হাদিয়া বা উপহার প্রদান করা ও গ্রহণ করা উভয়ই সুন্নত। কোনো শর্ত ও স্বার্থ ছাড়া কারও প্রতি অনুরাগী হয়ে যে দান বা উপঢৌকন প্রদান করা হয়, তাই হাদিয়া বা উপহার। হাদিয়া বা উপহার দাতা ও গ্রহীতা উভয়কে সম্মানিত করে। এটি কোনো দয়া বা দাক্ষিণ্য নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা হাদিয়া বা উপহার আদান–প্রদান করো, তোমাদের মধ্যে প্রীতির বন্ধন দৃঢ় হবে।’ (বুখারি, তিরমিজি)
হাদিয়া বা উপহার একটি সুন্নত আমল। এর জন্য কোনো উপলক্ষের বা অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা নেই। হাদিয়া বা উপহারের পরিমাণ বা মূল্যমান বড় বিষয় নয়। কারণ, প্রকৃত উপহার লৌকিকতানির্ভর নয়; বরং হাদিয়া বা উপহার হলো আন্তরিকতার বিষয়। লৌকিকতা ছাড়া আন্তরিক উপস্থিতি, শুভেচ্ছা বিনিময় ও শুভকামনা শ্রেয়তর। তাই হাদিয়া বা উপহারসামগ্রীর কারণে আমাদের বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে সানন্দ উপস্থিতি যেন বিঘ্নিত না হয়। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘উত্তম বাক্য ও ক্ষমাপ্রার্থনা ওই দান অপেক্ষা শ্রেয়তর, যে দানের পর কষ্ট অনুগামী হয়। আল্লাহ মহাধনবান ও চিরপ্রশংসিত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৬৩)
উপহারদাতাকে ধন্যবাদ জানানো সুন্নত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যদি কৃতজ্ঞ হও, আমি নিয়ামত আরও বাড়িয়ে দেব, আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে আমার শাস্তি অতি কঠিন।’ (সুরা ইব্রাহিম, আয়াত: ৭)
হাদিয়া বা উপহার একটি সুন্নত আমল। এর জন্য কোনো উপলক্ষের বা অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা নেই। হাদিয়া বা উপহারের পরিমাণ বা মূল্যমান বড় বিষয় নয়। কারণ, প্রকৃত উপহার লৌকিকতানির্ভর নয়; বরং হাদিয়া বা উপহার হলো আন্তরিকতার বিষয়মনে রাখতে হবে, উপহার কোনো বিনিয়োগ বা ঋণদান নয়। যিনি কাউকে কোনো উপলক্ষে উপহার বা হাদিয়া দিলেন, তাঁর কখনো এমন আশা পোষণ করা সমীচীন হবে না যে ওই ব্যক্তি আমার বা আমাদের কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে অনুরূপ হাদিয়া বা উপহার দেবেন। উপহার বা হাদিয়া কোনো পাওনা বিষয় নয় যে কেউ না দিলে মন খারাপ করতে হবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা তাদের সম্পদ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় করে, অতঃপর খোঁটা বা তুলনা দিয়ে এবং কষ্ট দিয়ে তার অনুসরণ করে না। তাদের জন্য তাদের রবের নিকট রয়েছে তাদের বিনিময়, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।’ (সুরা: বাকারা, আয়াত: ২৬২)। রাসুলুল্লাহ (সা.
উপহার, উপঢৌকন ও হাদিয়া ছাড়া মেহমান এলে তাকে অবজ্ঞা বা অবহেলা এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে এবং কিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তারা যেন তাদের অতিথিদের সম্মান করে।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি)
উপহারসামগ্রীর মালিক ও ব্যবহারকারী তিনিই হবেন, যাকে বা যাকে কেন্দ্র করে উপহার দেওয়া হয়েছে। শিশুর উপহারসামগ্রীর মালিকানাও শিশুরই। উপহারের খেলনা, পোশাক, টাকাপয়সা বা ধনসম্পদ হোক; কোনো অবস্থাতেই শিশুর অনুমতি বা সম্মতি ছাড়া কাউকে দেওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে শিশুর সাবালক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
যেসব জিনিস শিশুর ব্যবহারের অনুপযোগী, তা কাউকে দিতে হলে তার বিক্রয়মূল্য ধার্য করে তা শিশুর জন্য সঞ্চয় হিসেবে রাখতে হবে। তবে পরিবার অসচ্ছল হলে ওই অর্থ শুধু শিশুর জন্যই ব্যয় করতে পারবে। পুনরায় সচ্ছলতা ও সামর্থ্য এলে তাকে তা ফেরত দিতে হবে। এতিম শিশুর জন্য উপহার তার সম্পদ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(এতিমরা) বয়ঃপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কল্যাণসাধনের উদ্দেশ্য ছাড়া এতিমদের সম্পত্তির নিকটবর্তী হয়ো না।’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১৫২)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ ত আল অন ষ ঠ ন উপলক ষ র জন য স ন নত উপহ র
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ সালে ব্যাংক বন্ধের তালিকা প্রকাশ
২০২৬ সালে ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী বছর ব্যাংকগুলোর জন্য ২৮ দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
নতুন তালিকা অনুযায়ী, আগামী বছর প্রথম সরকারি ছুটির দিন হবে শবে-বরাত উপলক্ষ্যে। ৪ ফেব্রুয়ারি একদিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে। ওই মাসে ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এরপর শবে কদর উপলক্ষে ১৭ মার্চ ব্যাংক বন্ধ থাকবে। জুমাতুল বিদা ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১৯ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত পাঁচদিন ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এরপর স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ২৬ মার্চ ব্যাংক বন্ধ থাকবে।
চৈত্র সংক্রান্তি (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দারবান পার্বত্য জেলার জন্য প্রযোজ্য) ১৩ এপ্রিল ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এরপর বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে ১৪ এপ্রিল, মে দিবস ও বৌদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ১ মে, ২৬ থেকে ৩১ মে পাঁচদিন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ব্যাংক বন্ধ থাকবে।
এদিকে, আশুরা উপলক্ষ্যে ২৬ জুন, ১ জুলাই ব্যাংক হলিডে উপলক্ষ্যে একদিন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ৫ আগস্ট, ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে ২৬ আগস্ট, জন্মাষ্টমী ৪ সেপ্টেম্বর, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ২০ ও ২১ অক্টোবর, বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ১৬ ডিসেম্বর, বড়দিন উপলক্ষ্যে ২৫ ডিসেম্বর ও ব্যাংক হলিডে উপলক্ষ্যে ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংক বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চলতি বছরের ৯ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সব তফসিলি ব্যাংকের জন্য এ ছুটি কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকায় দেখা গেছে, চলতি বছর দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর জন্য ছুটি ছিল ২৭ দিন, আগের বছর ব্যাংকগুলোর জন্য ছুটি ছিল ২৪ দিন।
ঢাকা/নাজমুল//