কাঁচা মরিচের ঝালে পুড়ছে বাজার, সবজিতেও স্বস্তি নেই
Published: 3rd, October 2025 GMT
রাজধানীর সবজির বাজার গরম হয়ে উঠেছে। কাঁচা মরিচের ঝালে যেন পুড়ছে বাজার। টানা বৃষ্টির কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সবজির দামে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে কাঁচামরিচে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৬০ টাকা দরে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও রায়েরবাগ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ধরনের সবজির দামই বেড়েছে। বিশেষ করে, আগাম শীতকালীন সবজির বাজারে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা।
কোন সবজির দাম কত
এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি শিম ১৫০ থেকে বেড়ে ২০০ টাকা হয়েছে। ২০ টাকা বেড়ে মুলার দাম হয়েছে ৮০ টাকা। বর্তমানে টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, গাজর ১৩০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা; পটল, চিচিঙ্গা ও কাঁকরোল ৮০ টাকা, বরবটি ও করলা ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ১০০ টাকা ও গোল বেগুন ১৪০ টাকা, উচ্চা করলা ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকা, যা আগে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। লাউ ৮০ থেকে ১২০ টাকা এবং জালি লাউ ৮০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
মরিচের দামে লাগাম নেই
এক সপ্তাহ আগেও কাঁচা মরিচের দাম ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। এখন তা ২৮০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রায়েরবাগ বাজারের বিক্রেতা রহমান আলী জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে মরিচের তীব্র সংকট চলছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিতে মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া, ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি বন্ধ আছে। এখন এক পাল্লা (পাঁচ কেজি) মরিচ কিনতেই ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা লাগে। এক সপ্তাহ আগেও তা ছিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।
আগাম শীতকালীন সবজির দামেও ঊর্ধ্বগতি
শীতের আগাম সবজি, যেমন: শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ইত্যাদির দাম দ্রুত গতিতে বাড়ছে। শিমের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, এখন প্রতি কেজি শিম ২৪০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, যা আগে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
শাকের দামও চড়া
প্রতি আঁটি পুঁইশাক ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কুমড়া শাক ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লালশাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কলমি শাক ২০ টাকা,পালং শাক ৪০ টাকা; পাট শাক, কচু শাক ও ডাঁটা শাক ৩০ টাকা এবং মুলা শাক ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
রায়েরবাগ বাজারের ব্যবসায়ী সবুজ জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে যে শাকের বস্তা ৩ হাজার টাকায় কিনেছি, এখন ৫ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে শাক নষ্ট হয়েছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম চড়ছে। আগে গাড়ি ভর্তি করে আনতাম, এখন অল্প আনতে হচ্ছে। অনেক ক্রেতা দাম শুনেই ফিরে যাচ্ছেন।
সবজির এমন চড়া দামে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। অনেকেই বাজারে এসে চাহিদামতো মতো সবজি কিনতে পারছেন না।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে সরবরাহ বাড়বে এবং দামও কমবে।
ঢাকা/এএএম/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সবজ র দ ম ১০০ ট ক ৮০ ট ক ৮০ থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের ৩ প্যাকেজ ঘোষণা
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। সর্বনিম্ন হজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। যা সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজে অন্তর্ভূক্ত।
গতবারের চেয়ে এবার বিমান ভাড়া কমিয়ে সবগুলো হজ প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবছর দুটি হজ পাকেজ থাকলেও এবার সরকারি ব্যবস্থাপনার মতো বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়ও তিনটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
শাবিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী বহিষ্কার
সরকারিভাবে খরচ কমিয়ে হজের তিন প্যাকেজ ঘোষণা
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নয়াপল্টনে একটি হোটেলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার এসব হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
এ সময় সভাপতি সৈয়দ গোলাম সারওয়ারও উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদ আহমেদ জানান, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য তিনটি হজ প্যাকেজ করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য খাওয়া ও কোরবানিসহ বিশেষ হজ প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সাধারণ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে ব্যয় হবে সর্বমোট ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের খাবার খরচ প্যাকেজের বাইরে থাকলেও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় উন্নত সার্ভিসের জন্য খাবারের মূল্য প্রতিটি প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত বলেও জানান তিনি।
প্রতি সৌদি রিয়াল ৩২ টাকা ৮৫ পয়সা ধরে প্যাকেজের খরচ হিসাব করা হয়েছে জানিয়ে ফরিদ আহমেদ জানান, পরবর্তী সময়ে এ রেটে কোন পরিবর্তন আসলে তা প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
হজ এজেন্সিগুলোর জন্য সাধারণ হজ প্যাকেজ ও সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে বিশেষ প্যাকেজ থেকে কম-বেশি করে তারা নিজস্ব প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলে জানিয়েছেন হাব মহাসচিব।
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্যাকেজের সব টাকা পরিশোধ করতে হবে জানিয়ে ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, “বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রত্যেক হজযাত্রী কমপক্ষে সাড়ে ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধিত হতে পারবেন। আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত নিবন্ধন চলবে। হজ প্যাকেজের বাকি অর্থ আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই নিজ নিজ এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে জমা করে বা এজেন্সির অফিসে জমা দিয়ে মানি রিসিট গ্রহণ ও সংরক্ষণ করবেন। কোনোক্রমেই মধ্যস্বত্বভোগীদের কছে কোনো প্রকার লেনদেন করবেন না।”
কোনো এয়ারলাইন্স এ বছর ডেডিকেটেড ফ্লাইট ছাড়া শিডিউল ফ্লাইটে কোনো হজযাত্রী বহন করতে পারবে না জানিয়ে মহাসচিব বলেন, “প্যাকেজ ঘোষণার পর সৌদি সরকার কোনো খাতে খরচ বাড়ালে তা প্যাকেজ মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং হজযাত্রীকে এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।”
হাব মহাসচিব বলেন, “গত বছর হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা। এবার ১২ হাজার ৯৯০ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ টাকা। বিমান ভাড়া আরও কমানো হলো প্যাকেজের মূল্য কমানো হবে।”
তিনি বলেন, “এর আগে গত দুই বছর অন্যায়ভাবে ২ লাখ টাকা করে হজযাত্রীদের কাছ থেকে বিমান ভাড়া আদায় করা হয়েছিল। আমরা মনে করি, যেটি হজযাত্রীদের প্রতি জুলুম ছিল, অন্যায় ছিল। হজযাত্রীদের কাছ থেকে এ টাকা লুট করা হয়েছিল বলে আমরা মনে করি। কারণ তখন এক ডলারের দাম ছিল ১০০ টাকা। এখন এক ডলারের বিপরীতে টাকা ১২২ টাকা ৫০ পয়সা, কিন্তু এবার বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৩০ টাকা। হজযাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত প্রায় এক লাখ টাকা আদায় করা হয়েছিল।”
বিশেষ হজ প্যাকেজ : হাব মহাসচিব জানান, বিশেষ প্যাকেজে হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব ৭০০ মিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকায় আবাসন। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান ও মিনা-আরাফায় 'ডি' ক্যাটিগরি সার্ভিসসহ মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ।
এছাড়া, মক্কার হোটেল বা বাড়ি থেকে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত; এটাচড্ বাথ সহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৫ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে এ প্যাকেজে।
সাধারণ হজ প্যাকেজ: হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব ৩ কিলোমিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকার বাইরে আবাসন। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান ও মিনা-আরাফায় ‘ডি’ ক্যাটিগরি সার্ভিসসহ মোয়াল্লেমের মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হবে।
মক্কার হোটেল বা বাড়ি থেকে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত। অ্যাটাচ বাথসহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে এ প্যাকেজে।
সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ: এ প্যাকেজে হারাম শরীফের বহিঃচত্ত্বর থেকে হোটেলের দূরত্ব হবে ৬/৭ কিলোমিটারের মধ্যে। মদিনায় মারকাজিয়া (সেন্ট্রাল এরিয়া) এলাকার বাইরে আবাসন হবে। মিনার জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান ও মিনা-আরাফায় ‘ডি’ ক্যাটিগরি সার্ভিসসহ মোয়াল্লেম থেকে খাবার সরবরাহ করা হবে এ প্যাকেজে।
এছাড়া, মক্কার হোটেল বা বাড়ি হতে বাসযোগে মিনার তাঁবুতে এবং মিনা-আরাফাহ-মুজদালিফা-মিনা বাস/ট্রেনযোগে যাতায়াত; অ্যাটাচ বাথসহ মক্কা ও মদিনায় হোটেলের প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৬ জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে সাশ্রয়ী প্যাকেজে।
গতবছর খাবার খরচ যুক্ত করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকরা।
এবার খরচ কমিয়ে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন সরকারি ব্যবস্থাপনার ঘোষণা করেন।
প্যাকেজ–১ এর মাধ্যমে হজ পালনে খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা। এছাড়া, হজ প্যাকেজ-২ এ ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮১ টাকা ও হজ প্যাকেজ-৩ এ ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
‘বেসরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ’ শিরোনামে একটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার ১৮৫ টাকা। সরকার অনুমোদিত এ প্যাকেজ নিয়ে এজেন্সিগুলো অতিরিক্ত দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে বলেও জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা