ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের এক কর্মকর্তা বলেছেন, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিষয়ে শিগগিরই নিজেদের অবস্থান জানাবেন তাঁরা।

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ নাজ্জাল গতকাল বৃহস্পতিবার আল-জাজিরা অ্যারাবিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।

নাজ্জাল বলেন, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থে তাদের মতামত প্রকাশ করার অধিকার রাখে হামাস।

আরও পড়ুনইসরায়েল ‘জলদস্যুর কাজ’ করেছে: এরদোয়ান১৬ ঘণ্টা আগে

হোয়াইট হাউস কর্তৃপক্ষ চলতি সপ্তাহের শুরুতে একটি ২০ দফাবিশিষ্ট পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এতে গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর, হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কাছে থাকা ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ধাপে ধাপে সরে যাওয়া, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ এবং আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে একটি অস্থায়ী সরকার গঠন।

গত মঙ্গলবার এ পরিকল্পনার ব্যাপারে সম্মত হতে হামাসকে তিন-চার দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন ট্রাম্প।

ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তবে ফিলিস্তিনের অনেকে মনে করছেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ইসরায়েলকেই বেশি সুবিধা দেবে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এর তিন গুণও হতে পারে।

আগের আলোচনাগুলোর সময় হামাস দাবি করেছিল, ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরিভাবে গাজা থেকে সরে যেতে হবে। তারা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দাবি করেছিল, যেন গাজা উপত্যকা, বিশেষ করে গাজার উত্তরাংশ থেকে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে। সেখানে জোরেশোরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

হোয়াইট হাউস কর্তৃপক্ষ চলতি সপ্তাহের শুরুতে একটি ২০ দফাবিশিষ্ট পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এতে গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর, হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কাছে থাকা ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ধাপে ধাপে সরে যাওয়া, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ এবং আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে একটি অস্থায়ী সরকার গঠন।

গতকাল সকালে মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি বলেন, কাতার ও তুরস্কের সঙ্গে মিলে তাঁর দেশের সরকার হামাসকে ট্রাম্পের প্রস্তাব মেনে নিতে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন।

গতকাল প্যারিসের ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসে বক্তব্য দিতে গিয়ে বদর আবদেলাত্তি আরও বলেন, এটা পরিষ্কার যে হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে এবং ইসরায়েলকে গাজায় হামলা চালানোর মতো কোনো অজুহাত তৈরির সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা এর তিন গুণও হতে পারে।

আবদেলাত্তি বলেন, ‘এটা প্রতিশোধকে ছাপিয়ে গেছে। এটা স্পষ্টত জাতিগত নিধন। যথেষ্ট হয়েছে।’

দুই গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর মনে করে, ট্রাম্পের পরিকল্পনার কিছু দিক নিয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন।

আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের১১ ঘণ্টা আগে

কাতার ও তুরস্কের সঙ্গে সমন্বয় করে হামাসকে পরিকল্পনাটির বিষয়ে ইতিবাচকভাবে সাড়া দিতে রাজি করানোর চেষ্টা করছে কায়রো।

এ ব্যাপারে আবদেলাত্তি বলেন, ‘হামাস যদি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে বোঝাই যায় পরিস্থিতি অনেক কঠিন হয়ে যাবে। আর অবশ্যই আরও উত্তেজনা বাড়বে। তাই আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি, যাতে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নযোগ্য হয় এবং হামাসের কাছ থেকে সম্মতি পাওয়া যায়।’

আবদেলাত্তি আরও বলেন, তিনি গাজার জন্য ট্রাম্পের প্রস্তাবকে মোটামুটি সমর্থন করেন, তবে এ বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ম প র প রস ত ব ইসর য় ল র আবদ ল ত ত করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্লোটিলা বহরের শেষ জাহাজেরও নিয়ন্ত্রণ নিল ইসরায়েল

ত্রাণ নিয়ে গাজা অভিমুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের সবশেষ জাহাজটিও আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপকূলে আসলে ম্যারিনেট নামের জাহাজটির দখল নেয় ইসরায়েলি সৈন্যরা। এর আগে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের অন্য সব জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইসরায়েলি বাহিনী। লাইভস্ট্রিম ভিডিওতে দেখা গেছে, শুক্রবার সকালে ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্যরা জোর করে জাহাজটিতে উঠে পড়েন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ