টটেনহ্যামকে গোলবন্যায় ভাসিয়েও সন্তষ্ট নন লিভারপুল কাপ্তান
Published: 7th, February 2025 GMT
কারাবাও কাপের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে লিভারপুল শুক্রবার (৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) টটেনহ্যাম হটস্পারকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ অ্যাগ্রিগেটে ফাইনালে উঠে গিয়েছে অলরেডরা। তবে এই দুর্দান্ত জয়ের পরও লিভারপুলের অধিনায়ক ভার্জিল ভ্যান ডাইক দলের পারফরম্যান্সের কিছু দিক নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
কোডি গাকপো, মোহাম্মদ সালাহ, দমিনিক সোবোসলাই এবং ভ্যান ডাইকের গোলে লিভারপুল স্পার্সকে রীতিমত বিধ্বস্ত করেছে। আর্নে স্লটের দলটি প্রথম মিনিট থেকেই ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে। সেই তীব্রতা এতোটাই বেশি ছিল যে, গোটা ম্যাচে স্পার্স একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি!
আরো পড়ুন:
উড়তে থাকা বোর্নমাউথকে হারিয়েও অস্বস্তিতে লিভারপুল
সালাহর ‘একশর’ দিনে লিভারপুলের দাপুটে জয়
তবে এমন দারুণ প্রদর্শনীর পরও ভ্যান ডাইক নিজেদের প্রথমার্ধের পারফরম্যান্সের সমালোচনা করেছেন, “আমাদের একটি পরিপূর্ণ পারফরম্যান্স প্রয়োজন ছিল। আমি এখনও মনে করি, প্রথমার্ধে আমরা আরও আক্রমণাত্বক হয়ে তাদের ওপর চাপ বাড়াতে পারতাম, এবং এটাই আমি (দলকে) বলেছি। তবে যেমনভাবে আজ রাতে জিতলাম, এটা দলের এবং ক্লাবের জন্য দারুণ। এখন আমরা এফএ কাপের দিকে মনোযোগ দিব।”
এই ফলাফল এই মৌসুমে লিভারপুলের চারটি বড় শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছে। স্লটের দল প্রিমিয়ার লিগে ২৩ ম্যাচে ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে। একম্যাচ বেশি খেলে দ্বিতীয়স্থানে থাকা আর্সেনাল ৬ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে। অন্যদিকে এবারের রবিন রাউন্ড পদ্ধতির চ্যাম্পিয়নস লিগে শীর্ষে থেকেই সেরা ষোলোতে ওঠেছে অলরেডরা।
লিভারপুল এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ডে প্লাইমাউথ আর্গাইলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে নামবে রবিবার। অন্যদিকে আগামী ১৬ মার্চ কারাবাও কাপ ফাইনালে নিউক্যাসলের মুখোমুখি হবে তারা।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।