বরিশালের হিজলায় ঢাকাগামী লঞ্চের ডেকে চাদর বিছিয়ে টাকা উত্তোলনের অভিযোগে এক বিএনপি কর্মীকে গণধোলাই দিয়েছেন যাত্রীরা। সোমবার (১৬ জুন) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের গঙ্গাপুর লঞ্চঘাটে ঘটনাটি ঘটে।

মারধরের শিকার বিএনপি কর্মীর নাম মো. খালেক মাঝি। তিনি হরিনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। 

অভিযুক্ত খালেক মাঝি জানান, তিনি চাঁদাবাজি করতে যাননি। লঞ্চের অভ্যন্তরে গোলযোগ দেখে তিনি থামাতে যান। এসময় লঞ্চের যাত্রীরা মিলে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেছে।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ২ প্রতারকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

নেশা ও জুয়ায় টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

লঞ্চে থাকা যাত্রীরা জানান, আজ সকাল ৮টার দিকে মুলাদীর মৃধার হাট থেকে ‘এম বি জানডা’ নামে একটি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে রওনা হয়। সকাল ৯টার দিকে লঞ্চটি হিজলার হরিনাথপুরের শৌলা ঘাটে নোঙর করে। যাত্রীরা লঞ্চের ডেকে বসার চেষ্টা করেন। আগে থেকে লঞ্চের ডেকে বিছিয়ে রাখা চাদরে বসা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন শুরু করেন খালেক মাঝি ও তার সহযোগীরা। 

লঞ্চের ডেকে থাকা একাধিক যাত্রী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মারধর শুরু করেন খালেক মাঝি ও তার সহযোগীরা। এতে লঞ্চের কয়েকজন যাত্রী আহত হন। পরে লঞ্চে থাকা অন্য যাত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়ে খালেক মাঝি ও তার সঙ্গে থাকা লোকজনদের ধরে গণধোলাই দেন। পরে জনরোষ এড়াতে দলবল নিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন খালেক মাঝি। 

লঞ্চে থাকা মেহেদী হাসান বান্না নামে এক যাত্রী মোবাইল ফোনে জানান, খালেক মাঝি নামে এক বিএনপি কর্মী ও তার সহযোগীরা লঞ্চের যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা তুলছিলেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় কিছু যাত্রীর ওপর হামলা করেন তারা। এক যাত্রীর কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে যাত্রীরা এক জোট হয়ে ওই বিএনপি কর্মীকে গণধোলাই দেন। 

হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট দেওয়ান মনির হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি জানেন না। খোঁজ নিচ্ছেন। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

হিজলা থানার ওসি (তদন্ত) মো.

জাহিদ জানান, এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। খোঁজ নেওয়া হবে। ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/পলাশ/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর ব এনপ গণধ ল ই দ ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ

বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।

এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।

জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদ

বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’

‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ