সম্পর্ক আর প্রতিশোধের গল্প ‘ফ্যাঁকড়া’
Published: 8th, May 2025 GMT
শুটিং করতে গিয়ে যা যা হয়েছে তাতে মনে হয় সিরিজের নাম ‘ফ্যাঁকড়া’ খুবই যথাযথ। সাত পর্বের ওয়েব সিরিজটির শুটিং হয় গত বছরের আগস্টে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তখন অস্থির। কারফিউ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়াকড়ি, সরকারের পতন—এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে ঢাকা–মানিকগঞ্জ আর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১৩ দিন শুটিং করতে গিয়ে যা হয়েছে, চাইলে সেটা নিয়েই একটা তথ্যচিত্র বানিয়ে ফেলা যায়।
‘একবার তো গ্রামের মানুষজন লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হয়েছিল। আমাদের সঙ্গে সাত-আটটা গাড়ি, অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলী মিলিয়ে বিশাল বহর; গ্রামবাসী ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তখন যা অবস্থা ছিল তাতে তাদের দোষ দেওয়া যায় না।’ গত সোমবার মুঠোফোনে বলছিলেন সিরিজের নির্মাতা আসিফ চৌধুরী।
‘ফ্যাঁকড়া’র দৃশ্য। নির্মাতার সৌজন্যে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাথমিকে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তে এইচআরএফবির উদ্বেগ
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)। সংস্থাটি মনে করে করে, সরকারের এ সিদ্ধান্ত কেবল অযৌক্তিকই নয়, বরং একটি গোষ্ঠীর চাপে নতজানু হয়ে প্রাথমিক শিক্ষার কাঠামো থেকে এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ জানিয়েছে এইচআরএফবি। একই সঙ্গে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে পুনরায় শিক্ষক নিয়োগের বিধান পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।
এইচআরএফবি বলেছে, শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সরকার বলছে, এত অল্পসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগে কোনো কার্যকর সুফল পাওয়া যাবে না। এতে বৈষম্য সৃষ্টি হতে পারে। বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যার মধ্যে এ নিয়োগকাঠামো বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া পরে অর্থের সংস্থান সাপেক্ষে সব স্কুলে এ রকম নতুন বিষয়ের শিক্ষকের পদ সৃষ্টি এবং সেসব পদে নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
এইচআরএফবি মনে করে, এ ব্যাখ্যা বাস্তব কারণ আড়াল করার প্রয়াসমাত্র। কেননা গত ২৮ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা জারির পর থেকেই কয়েকটি রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক গোষ্ঠী প্রকাশ্যে সংগীত শিক্ষকের পরিবর্তে ‘ধর্ম শিক্ষক’ নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানায়। এমনকি তারা একাধিক সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এ সিদ্ধান্ত বাতিল না করলে আন্দোলনের হুমকি দেয়। এই প্রেক্ষাপটে সরকারের আচমকা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন স্পষ্ট করে যে গোষ্ঠীগত চাপের মুখে সরকার নীতিগত অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
মানবাধিকার সংস্থাটি মনে করে, সরকারের উচিত ছিল পরিকল্পনার সীমাবদ্ধতা বা বাজেট–সংকটের অজুহাত না দেখিয়ে প্রকল্পটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের পথ খোঁজা। এর পরিবর্তে তারা একটি গোষ্ঠীর চাপে নতজানু হয়ে প্রাথমিক শিক্ষার কাঠামো থেকেই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দিয়েছে, যা একটি গণতান্ত্রিক ও বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের জন্য নেতিবাচক দৃষ্টান্ত।
পশ্চাৎমুখী পদক্ষেপ: আসকএদিকে বুধবার আরেক বিবৃতিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) বলেছে, সরকারি প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিলের সিদ্ধান্ত শিক্ষার মানোন্নয়ন ও মানবিক মূল্যবোধ গঠনের ক্ষেত্রে একটি অনভিপ্রেত ও পশ্চাৎমুখী পদক্ষেপ।
আসক মনে করে, আপাতদৃষ্টিতে সরকারের ব্যাখ্যা যুক্তিসংগত মনে হলেও বাস্তব প্রেক্ষাপটে এটি পরিকল্পনার ঘাটতির চেয়ে বেশি রাজনৈতিক চাপের ফলাফল।
পরিকল্পনার ত্রুটি থাকলে তার সমাধান হওয়া উচিত ছিল যুক্তিসংগত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে; সেটি বাতিল করে নয়। শিক্ষাবিষয়ক যেকোনো নীতি কোনোভাবেই ধর্মীয় বা রাজনৈতিক চাপের প্রভাবে নয়, বরং যুক্তি, সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রণীত হওয়া উচিত।
এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষানীতির মৌলিক চেতনার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছে বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। বুধবার এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্ত পরিহার করে অবিলম্বে সৃজনশীল শিল্প ও ক্রীড়া শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুনসংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ বাদ দেওয়ার বিষয়ে যে ব্যাখ্যা দিল অন্তর্বর্তী সরকার০৪ নভেম্বর ২০২৫