ফরিদপুরে বিচারগানের আয়োজন বন্ধ করে দিল প্রশাসন
Published: 23rd, October 2025 GMT
ফরিদপুরের নগরকান্দায় ‘ইসলাম পরিপন্থী’ বলে অভিযোগ পাওয়ার পর বিচারগানের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার তালমা ইউনিয়নের রসুলপুর বাজারে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এর আয়োজন হওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রসুলপুরে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সলেমান ফকিরের উদ্যোগে এ বিচারগানের আয়োজন করা হয়। এর আয়োজন নিয়ে দুই দিন ধরে এলাকায় মাইকিংও করা হয়। প্যান্ডেল ও প্যান্ডেলের ভেতরে মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল। সেখানে কিছু দোকানও বসেছিল। গতকাল সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। ঠিক শেষ মুহূর্তে গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দবির উদ্দিন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুম বিল্লাহ ঘটনাস্থলে গিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধের এ নির্দেশ দেন।
ইউপি সদস্য সলেমান ফকির বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আগে থেকেই বিচারগান হয়ে আসছে। স্থানীয়দের অনুরোধে আমি এক দিনের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। এখানে দোষের কিছু ছিল না। কিন্তু হুজুররা গানের অনুষ্ঠানটিকে যাত্রাপালা হিসেবে প্রচার করেছেন এবং ইউএনওকে দিয়ে এ আয়োজন বন্ধ করে দিলেন।’
সলেমান ফকির জানান, এ আয়োজনের ব্যাপারে তিনি ইউএনও ও ওসির কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়েছিলেন।
তবে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, ‘এ বিচারগান আয়োজনের জন্য আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।’
ইউএনও দবির উদ্দিন আরও বলেন, ‘এ রকম অনুষ্ঠানের জন্য আগে থেকে অনুমতি নিতে হয়। জেলা প্রশাসক এ অনুমতি দেন। এটি এক দিনের অনুষ্ঠান ছিল। প্রথমে আমরা তেমন গুরুত্বের সঙ্গে দেখিনি। তবে বুধবার বিকেলে দেড় শতাধিক ব্যক্তি আমার কাছে এসে জানান, এ আয়োজন ইসলাম পরিপন্থী, এ অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হবে। আর অনুষ্ঠান বন্ধ করা না হলে ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।’
ইউএনও জানান, ওই অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি আসার বিষয়টি তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। পরে জেলা প্রশাসকের পরামর্শে এবং যেহেতু কোনো অনুমতি না নিয়ে এ আয়োজন করা হচ্ছিল, তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র অন ষ ঠ ন ব চ রগ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পাহাড়ি ছড়া থেকে সিলিকা বালু উত্তোলন, ৭ জনের জেল-জরিমানা
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযানে পাহাড়ি ছড়া থেকে অবৈধভাবে সিলিকা বালু উত্তোলনের অভিযোগে সাতজনকে কারা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের বদরগাজী ও হলহলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
আরো পড়ুন:
ধামরাইয়ে অটো রাইস মিলে জরিমানা
ঝিনাইদহে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাংস বিক্রি, ২ ব্যবসায়ীকে জরিমানা
অভিযান শেষে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে চারজন কারা ও অর্থদন্ড এবং তিনজনকে শুধু অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত দেউন্দি গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে জসিম উদ্দিন (৪০), কাঠালবাড়ির সিরাজ মিয়ার ছেলে খয়ের মিয়া (৩১), আব্দুল গনির ছেলে আবু সায়েম (৪৭) ও হলদিউড়া গ্রামের ডেঙ্গু খানের ছেলে রউফ খানকে (৪৫) ১ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দেন।
এছাড়া হলহলিয়া গ্রামের ইন্তাজ উল্যার ছেলে ফারুক মিয়া (৫৫), কাঁঠালবাড়ী গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে তাউজ মিয়া (৪১) এবং দেউন্দির আইয়ুব আলীর ছেলে আলী হায়দরকে (৫৮) ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।
জানা যায়, পাহাড়ি ছড়া থেকে ড্রেজার মেশিনে দেদারসে বালু উত্তোলন চলছে। ছড়ার তলদেশ খুঁড়ে বালু তোলায় সরু ছড়াটি পরিণত হয়েছে গভীর খাদে। বছরের পর বছর অনিয়ন্ত্রিত বালু তোলায় হুমকির মুখে পড়েছে পুরো এলাকা। নিয়মিত বালু তোলায় ছড়ার দুই তীরও ভেঙে পড়ছে, তৈরি হয়েছে ঘরবাড়ি ধসের ঝুঁকি।
হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবল উপজেলার কোনো পাহাড়ি ছড়ায় সিলিকা বালুর মহাল ইজারা দেওয়া হয়নি। তবুও এসব এলাকায় চলছে অবাধ বালু উত্তোলন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে একাধিক বালু লুটের চক্র। তাদের নামে কথা বললেই হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
ইউএনও মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “বুধবার ভোর থেকে অভিযান শুরু হয়। দীর্ঘ অভিযানে আটক সাতজনের মধ্যে চারজনকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং তিনজনকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “দণ্ডপ্রাপ্তদের বিকেলে কঠোর নিরাপত্তায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
ঢাকা/মামুন/মেহেদী