সক্ষমতাহীন ও নামসর্বস্ব সংস্থাগুলো বাদ দিন
Published: 3rd, October 2025 GMT
বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রশ্ন আজ শুধু রাজনৈতিক বিতর্কের বিষয় নয়, গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অন্যতম শর্তও। এই পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সম্প্রতি ৭৩টি সংস্থার একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে, যারা আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নিতে পারে। কিন্তু অনুসন্ধানে যা উঠে এসেছে, তা উদ্বেগজনক ও হতাশাজনক।
তালিকার অনেক সংস্থা কার্যত অকার্যকর। যেমন কুড়িগ্রামের ‘অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা’ বর্তমানে কোনো কার্যক্রমই পরিচালনা করছে না। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক নিজেই স্বীকার করেছেন, একসময় প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা ও নারীদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করলেও এখন প্রতিষ্ঠানটি নিষ্ক্রিয়। উপরন্তু ভিজিডি কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগে মামলাও চলছে তাদের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন হলো মামলায় অভিযুক্ত, কর্মীবিহীন, কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি সংস্থাকে কীভাবে নির্বাচনী পর্যবেক্ষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হলো?
তালিকায় স্থান পাওয়া অনেক সংস্থার ঠিকানা নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। কোথাও সংস্থাটির প্রধানের ব্যক্তিগত বাসভবনকে অফিস দেখানো হয়েছে, কোথাও নির্মাণাধীন ভবনকে কার্যালয় বলা হয়েছে। কোনো সংস্থার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, কর্মী বলতে বাবা-ছেলে দুজন ছাড়া কেউ নেই। কোথাও আবার পরিত্যক্ত ঘরে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে অস্তিত্ব প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে। এর থেকে স্পষ্ট, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নামে নামসর্বস্ব সংগঠনের প্রসার ঘটছে, যাদের এই কাজে প্রকৃত সক্ষমতা নেই।
সংস্থাগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো ব্যক্তির রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আরও দুশ্চিন্তা তৈরি করে। নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে, যে সংস্থার নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের কেউ সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত, তারা পর্যবেক্ষক হিসেবে অনুমোদন পাবে না। অথচ প্রাথমিক তালিকায় এমন বেশ কিছু সংস্থা রয়েছে, যাদের নেতারা অতীত বা বর্তমানে সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এ অবস্থায় নিরপেক্ষতা কি আদৌ সম্ভব? নির্বাচন পর্যবেক্ষণ যদি রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতপূর্ণ হয়, তবে তা জনগণকে বিভ্রান্ত করবে এবং ভোটের গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতার অভাবও বড় একটি সমস্যা। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কোনো সহজ কাজ নয়। এর জন্য প্রশিক্ষিত কর্মী, গবেষণার দক্ষতা, মাঠপর্যায়ে সংগঠিত কাঠামো ও আর্থিক স্বচ্ছতা অপরিহার্য। অথচ তালিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে ৫০ জনের বেশি কর্মী আছে মাত্র ছয়টিতে। অনেক সংস্থা আগে কখনো এককভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেনি। এর ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়ন আসার বদলে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
এখানে ইসির ভূমিকা সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখে। ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব স্বীকার করেছেন যে যাচাই-বাছাই খুব পদ্ধতিগতভাবে করা হয়নি। তাহলে কি এ ধরনের গুরুতর কাজে অবহেলা করা হয়েছে? যদি তা–ই হয়, তবে এটি কেবল প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
অতীতে আমরা দেখেছি, ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগেও নামসর্বস্ব সংস্থাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তখনো ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরিবর্তে কেন আবার একই ভুল করা হচ্ছে? যদি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নামে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানগুলো মাঠে নামে, তবে তাদের প্রতিবেদনের ওপর আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরাও আস্থা রাখতে পারবে না।
নির্বাচন কেবল রাজনৈতিক দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয় নয়; এটি জনগণের আস্থা অর্জনেরও প্রশ্ন। নামসর্বস্ব সংস্থাকে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়ে আস্থা অর্জন করা অসম্ভব। ইসিকে তাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
জরুরি হলো প্রকৃতপক্ষে সক্রিয়, অভিজ্ঞ ও স্বচ্ছ সংস্থাগুলোকে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া। স্থানীয় ও জাতীয়ভাবে যেসব সংস্থা দীর্ঘদিন মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও সুশাসনের প্রশ্নে কাজ করছে, সেসব সংস্থাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা, আর্থিক স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা কঠোরভাবে যাচাই করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
শামীম ওসমান দিনের পর দিন না’গঞ্জবাসীর সাথে প্রতারণা করেছে: কম. সাঈদ
নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনে শক্তির জানান দিলেন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কমরেড সাঈদ আহমেদ। সদর-বন্দরবাসী কাছে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করে নগরীতে শোডাউনের মাধ্যমে ধানের শীষের প্রচারণা করলেন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ এই নেতা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে শহরের আমলাপাড়াস্থ নিজ কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু সড়কজুড়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের প্রধান এই নেতা।
মিছিল ও ধানের শীষের প্রচারণা শেষে কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহু দুঃখজনক ও বিতর্কিত ঘটনা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহার ও দমন পীড়নের অভিযোগ যেভাবে উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর স্মৃতি আজও জাতির মনে গভীর ক্ষত হিসেবে রয়ে গেছে।
১৯৭৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজশাহীতে আমাদের দলের ৪৪ জন নেতাকে হত্যার অভিযোগ, কিংবা ১৯৭৫ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে আটক করে পরে হত্যার ঘটনাকে ঘিরে উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি এসবই ইতিহাসে গভীর বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একইভাবে, তৎকালীন সংসদ সদস্য শাহিন আলীর মৃত্যুকেও অনেকেই রাজনৈতিক নিপীড়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাগুলো আমরা ইতিহাসের দাবি হিসেবে তুলে ধরি জবাবদিহির প্রয়োজন থেকে, সত্য উন্মোচনের প্রয়োজন থেকে। কারণ যদি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অতীত ও কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলতে শুরু করি, তবে তা একদিনে শেষ করা যাবে না।
দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যেভাবে দমন-পীড়ন হয়েছে অনেকে মনে করেন, তার নজির পৃথিবীর ইতিহাসেই খুব কম রয়েছে। আর ঠিক সেই কারণেই আমরা, দেশ ও জনগণের স্বার্থে, আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নির্দেশনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।
কমরেড সাঈদ আহমেদ বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছেন এ অভিযোগ জনগণের মুখেই শোনা যায়। প্রেসিডেন্টের গাড়ি থামিয়ে স্মারকলিপি দেয়ার ঘটনায় তিনি নিজেকে যুক্ত করার চেষ্টা করলেও, সেদিন ওই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।
তিন জানান, নারায়ণগঞ্জকে জেলা করা এবং তুলারাম কলেজকে সরকারি করার দাবিতে সেই স্মারকলিপি তিনি নিজেই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে প্রদান করেছিলেন সেই সময় শামীম ওসমানের রাজনৈতিক অস্তিত্বই ছিল না।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের জনগণ যেভাবে প্রতারণার জবাব দিয়েছে, ভবিষ্যতেও ঠিক সে ভাবেই দেবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, তালবাহানা, কিংবা অগ্নিসংযোগ বা কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করার চেষ্টা কোনোটাই বরদাস্ত করা হবে না। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এবং জনগণের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিব ১৯৭৩ সালে যেভাবে অরজগতা সৃষ্টি করেছিল (১১ ডিসেম্বরে) আমাদের পার্টির ৪৪ জন নেতাকে রাজশাহীতে হত্যা করেছিল রক্ষী বাহিনীর মঞ্জুরের নেতৃত্বে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, ১৯৭৫ সালের (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থেকে সিরাজ শিকদারকে ধরে এনে ঢাকা সাভারে নিয়ে শেখ মুজিবের রকিবাহিনী হত্যা করেছিল, আরো হত্যা করেছিল পার্লামেন্টে শাহিন আলিকে শেখ মুজিব নিজ হাতে,
তিনি আরও বলেন, যদি আমরা শেখ হাসিনার ইতিহাস বলতে চাই, বলে শেষ করা যাবে না বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম নৃশংস গণহত্যা পৃথিবীর বুকে আর কোন স্বৈরাচার করে নাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেভাবে মানুষকে হত্যা করেছে সারা পৃথিবীর বুকে নজির হয়ে থাকবে, আমরা চাই দেশ এবং জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের আপোসিন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সাথে শামীম ওসমান প্রতারণা করেছে, প্রেসিডেন্টের গাড়ি সে থামিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল, শামীম ওসমান মিথ্যা কথা বলেছে, সেই দিন শামীম ওসমান কোনভাবেই এর সাথে জড়িত ছিল নাভ
ঐদিন আমি নিজে জিয়াউর রহমান কে স্মারকলিপি প্রদান করেছিলাম নারায়ণগঞ্জ কে জেলা করার জন্য, তোলারাম কলেজকে সরকারি করার জন্য, সেই সময় শামীম ওসমানের অস্তিত্ব ছিল না, নারায়ণগঞ্জের মানুষের সাথে যেভাবে প্রতারণা করেছে নারায়ণগঞ্জের জনগণ ঠিক ওইভাবেই তাকে এর জবাব দিয়ে দিয়েছি, আমরা নারায়ণগঞ্জের জনগণকে নিয়ে কোন তালবাহানা কোন অগ্নিসংযোগ যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটাতে চায় তাহলে আমরা কোন ছাড় দিব না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল এর) পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড মেহেবুব, কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড নওশাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি কমরেড নুরুলদীন ঢালী, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড সুমন হাওলাদার, নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কমরেড জাকির শিকদার, আহবায়ক নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমরেড গোলজার প্রধান, সদস্য সচিব নারায়ণগঞ্জ জেলা কমরেড শাকিল ও সভাপতি বন্দর থানা ইরফান খন্দকার ।