জানুয়ারি থেকে বাড়ল সঞ্চয়পত্রের মুনাফা
Published: 15th, January 2025 GMT
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। স্কিমের ধরন অনুযায়ী নতুন মুনাফার হার ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এই মুনাফার হার কার্যকর হবে। এতে করে মুনাফাহার অন্তত এক শতাংশ বেড়েছে। আজ বুধবার এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
মুনাফার হার বাড়ানো পাঁচ স্কিমের মধ্যে রয়েছে- পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র এবং পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট। সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগকারীদের দুটি ধাপ রাখা হচ্ছে। প্রথম ধাপ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার নিচের বিনিয়োগকারী। আর দ্বিতীয় ধাপটি হলো ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার ওপরের বিনিয়োগকারী।
পরিবার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার কম বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা সাড়ে ১২ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পাবেন ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
এছাড়া পোস্ট অফিসে ফিক্সড ডিপোজিটে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বা তার নিচের বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার করা হচ্ছে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মুনাফার হার হবে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ।
চলতি বছরের জানুয়ারি-জুনের মধ্যে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই মুনাফার হার কার্যকর হবে। তবে এক জানুয়ারির আগে ইস্যুকৃত সচ সঞ্চয়পত্রে ইস্যুকালীন মেয়াদে, ইস্যুকালীন সময়ের মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে। তবে পুনঃবিনিয়োগের ক্ষেত্রে পুনঃবিনিয়োগের তারিখের মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, ছয় মাস পর জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের বিনিয়োগের মুনাফার হার পুনরায় নির্ধারণ করা হবে। তবে বিনিয়োগকারী ইস্যুকালীন সময়ে বিদ্যমান মুনাফার পর বিনিয়োগকালের পূর্ণ মেয়াদে পাবেন। অর্থাৎ ছয় মাস পর নতুন মুনাফার হার নির্ধারণ করা হলেও জানুয়ারি-জুন সময়ে যে মেয়াদ পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনা হবে, সেই সময় পর্যন্ত এখন যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই হারে মুনাফা পাবেন বিনিয়োগকারীরা।
জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সাধারণ হিসাব এই চারটি স্কিমের মুনাফার হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
এদিকে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে সঞ্চয়পত্র নগদায়নের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ, ৩ মাস অন্তর মুনাফা সঞ্চয়পত্রে ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ, পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ, পরিবার সঞ্চয়পত্রে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং পেস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিটে ১১ শতাংশ থেকে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা পাওয়া যাবে।
পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র
প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা ৫ বছর বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরারা মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র
প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
পেনশনার সঞ্চয়পত্র
প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
পরিবার সঞ্চয়পত্র
প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১০ দশমিক ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছরে ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, চতুর্থ বছরে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং পঞ্চম বছরে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
পোস্ট অফিস ফিক্সড ডিপোজিট
প্রথম ধাপের বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আর দ্বিতীয় ধাপের বিনিয়োগকারীরা প্রথম বছরে ১১ শতাংশ, দ্বিতীয় বছরে ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং তৃতীয় বছরে ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ ব ত য় বছর চ বছর ম য় দ প রথম বছর ত ত য় বছর
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের শিকার কিশোরী
চাকরি দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে বেসরকারি একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণ করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর থেকে ওই বুথের নিরাপত্তাকর্মী পলাতক। গতকাল রোববার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন এটিএম বুথে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা গতকাল রাতেই শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন। পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওই কিশোরীকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
মামলার আসামি বুথের নিরাপত্তাকর্মী লিটন মিয়া। তিনি ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, পোশাক কারখানায় চাকরি করে ভুক্তভোগী কিশোরী। সে এটিএম বুথ থেকে মাস শেষে বেতন তোলে। এর একপর্যায়ে ওই বুথের নিরাপত্তাকর্মী লিটন মিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ১২ হাজার টাকা বেতন নতুন চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বুথের ভেতরে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন নিরাপত্তাকর্মী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, এটিএম বুথ থেকে টাকা উঠানোর সূত্র ধরে ভুক্তভোগী কিশোরীর সঙ্গে পরিচয় হয় এটিএম বুথের নিরাপত্তাকর্মী লিটনের। সেই সূত্রে অন্য কারখানায় ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখান লিটন। রোববার সকালে তিনি কিশোরীর বাবাকে ফোন করেন এবং তার মেয়েকে সকাল ৬টায় বুথে আসতে বলেন। বুথে যাওয়ার পর কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আসবেন এই বলে কিশোরীকে বুথের ভেতরে থাকা ছোট্ট কক্ষে নিয়ে বসান। পরে ওই কক্ষে তাকে ধর্ষণ করেন লিটন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু করা হয়। অভিযুক্ত লিটন মিয়া পালিয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।