কুমিল্লায় ড্যাবের এক নেতার বিরুদ্ধে আরেক নেতার অনুসারীদের মানববন্ধন
Published: 2nd, October 2025 GMT
বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের পেশাজীবী সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) কুমিল্লা জেলার সভাপতি মোহাম্মদ মাসুম হাসানের বিরুদ্ধে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেনাকাটায় অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন সংগঠনটির মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ হায়দার। ওই অভিযোগকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে আরিফ হায়দারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন মাসুম হাসানের অনুসারীরা।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে ‘কুমিল্লার সচেতন নাগরিক’ ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিতে কোনো চিকিৎসককে অংশ নিতে দেখা যায়নি। তবে উপস্থিত সবাই চিকিৎসক নেতা মোহাম্মদ মাসুদ হাসানের (এম এম হাসান) অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
মানববন্ধনে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার কালীরবাজার এলাকার বাসিন্দা মো.
আবদুল লতিফ নামের একজন বলেন, ‘ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকেই আরিফ হায়দার এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমরা তারেক রহমান ও ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দাবি জানাচ্ছি, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যারা ড্যাবের মতো মর্যাদাশীল সংগঠনের সুনাম নষ্ট করছে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কেনাকাটায় বড় ধরনের অনিয়ম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে, ২৪ কোটি টাকার কেনাকাটায় চার কোটি টাকার বেশি লুটপাট হয়েছে। এতে জড়িত ছিলেন হাসপাতালের পরিচালক মো. মাসুদ পারভেজ ও ড্যাব নেতা এম এম হাসান। এ নিয়ে গত ২১ সেপ্টেম্বর ড্যাবের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ শাখা ও জাতীয়তাবাদী চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও ড্যাবের মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হায়দার এম এম হাসানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেন। একই সভায় এম এম হাসান তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ অস্বীকার করে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। এমন পরিস্থিতিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে ড্যাবের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মো. জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ড্যাবের কুমিল্লা জেলা, মহানগর ও মেডিকেল কলেজ শাখা কমিটির সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। পাশাপাশি তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়।
আজকের মানববন্ধনের পর আরিফ হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওই সভায় দীর্ঘ বক্তব্যে তাঁর (এম এম হাসান) অনিয়ম ও দুর্নীতির সব তথ্য ফাঁস করে দিয়েছি। ২৪ কোটি টাকার কেনাকাটায় এম এম হাসান ২ কোটি ২০ লাখ টাকা ঠিকাদারের কাছ থেকে নিয়েছেন, পরিচালক নিয়েছেন ২ কোটির বেশি। তিনি আর পরিচালক মিলে কেনাকাটায় লুটপাট করেছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে এম এম হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আরিফ হায়দারের একটি কথারও সত্যতা নেই। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মূল বিষয়টি হচ্ছে আরিফ হায়দার আশঙ্কা করছেন, বিগত সময়ে নিজের কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি ভবিষ্যতে ড্যাব থেকে বাদ পড়তে পারেন। এ জন্য তিনি এসব মিথ্যাচার শুরু করেছেন। ড্যাবের সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব থেকে তিনি মিথ্যাচার করেছেন।
আরও পড়ুনড্যাবের কুমিল্লা জেলা, মহানগর ও মেডিকেল কলেজ শাখার সব কার্যক্রম স্থগিত২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ এম এম হ স ন কল জ শ খ কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে ধর্ষণ ও প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে মানববন্ধন
খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ এবং এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভাকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। মানববন্ধন থেকে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন হয়। এতে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন গণসাক্ষরতা অভিযান, ব্লাস্ট, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ও নারী প্রগতি সংঘের সদস্যরা।
মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, এখনো ধর্ষণের মামলা করতে গেলে নির্যাতনের শিকার নারীকে আলামত দিতে হয়। নির্যাতনের শিকার নারী কেন আলামত দেবে? ধর্ষণকারী প্রমাণ করবে তিনি ধর্ষণ করেছেন কি করেননি।
ফওজিয়া মোসলেম আরও বলেন, পাহাড়ি আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে নানা বৈষম্যের শিকার। তাদের ওপর সহিংস আক্রমণ চালিয়ে একধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানি তৈরি করা হচ্ছে। এর দায়ভার কে নেবে?
মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, খাগড়াছড়িতে ন্যায়বিচার না পেয়ে যখন এলাকাবাসী ফুঁসে উঠল, তখন দেখা গেল প্রতিবাদকারীদের ওপরই হামলা চালানো হলো, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট ঘটল। কিন্তু একটি নিরীহ কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা কোথায় ছিল—এ প্রশ্ন আজ সবার মনে জেগে উঠেছে।
মালেকা বানু আরও বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে যারা প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা জরুরি।
মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা বলেন, ‘সব খবর পত্রিকায় আসে না। পাহাড়ের নারী ও মেয়েরা সহজে ধর্ষণের শিকার হন। যেকোনো বয়স ও ধর্মের নারী হামলার শিকার হলেই মহিলা পরিষদের সদস্যরা এখানে প্রতিবাদ করতে আসি। কিন্তু এসব ঘটনার প্রতিকার হচ্ছে না।’
নারী প্রগতি সংঘের সেলিনা পারভিন বলেন, ‘গত এক বছরে এ ধরনের কত ঘটনা ঘটেছে, আপনারা কেউ বলতে পারেন? অথচ আপনারা দেশ পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। খাগড়াছড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে, একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে। আমরা এমন দেখতে চাই না।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনূস।