নিজের বানানো রসগোল্লা কাঁধে নিয়ে বিক্রি করেন ৭০ বছর বয়সী অধীর
Published: 3rd, October 2025 GMT
শরতের তপ্ত দুপুর। লুঙ্গি আর ফুলহাতা শার্ট পরে গ্রামের মেঠো পথে হাঁটছেন এক বৃদ্ধ। ক্লান্ত শরীর, বাঁ কাঁধে কাপড়ের থলে, ডান হাতে ভারী প্লাস্টিকের পাত্র। কিছুদূর এগোতেই তিনি ডাক দিতে শুরু করলেন, ‘মিষ্টি, মিষ্টি, মিষ্টি।’ ডাক শুনে পাশের ঘরবাড়ি থেকে ছুটে এসে মিষ্টি কিনতে শুরু করেন নারী ও শিশুরা।
সম্প্রতি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সুখছড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এই দৃশ্য। যিনি মিষ্টি তৈরি করছিলেন তাঁর নাম অধীর দাশ। বয়স প্রায় ৭০ বছর। জানালেন, সকাল হতেই তিনি ১৫ কেজি রসগোল্লা নিয়ে বের হন। শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিক্রি করেন। প্রতিটি রসগোল্লার দাম নেন মাত্র ১০ টাকা।
অধীর দাশের বাড়িও সুখছড়ি গ্রামে। ছোট্ট টিনের ছাউনির ঘরে স্ত্রী ঝিনু দাশকে নিয়ে থাকেন। স্ত্রীকে নিয়েই প্রতিদিন মাটির চুলায় এসব রসগোল্লা বানান। তবে আগাম ‘অর্ডার’ পেলে রসমালাইও বানান তাঁরা। ১৫ কেজি রসগোল্লা বানাতে ২৫ কেজি দুধ থেকে প্রথমে ছানা তৈরি করেন। এরপর সেই ছানায় চিনি ও ময়দা মিশিয়ে বানান রসগোল্লা। এই রসগোল্লার সুনাম এখন লোহাগাড়া উপজেলাজুড়ে। প্রতিদিনই তাঁর বাড়িতে মিষ্টি নিতে আসেন অনেকে।
বর্তমানে দুধ ও চিনির দাম বেশি। এ ছাড়া বয়সও বেশি হয়েছে। চোখেও কম দেখি, চিকিৎসক অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন। শক্তি কমে গেছে। তাই রসগোল্লা বানানোর পরিমাণও কমিয়ে দিতে হয়েছে। এভাবে কত দিন চালিয়ে যেতে পারব জানি না। অধীর দাশঅধীর দাশ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামে হাঁটার সময় কেউ তাঁর কাছ থেকে একটি বা দুটি করে, কেউ আবার কেজি দরে রসগোল্লা কিনে নেন। প্রতি কেজি তিনি বিক্রি করেন ৩৫০ টাকায়। সারা দিন বিক্রি করে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো লাভ থাকে তাঁর। এই আয় দিয়ে অনটনে সংসার চলে। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। এর মধ্যে এক ছেলে ও মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বড় ছেলে মিশক দাশ একটি ওষুধের দোকানে চাকরি করেন। আর ছোট ছেলে মিশু দাশ গত বছর মাধ্যমিক পাস করেছে। আর্থিক টানাপোড়েনে কলেজে ভর্তি করাতে পারেননি। তিনি বর্তমানে একটু সেলুনে কাজ শিখছেন।
নিজের হাতেই মাটির চুলায় রসগোল্লা বানাচ্ছেন অধীর দাশ। সম্প্রতি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সুখছড়ি গ্রামে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রসগ ল ল
এছাড়াও পড়ুন:
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নারী নিহত
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের মাদারীপুরের রাজৈরে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের খাদে পড়ে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজৈর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।
নিহত নিলুফা ইয়াসমিন নিলা (৩০) বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রুনসী গ্রামের আবুল বাসারের স্ত্রী।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ডাম্পট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত
অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, মা-মেয়ে নিহত
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল চন্দ্রা পরিবহনের বাসটি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর বাসস্ট্যান্ড পার হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি সড়কের পাশের খাদে পড়ে যায়। পরে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিলার মরদেহ উদ্ধার করে। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাদারীপুরের মস্তফাপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বাস খাদে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/বেলাল/মাসুদ