কুমিল্লার চান্দিনায় সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের শ্বশুর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। পরে বাড়ি ঘেরাও করে অবরুদ্ধ রাখেন হামলাকারীরা। গতকাল সোমবার রাত ১২টার পর চান্দিনা উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের মীরাখোলা মুন্সি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মুজিবুল হকের স্ত্রী হনুফা আক্তারের বড় ভাই আলাউদ্দিন মুন্সি ও নাছির উদ্দিন মুন্সির ঘরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার পর যৌথ বাহিনীর অভিযানে চারজন আটক হয়। 

আটক ব্যক্তিরা হলেন– চান্দিনা উপজেলার মীরাখোলা গ্রামের মো.

রনি, মো. রহিম, মোখলেছুর রহমান ও আব্দুল করিম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আটক ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, রাত ১২টার পর বাড়ির লোকজন ঘুমিয়ে পড়ার পর স্থানীয় কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে ৭০-৮০ জন লোক এসে বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। পরে খবর পেয়ে যৌথ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে আটক করে। রাত আড়াইটার দিকে যৌথ বাহিনী চলে যাওয়ার পর মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। দুপুরে চান্দিনা থানা-পুলিশ বাড়িতে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাটি স্থানীয় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) কর্মী সমর্থকরা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

আলাউদ্দিন জানান, তাদের ঘরের চারটি আলমারি ভেঙে ৩৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৪টি টিভি, ২টি এসি, ৩টি ফ্রিজ, সিসিটিভি ক্যামেরাসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। তার শিশু সন্তানরা ভয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে ছিল। আতঙ্কে দুই শিশু অজ্ঞান হয়ে পড়ে। যারা ঘটনায় জড়িত তাদের অনেকেই এলডিপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

তবে চান্দিনা উপজেলা এলডিপি সভাপতি একেএম সামছুল হক মাস্টারের দাবি, হামলায় এলডিপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ মিথ্যা। তারপরও যদি তাদের দলের কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত কামাল জানান, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সাবেক রেলমন্ত্রীর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আলাউদ্দিন ও নাছির উদ্দিন অত্যাচার করতো। কেউ তাদের কথার অবাধ্য হলে বাড়িতে ধরে নিয়ে মারধর করতো। কয়েকদিন আগেও তারা সরকারি টাকায় নির্মিত পাকা রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মামলা এফআইআর করা হয়েছে। জড়িতদের অন্যদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক চান্দিনার মীরাখোলা গ্রামের মুন্সি বাড়িতে হনুফা আক্তার রিক্তাকে বিয়ে করেন। মুজিবুল হক কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের ৫ বারের সংসদ সদস্য। গত ৫ এপ্রিল বিকেলে মুজিবুল হকের নিজ বাড়িতেও হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আত্মগোপনে আছেন তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল টপ ট ম জ ব ল হক র র লমন ত র এলড প

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার আরও ৩

নরসিংদীর রায়পুরায় ১ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় চাচাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রায়পুরা উপজেলার সাপমারা এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার তিন আসামি হলেন নিহত দুজনের আপন চাচা মো. আবদুল আওয়াল (৬০), তাঁর মেয়ে শাহনাজ বেগম (২৮) ও তাঁর স্বামী শিপন শিকদার (৩২)। পরে আজ তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়।

এর আগে গত শনিবার বেলা পৌনে একটার দিকে রায়পুরার পশ্চিম পাড়ায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন হলেন ওই এলাকার মৃত আবু তাহের মিয়ার ছেলে হুরুন আলী ওরফে হুরা (৩০) ও শাকিল মিয়া (২২)। তাঁরা দুজনই এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।

পুলিশ বলছে, জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত দুই ভাইয়ের মা জোসনা বেগম ১১ জনকে আসামি করে রোববার রায়পুরা থানায় মামলা করেন। ঘটনাস্থল থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আওয়ালের স্ত্রী শরীফা বেগম (৫২) এবং দুই মেয়ে আরজিনা আক্তার (২২) ও আসমা আক্তারকে (১৮) থানায় নেওয়া হয়েছিল। এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এ ছাড়া মঙ্গলবার দুপুরে মামলার অন্যতম আসামি আওয়ালের ছেলে শিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই চারজন বর্তমানে আদালতের নির্দেশে কারাগারে আছেন।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ জানান, জোড়া হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় ১১ জন এজাহারভুক্ত আসামির মধ্যে ৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলছে। শিগগিরই তাঁদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ