নোয়াখালীতে বিয়েবাড়িতে হট্টগোল, বরকে উদ্ধার করল পুলিশ
Published: 16th, May 2025 GMT
বিয়ের আসরে দুই পক্ষে বাগ্বিতণ্ডা থেকে শুরু হাতাহাতি। পণ্ড হয়ে গেল সাজানো অনুষ্ঠান। উভয় পক্ষের কমপক্ষে ছয়জন আহত হন। এমন হট্টগোলের খবর পেয়ে পুলিশ এসে বরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। আজ শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে নোয়াখালীর মাইজদীতে এ ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেনীর দাগনভূঁঞার এক ব্যক্তির সঙ্গে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার এক তরুণীর বিয়ের দিন ধার্য ছিল আজ। এ উপলক্ষে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কনেপক্ষের অভিযোগ, বেলা তিনটার দিকে বর তাঁর আত্মীয়স্বজন নিয়ে এসে কনেপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। এরপর বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।
কনের মামা প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, প্রায় এক মাস ধরে তাঁর ভাগনির বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। আজ বিয়ের দিন ধার্য ছিল। সে অনুযায়ী বিয়ের আগের দিন বরকে প্রায় এক লাখ টাকার উপহারসামগ্রীও দেওয়া হয়। বরের আত্মীয়স্বজন কনের বাড়িতে গিয়ে গায়েহলুদ অনুষ্ঠানও করেন।
কনের মামা আরও বলেন, আজ দুপুর ১২টার দিকে বর তাঁর বোনের মুঠোফোনে ফোন করে জানান, তাঁকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে, না হয় তিনি ওই বিয়ে করতে পারবেন না। এ কথা শুনে তাঁর বোন হতবাক হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তাঁরা বরকে অনুষ্ঠানে এসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার অনুরোধ জানালে বর আসতে রাজি হন। বেলা আড়াইটার দিকে বর তাঁর আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মাইজদীর ওই রেস্তোরাঁয় আসেন। এরপর কথাবার্তার এক পর্যায়ে বর ও তাঁর আত্মীয়স্বজন কনের পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালান। এতে কনেপক্ষের তিনজন আহত হন। পরে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বরকে থানায় নিয়ে যায়। কনের মামা জানান, তাঁরা এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অপর দিকে বরের ভগ্নিপতি প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের আগে ৫০ লাখ টাকা দাবির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কনের মায়ের সম্পর্কে আপত্তিকর একটি অভিযোগ শোনার পর তাঁর শ্যালক বিষয়টি নিয়ে কনের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করতে চান। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে কনের আত্মীয়স্বজনের তাঁদের ওপর হামলা চালান। তাঁরা এ সময় তিনটি মুঠোফোন ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের আসরে গিয়ে পুলিশের একটি দল বরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। তার আগে বরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
এলপিজি গ্যাস ছেড়ে বিক্ষোভ, অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেন শত শত শ্রমিক
গ্যাস বটলিং প্ল্যান্টের এলপিজি গ্যাস ছেড়ে শ্রমিক বিক্ষোভ! কাঁধে সিলিন্ডার তুলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক সিলিন্ডার গ্যাস। গ্যাসের ধোঁয়ায় ঢেকেছে গ্যাস বটলিং প্ল্যান্ট। ঢেকেছে আশপাশের এলাকা। প্রয়োজন শুধু একটু আগুনের ফুলকি! ভয়ংকর!
ভয়ংকর বললেও কম বলা হবে এই ঘটনাকে। শ্রমিকদের উচ্ছৃঙ্খল বিক্ষোভে এভাবেই প্রাণহানির সম্ভবনা তৈরি হয়েছিল শত শত মানুষের। ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার অদূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বজবজের আইওসি বটলিং প্ল্যান্টের।
প্ল্যান্টের গাড়ির খালাসি ও চালকরা গত শনিবার থেকে দুই চালককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও লোডিং-আনলোডিংয়ে বকেয়া টাকা পরিশোধ-সহ বেশ কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন ও ধর্মঘট করছিলেন। চালকদের ধর্মঘটের জেরে প্ল্যান্ট থেকে গাড়ি না বেরোনোয় অসুবিধায় পড়ছিলেন গ্রাহকরা। মঙ্গলবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় প্ল্যান্টের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ইউনিয়নের এক প্রতিনিধি দল ওই চালক এবং খালাসিদের সঙ্গে আলোচনা করে ধর্মঘট তুলে নিতে বলে। কিন্তু তাতে চালক ও খালাসিরা রাজি না হওয়ায় দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। বেশ কয়েকটি মোটরবাইকও ভাঙচুর করা হয়।
আরো পড়ুন:
হাসিতে মিলিয়ে গেল বাঘের আতঙ্ক
তামিলনাড়ুতে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ৬
অভিযোগ ওই হাতাহাতি চলাকালীন একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছেড়ে দেওয়া হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, কাঁধে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের সিলিন্ডার নিয়ে বিক্ষোভরত শ্রমিকরা এলপিজি ছেড়ে দিচ্ছেন। যার জেরে মুহূর্তেই গ্যাসের ধোঁয়ায় ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে যায় গোটা প্ল্যান্ট ও সংলগ্ন এলাকা। আর এমন পরিস্থিতিতে সামান্য আগুনের সংস্পর্শে ঘটতে পারত বড়সড় দুর্ঘটনা। মুহূর্তে ঘটতে পারত বড়সড় গ্যাস বোমা বিস্ফোরণ। শ্রমিকদের উচ্ছৃঙ্খল বিক্ষোভে মুহূর্তে প্রাণ হারাতে পারত শতাধিক শ্রমিক।
এদিন পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠলে বজবজ থানার বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মহেশতলা থানা থেকেও পরে পুলিশ বাহিনী আসে। নামানো হয় র্যাফও। এলাকা এখনও থমথমে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ