতো করে টিকিয়ে রেখেছেন কৃষির স্বপ্ন। কয়রা উপজেলার কৃষাণি জেসমিন নাহারের বাড়ি থেকে তোলা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অবৈধভাবে আমদানি ও চোরাচালানকৃত ফোন বন্ধ করা হবে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
অবৈধভাবে আমদানি ও চোরাচালানকৃত এবং ক্লোন করা ফোন বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান।
বুধবার (২০ নভেম্বর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “অবৈধ ফোনের সাথে নানাবিধ অপরাধসমূহ সংশ্লিষ্ট থাকতে পারে যেমন, সিমের ভুল রেজিস্ট্রেশন/ eKYC এবং সিম সংক্রান্ত অপরাধ, জুয়ার লিংক এবং এমএলএম প্রতারণার বাল্ক এসএমএস পাঠানো, ভুল এমএফএস রেজিস্ট্রেশন/ eKYC এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিং সংক্রান্ত অপরাধ, অনলাইন জুয়া ও স্ক্যামিং, অবৈধ ক্লোন ফোন সংক্রান্ত অপরাধ, প্যাটেন্ট ও প্রযুক্তিগত বিভিন্ন রয়্যাল্টি না দেওয়া, আয়কর ও শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ আনবক্সড মোবাইল ফোন আমদানি, বিমানবন্দরের লাগেজ পার্টি, সীমান্ত চোরাচালান, স্থানীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদন শিল্প বিকাশকে বাধা দেওয়া ইত্যাদি। অর্থাৎ নাগরিক, সমাজ, অর্থনীতির ও রাষ্ট্রের বহু স্তরের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার নানাবিধ বিষয় এখানে জড়িত। এর জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিডা, মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি, ব্যাংকিং খাত, বিএফআইইউ এবং এনবিআর-এর ক্রমাগত অনুরোধ আছে আমাদের ওপর। উপরন্তু, মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগ খাতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি বলেন, “ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে এক বছর আগেই কোটি খানেক ফোন এনে দেশে অবৈধভাবে ডাম্পিং করে ফেলার সুযোগ আর কাউকে দেওয়া হবে না। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলছি, কোনো মোবাইল ব্যবসায়ী বা দোকানিদের ব্যবসা নষ্ট করা হচ্ছে না, তারা দেশীয় উৎপাদকদের এবং বৈধভাবে আমদানি করা ফোন বিক্রি করবেন, সৎ পথে ব্যবসা করবেন।”
বর্তমানে ১টা International Mobile Equipment Identity (IMEI) কোডের বিপরীতে লাখ লাখ ফোন বানিয়ে দেশে নিয়ে আসা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “NEIR চালু হলে যা আর সম্ভব হবে না। এজন্য NEIR বন্ধে মাফিয়া চক্র উঠেপড়ে লেগেছে। এসব লাগেজ পার্টি, HS code,সীমান্ত চোরাচালানি, কেজি দরে আমদানির দিন শেষ করতে, এর সাথে জড়িত সব ধরনের ডিজিটাল অপরাধ বিস্তারে লাগাম টানা হবে।”
বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসিতে আলোচনা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমদানি শুল্ক কমাতে এনবিআরকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
দ্রুতই এ বিষয়ে এনবিআরের সাথে বৈঠক হবে। পাশাপাশি দেশীয় উৎপাদকদের মূল্য কমাতে বিটিআরসির পক্ষে অনুরোধও জানানো হয়েছে। গ্রাহকের দিক বিবেচনা করে, বৈধ মোবাইল ফোনের দাম কমাতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি জানান, বৈধ পথে বিদেশ থেকে আনা ফোনের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ করতে বিটিআরসি কাজ করছে। এরইমধ্যে জানানো হয়েছে যে, ১৬ ডিসেম্বরের আগে অ্যাকটিভ সবগুলো ফোন বৈধ হিসেবে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে।
রেজিস্ট্রেশন, ডি-রেজিস্ট্রেশন এবং রি-রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতিসমূহ কীভাবে সাধারণ নাগরিকদের জন্য সহজ করা যায়, সে বিষয়ে পাওয়া যৌক্তিক পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে আমলে নেওয়া হচ্ছে বলেও বিশেষ সহকারী মন্তব্য করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা