বিয়ের আসরে দুই পক্ষে বাগ্‌বিতণ্ডা থেকে শুরু হাতাহাতি। পণ্ড হয়ে গেল সাজানো অনুষ্ঠান। উভয় পক্ষের কমপক্ষে ছয়জন আহত হন। এমন হট্টগোলের খবর পেয়ে পুলিশ এসে বরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। আজ শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে নোয়াখালীর মাইজদীতে এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেনীর দাগনভূঁঞার এক ব্যক্তির সঙ্গে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার এক তরুণীর বিয়ের দিন ধার্য ছিল আজ। এ উপলক্ষে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কনেপক্ষের অভিযোগ, বেলা তিনটার দিকে বর তাঁর আত্মীয়স্বজন নিয়ে এসে কনেপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। এরপর বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।

কনের মামা প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, প্রায় এক মাস ধরে তাঁর ভাগনির বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। আজ বিয়ের দিন ধার্য ছিল। সে অনুযায়ী বিয়ের আগের দিন বরকে প্রায় এক লাখ টাকার উপহারসামগ্রীও দেওয়া হয়। বরের আত্মীয়স্বজন কনের বাড়িতে গিয়ে গায়েহলুদ অনুষ্ঠানও করেন।

কনের মামা আরও বলেন, আজ দুপুর ১২টার দিকে বর তাঁর বোনের মুঠোফোনে ফোন করে জানান, তাঁকে ৫০ লাখ টাকা দিতে হবে, না হয় তিনি ওই বিয়ে করতে পারবেন না। এ কথা শুনে তাঁর বোন হতবাক হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তাঁরা বরকে অনুষ্ঠানে এসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার অনুরোধ জানালে বর আসতে রাজি হন। বেলা আড়াইটার দিকে বর তাঁর আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মাইজদীর ওই রেস্তোরাঁয় আসেন। এরপর কথাবার্তার এক পর্যায়ে বর ও তাঁর আত্মীয়স্বজন কনের পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালান। এতে কনেপক্ষের তিনজন আহত হন। পরে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বরকে থানায় নিয়ে যায়। কনের মামা জানান, তাঁরা এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

অপর দিকে বরের ভগ্নিপতি প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের আগে ৫০ লাখ টাকা দাবির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কনের মায়ের সম্পর্কে আপত্তিকর একটি অভিযোগ শোনার পর তাঁর শ্যালক বিষয়টি নিয়ে কনের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করতে চান। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে কনের আত্মীয়স্বজনের তাঁদের ওপর হামলা চালান। তাঁরা এ সময় তিনটি মুঠোফোন ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের আসরে গিয়ে পুলিশের একটি দল বরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। তার আগে বরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আদেশে বিপাকে সুপ্রিম কোর্ট

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার সীমিত করে দেওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ নিয়ে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে তুমুল বিতর্ক হয়েছে। প্রেসিডেন্টের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিনেই সই হওয়া ওই আদেশ অনুযায়ী, যেসব শিশুর বাবা-মায়ের কেউ মার্কিন নাগরিক বা গ্রিন কার্ডধারী নন, যুক্তরাষ্ট্রে জন্মালেও তারা আর নাগরিকত্ব পাবে না।

রয়টার্স জানায়, ট্রাম্প চাচ্ছেন নাগরিকত্ব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে দেওয়া প্রচলিত ব্যাখ্যায় বড় পরিবর্তন আনতে। তাঁর এ চেষ্টা সফল হলে তা প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া লাখো শিশুর নাগরিকত্বকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে। ট্রাম্পের ওই আদেশ বাস্তবায়নে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন মেরিল্যান্ড, ওয়াশিংটন ও ম্যাসাচুসেটসের ফেডারেল বিচারকরা। ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে, এ বিচারকদের ক্ষমতা খর্ব করতে যেন তাদের আদেশ দেশজুড়ে কার্যকর না হয়।

ট্রাম্পের আদেশ আটকে দেওয়া স্থগিতাদেশগুলো প্রত্যাহারে প্রশাসনের জরুরি আবেদন নিয়ে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে দুই ঘণ্টার বেশি শুনানি হয়েছে। সরকার পক্ষের যুক্তি হচ্ছে, ফেডারেল বিচারকরা দেশজুড়ে একসঙ্গে স্থগিতাদেশ দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না। সেজন্য তাদের স্থগিতাদেশগুলো বাতিল করে প্রশাসনকে প্রেসিডেন্টের আদেশ বাস্তবায়নের সুযোগ করে দিতে হবে।

প্রশাসনের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল ডি জন সাওয়ার বলেন, বিচারকদের দেশজুড়ে স্থগিতাদেশ জারির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা ‘বিকারে’ পরিণত হয়েছে।অন্যদিকে লিবারেল বিচারক সোনিয়া সোটোমেয়র বলেছেন, ‘আমরা যদি সেই হাজার হাজার শিশুর কথা চিন্তা করি, নাগরিকত্বের কাগজপত্র ছাড়া জন্মগ্রহণ করায় যারা রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়তে পারে এবং তারা সরকারি সুযোগ-সুবিধাও পাবে না, তাহলে অবশ্যই আদালতের এই (নির্বাহী) আদেশের বৈধতা বিবেচনা করা উচিত।’

ট্রাম্পের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যারা মামলা করেছেন তারা বলছেন, প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ কার্যকর হলে প্রতি বছর দেড় লাখের বেশি নবজাতক নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হবে। মামলাকারীদের তালিকায় ২২টি অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট অ্যাটর্নি জেনারেলের পাশাপাশি অভিবাসন অধিকার কর্মী ও অন্তঃসত্ত্বা অভিবাসীরাও আছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ