যশোরে ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটিকে চিকিৎসা সহায়তা দিলেন তারেক রহমান
Published: 16th, June 2025 GMT
যশোরের চৌগাছায় ধর্ষণের শিকার ৭ বছরের সেই শিশুর চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যেয়ে তারেক রহমানের পক্ষে চিকিৎসা সহায়তা তুলে দেন বিএনপির নারী, শিশু নির্যাতন সহায়তা সেলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা.
এসময় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলা বিএনপি, ড্যাব যশোরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় নির্যাতিত শিশুটির চিকিৎসার খোঁজ খবর নেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসায় দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স এবং আইনি সহায়তায় নিয়োজিত আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে তাদেরকে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
এসময় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গণমাধ্যমে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হওয়ার খবর জানার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন শিশুটির চিকিৎসা নিশ্চিতের। আমরা শিশুটির চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা যাতে নিশ্চিত হয়, সেই লক্ষেই এখানে এসেছি। ভবিষ্যতে শিশুটির যেকোনো সহায়তায় বিএনপির নেতাকর্মীরা পাশে থাকবে।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, চৌগাছায় যখন শিশুটি পাশবিক নির্যাতনের ঘটনার শিকার হয়, তখনই কিন্তু শিশুটিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চিকিৎসকদের আন্তরিকতায় শিশুটির অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। আমাদের নেতা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শিশুটির চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমাদের চিকিৎসকেরা কাজ করছে। আইনি সহায়তার জন্য আমাদের যে লিগ্যাল এইড টিম রয়েছে সেই সদস্যরাও আইনি সহায়তা দিচ্ছে। শিশুটির পাশে বিএনপির নেতাকর্মীরা সব সময় থাকবে।
আর্থিক সহায়তা গ্রহণকালে শিশুটির মা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়ের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, সেটা যেন অন্য কোনো শিশুর সঙ্গে না ঘটে। এই ধরণের ঘটনার বিচার হওয়া উচিত। দৃষ্টান্তমূলক বিচার হলে এসব কর্মকাণ্ডে আর কেউ জড়াবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলায়োর হোসেন খোকন, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খানসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার যশোরের চৌগাছায় বাড়ির পাশে শিশুটিকে ধর্ষণ করে এক প্রতিবেশী। এরপর শিশুটিকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির মা থানায় অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে (৫৫) আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: যশ র ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব এনপ র ন ন ত কর ম ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস