পদ্মে মাতা সোনাকান্ত, জল থেকে দিগন্ত
Published: 3rd, October 2025 GMT
লাল-সাদা গোলাপি আভার পদ্মে মাতোয়ারা হয়ে আছে স্বচ্ছ জলরাশি। চোখ ধাঁধানো এ গোলাপি আভা মিশেছে দিগন্তে। মৃদুমন্দ বাতার আর কোমল ঢেউয়ে দুলছে চারপাশ, যেন প্রকৃতির বিরামহীম নৃত্যের মোহনীয় ছন্দ।
বলছিলাম পদ্ম ফুলের রাজ্য সিরাজগঞ্জের সোনাকান্ত বিলের কথা। বিলের দৃষ্টিনন্দন পদ্মের চোখ জুড়ানো দৃশ্য কাছে টানছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। এমন অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে বিলে আসছেন দর্শনার্থীরা।
সোনাকান্ত বিলটি উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের আমডাঙ্গা গ্রামে। চোখ জুড়ানো পদ্ম ফুলের এই অপরূপ সৌন্দর্যের গল্প ছড়িয়ে পড়েছে জেলা জুড়ে।
বর্ষায় সোনাকান্ত বিল প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে বিস্তৃত হয়। এই জলাভূমি এখন শুধুই জলের রাজ্য নয়, ফুটে আছে রাশি রাশি গোলাপি আভা ছড়ানো পদ্মের এক বিশাল সাম্রাজ্য। চোখ জুড়ানো পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করে আনন্দিত এলাকাবাসী। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বিল ভরে ওঠে নতুন করে ফোটা ছোট বড় অসংখ্য পদ্ম ফুলে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে এই বিলের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের জেলাগুলোতেও। এই রূপ দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
এলাকাবাসী জানান, প্রতিদিন সোনাকান্ত বিলে পদ্ম ফুলের এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। পদ্ম বিলের অপরূপ এই সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ এখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা। অনেকেই মোবাইল ফোনে ছবি তুলে প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যকে ফ্রেমবন্দি করছেন।
সোনাকান্ত বিলে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী শাহিন মাহমুদ বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সোনাকান্ত বিলের পদ্ম ফুল দেখে শহর থেকে ভাই ও ভাবিকে নিয়ে এসেছি এই অপরূপ দৃশ্য দেখতে। পুরো বিলজুড়ে পদ্ম ফুল দেখে মনটা ভরে গেল। বিলের মাঝে নৌকার ব্যবস্থা থাকলে এই সৌন্দর্য আরো কাছ থেকে উপভোগ করা যেত। নৌকা না থাকায় বিলের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে ভালোই লেগেছে।”
এই সৌন্দর্যের আড়ালে রয়েছে কিছু শৈশবের জীবিকার গল্প। সুমি, আল্পনা ও রহিমার মতো শিশুরা প্রতিদিন সোনাকান্ত বিলে পদ্ম গাছের কাঁটার আঘাত সহ্য করে ফুল তুলে বাজারে বিক্রি করে ২৫০-৩০০ টাকা আয় করছে।
ফুল বিক্রি করা শিশুরা জানায়, প্রতিদিন তারা এই বিল থেকে ফুল তোলে। বিলের মালিকেরা তাদের কিছু বলেন না। এই ফুল বিলে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের কাছে ও বাজারে বিক্রি করে তারা।
সোনাকান্ত বিলের ১ বিঘা জমির মালিক আলতাব শেখ বলেন, “বর্ষা পানিতে এই বিলে পদ্ম ফুল ফুটে। অনেক মানুষ এই ফুল দেখতে আসে এবং মোবাইলে ছবি তুলে নিয়ে যায়। প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ বিলে আসায় এলাকার মানুষের মাধ্যে ভালোই লাগে। তবে, বিলে অনেক সময় পানি থাকে। তাই এলাকার কয়েকজন আমার জমি ক্রয় করতে চেয়েছিলেন। তারা এখানে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করবে। আমি তাদের বলেছি, যতদিন আমি বেচে আছি এই জমি বিক্রি করবো না।”
সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী বলেন, “পদ্ম ফুলের নানা ঔষধি গুণ রয়েছে। একসময় আমাদের দেশে বিলে বিলে অনেক পদ্ম ফুল দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে বিল জলাশয় ভরাটের কারণে এই ফুল এখন বিলুপ্তির পথে। পদ্ম ফুলের বিস্তার ঘটাতে এই ফুলের গুরুত্ব বিবেচনায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো.
এ বছর সোনাকান্ত বিল ছাড়াও জেলার তাড়াশ, বেলকুচি ও রায়গঞ্জ উপজেলার কয়েকটি বিলেও পদ্ম ফুটেছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদ ম ফ ল র স ন দর য প রক ত র এই ফ ল অপর প
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্লোটিলা বহরের ম্যারিনেট গাজা জলসীমা থেকে কত দূরে
দ্য ম্যারিনেট। ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরের নৌযান। নৌযানটি এখনো ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখী যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। আজ শুক্রবার আল-জাজিরার অনলাইনে এই তথ্য জানানো হয়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বলছে, একমাত্র দ্য ম্যারিনেটকেই এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। বহরের বাকি নৌযানগুলোকে তারা ইতিমধ্যে আটক করেছে।
দ্য ম্যারিনেট পোল্যান্ডের পতাকাবাহী নৌযান। তবে নৌযানটির মালিকের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য কোনো নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়নি।
ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়, দেখুন লাইভ ট্র্যাকারেনৌযানটিতে ছয়জন আরোহী আছেন। এই আরোহীদের মধ্যে একজন তুরস্কের অধিকারকর্মী সিনান আকিলতু। তিনি আজ নৌযানটি থেকে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা এখন উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় প্রবেশ করেছি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা দুটি মহৎ পরিণতির যেকোনো একটির দিকে অগ্রসর হচ্ছি।’
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকারের তথ্যের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানায়, আজ ভোরের দিকে ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলছিল ম্যারিনেট। এ সময় সূর্যোদয় হচ্ছিল।
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, ভোর ৪টার দিকে ম্যারিনেটের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৩ দশমিক ৭৮ নট। (ঘণ্টায় প্রায় ৭ কিলোমিটার)। নৌযানটি গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে প্রায় ৪৩ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৮০ কিলোমিটার) দূরে অবস্থান করছিল।
আরও পড়ুনগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজে জলকামান ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী১৩ ঘণ্টা আগেগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি বাদে সব নৌযান আটক করেছে ইসরায়েলইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই ম্যারিনেটকে সতর্ক করে দিয়েছে। তারা বলেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ ও অবরোধ ভাঙার যেকোনো চেষ্টা প্রতিহত করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে নৌযানটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। তবে তা ঠিক করা হয়েছে। নৌযানটি গাজা অভিমুখে চলছে।
ফ্লোটিলা আয়োজকেরা জানিয়েছেন, বহরের ৪২টি নৌযানকে অবৈধভাবে আটকানো হয়েছে। আরোহীদের আটক হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও ম্যারিনেট পিছু হটছে না।
আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইসরায়েল ‘জলদস্যুর কাজ’ করেছে: এরদোয়ান১৪ ঘণ্টা আগেগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা বলেছে, ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়, ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।
ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত আছে বলে জানিয়েছে ফ্লোটিলা আয়োজকেরা।
আরও পড়ুনসুমুদ ফ্লোটিলার আটক অধিকারকর্মীরা ২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলে পৌঁছতে পারেন২০ ঘণ্টা আগে