ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন হলিউড অভিনেত্রী নিকোল কিডম্যান ও অস্ট্রেলিয়ান গায়ক কেইথ আরবান। কিন্তু এ জুটির ভালোবাসার ছন্দে ছেদ পড়েছে। ভেঙে গেছে তাদের ১৯ বছরের সংসার। 

এরই মধ্যে সামনে এসেছে, এ দম্পতির বিবাহপূর্ব আর্থিক চুক্তি। এই চুক্তিতে চমকপ্রদ একটি ধারা রয়েছে, যার ফলে গায়ক স্বামী কেইথ আরবানকে মোটা অঙ্কের অর্থ অভিনেত্রী নিকোলের দিতে হতে পারে!  

আরো পড়ুন:

ভেঙে গেল নিকোল কিডম্যানের ১৯ বছরের সংসার

প্রেমিককে বিয়ে করলেন সেলেনা গোমেজ

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চুক্তিতে ‘সোব্রাইটি ক্লজ’ রয়েছে; যাকে ‘কোকেইন ক্লজ’ বলা হয়। এই ক্লজ অনুযায়ী, কেইথ আরবান যদি সম্পূর্ণভাবে মাদকমুক্ত থাকেন তবে প্রতি বছর ৬ লাখ মার্কিন ডলার পাবেন তিনি। তাদের ১৯ বছরের বিবাহিত জীবনের হিসাবে, আরবান এই ধারার অধীনে প্রায় ১১.

৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পেতে পারেন। জানা গেছে, ২০০৬ সালে পুনর্বাসন কেন্দ্রে যাওয়ার পর থেকে মাদকমুক্ত রয়েছেন কেইথ আরবান। 

আরবান মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে নিজের সংগ্রাম নিয়ে অনেকবার প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। ২০২৪ সালের এপ্রিলে, ৪৯তম এএফআই লাইফ অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড গালায় কিডম্যানকে সম্মান জানান আস্ট্রেলিয়ান গায়ক কেইথ আরবান। তখন এ গায়ক বলেছিলেন, “আমরা ২০০৬ সালের জুনে বিয়ে করি। বিয়ের মাত্র চার মাস পরই আমার মাদকাসক্তির কারণে আমাদের সম্পর্ক প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। আমি তখন তিন মাস রিহ্যাবে ভর্তি ছিলাম।” 

স্ত্রী নিকোল কিডম্যানের ত্যাগের ব্যাখ্যা করে কেইথ আরবান বলেছিলেন, “আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা আমি জানতাম না। কিন্তু সত্যিকারের ভালোবাসা কী তা জানতে চাইলে এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হবে। নিক (নিকোল) প্রত্যেকটি নেতিবাচক কথা, আমি নিশ্চিত তার নিজের মনেও যেগুলো ছিল, তা-ও উপেক্ষা করে ভালোবাসাকে বেছে নিয়েছিল। আর এজন্য আমরা ১৮ বছর পরও একসঙ্গে আছি।” 

মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি পেতে কিডম্যান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, এজন্য কেইথ আরবান প্রায়ই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ২০১৬ সালে রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরবান জানান, একবার কিডম্যান তার জন্য একটি ইন্টারভেনশন (বন্ধু-পরিবার মিলে সাহায্য করা) এর আয়োজন করেছিলেন; যাতে তিনি সঠিক পথে ফিরে আসতে পারেন। আরবান বলেছিলেন, “আমি খুব, খুব সৌভাগ্যবান যে নিক (নিকোল) ইন্টারভেনশনের ডাক দিয়েছিল। ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সহায়তা এই প্রক্রিয়াটিকে সহজ করে তুলেছিল।” 

২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনে সাক্ষাৎকার দেন কেইথ আরবান। নিকোল কিডম্যান তাকে নতুন করে জন্ম দিয়েছেন বলে এ আলাপচারিতায় জানান। এ গায়ক বলেছিলেন, “আমি আমার সদ্য বিবাহিত জীবন ধ্বংসের কারণ ছিলাম। এটা টিকে গেছে। এটা একটা অলৌকিক ঘটনা। নিকোল কিডম্যানের সঙ্গে আমি একধরনের আধ্যাত্মিক জাগরণ অনুভব করি। আমি যদি এ বিষয়ে অভিব্যক্তি প্রকাশ করি, তবে বলব—‘আমি ওর মধ্যে জন্ম নিয়েছি’। জীবনে প্রথমবারের মতো আসক্তির শৃঙ্খল ঝেড়ে ফেলতে পেরেছিলাম।” 

বহু আগে থেকে মাদকাসক্ত কেইথ আরবান। এ থেকে বের হতে বহুদিন ধরে লড়াই করে আসছেন। ১৯৯৮ সালে প্রথম ন্যাশভিলে পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি হন। ২০০৬ সালে কিডম্যানকে বিয়ে করার কিছুদিন পর আবার বেটি ফোর্ড সেন্টারে চিকিৎসা নেন এই গায়ক। 

২০০৬ সালের ২৫ জুন নিকোল ও কেইথ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০০৮ সালে প্রথম সন্তানের মা হন কিডম্যান, ২০১০ সালে দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন এই অভিনেত্রী। তাছাড়া নিকোল দত্তক নিয়েছেন দুই সন্তান। তারা হলেন—ইসাবেলা ও কনর।  

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ২০০৬ স ল বল ছ ল ন

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি কেনাকাটায় অনলাইনে দরপত্র বাধ্যতামূলক

সরকারি কেনাকাটায় সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সরকারি ক্রয়নীতিতে (পিপিএ) বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন ক্রয়নীতিতে সব ধরনের সরকারি কেনাকাটায় অনলাইনে দরপত্র আবেদন (ই–জিপি) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গত রোববার নতুন এই বিধিমালা গেজেট হিসেবে প্রকাশ করে কার্যকর করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকারি ক্রয় কর্তৃপক্ষ বা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০০৬ সালে প্রকাশিত পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্টে (পিপিএ) আনা সংশোধনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে নতুন পিপিআর ২০২৫ তৈরি করা হয়। এখন থেকে সরকারি কেনাকাটায় সংশোধিত পিপিএ ২০০৬ ও নতুন পিপিআর ২০২৫ দুটিই কার্যকর হবে।

আরও কী কী পরিবর্তন এসেছে

নতুন সরকারি ক্রয়নীতিতে ১৫৪টি বিধি ও ২১টি তফসিল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন বিধিমালায় অভ্যন্তরীণ কেনাকাটায় ১০ শতাংশ মূল্যসীমা বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া চুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রকৃত উপকারভোগীর (বেনিফিশিয়ারি ওনারশিপ) তথ্য প্রকাশ বাধ্যবাধকতার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি ক্রয়ে টেকসই কেনাকাটা করতে হবে। সরকারি প্রতিটি কেনাকাটায় কৌশলগত পরিকল্পনা প্রস্তুত বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

নতুন বিধিমালায় আরও বলা হয়, ভৌত সেবাকে স্বতন্ত্র প্রকিউরমেন্ট ক্যাটাগরি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এ ছাড়া কাঠামো চুক্তি (ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট) দর–কষাকষির ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করতে হবে। যেকোনো কেনাকাটার পরিকল্পনা বাতিলের জন্য একটি ডেবারমেন্ট বোর্ড (বাতিল করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত বোর্ড) প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ ছাড়া সম্পদ নিষ্পত্তিসংক্রান্ত স্পষ্ট বিধান তৈরি করতে হবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন বিধিমালা তৈরি করতে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) এ খাতের অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ ও আলোচনা করে। আলোচনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বড় ক্রয়কারী সংস্থা, দরদাতা, সাংবাদিক, নারী উদ্যোক্তা ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ১২টি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অধিকাংশ অংশগ্রহণকারী পুরোনো বিধিমালায় সংশোধন না এনে সম্পূর্ণ নতুন পিপিআর করার মত দেন।

বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটির (বিপিপিএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বলেন, নতুন বিধিমালা দেশের সরকারি কেনাকাটা সংস্কারের ইতিহাসে মাইলফলক।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব মো. কামাল উদ্দিন বলেন, নতুন এই বিধিমালা সরকারি কেনাকাটার প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি কেনাকাটায় অনলাইনে দরপত্র বাধ্যতামূলক