শরতের তপ্ত দুপুর। লুঙ্গি আর ফুলহাতা শার্ট পরে গ্রামের মেঠো পথে হাঁটছেন এক বৃদ্ধ। ক্লান্ত শরীর, বাঁ কাঁধে কাপড়ের থলে, ডান হাতে ভারী প্লাস্টিকের পাত্র। কিছুদূর এগোতেই তিনি ডাক দিতে শুরু করলেন, ‘মিষ্টি, মিষ্টি, মিষ্টি।’ ডাক শুনে পাশের ঘরবাড়ি থেকে ছুটে এসে মিষ্টি কিনতে শুরু করেন নারী ও শিশুরা।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সুখছড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় এই দৃশ্য। যিনি মিষ্টি তৈরি করছিলেন তাঁর নাম অধীর দাশ। বয়স প্রায় ৭০ বছর। জানালেন, সকাল হতেই তিনি ১৫ কেজি রসগোল্লা নিয়ে বের হন। শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রামে গ্রামে ঘুরে বিক্রি করেন। প্রতিটি রসগোল্লার দাম নেন মাত্র ১০ টাকা।

অধীর দাশের বাড়িও সুখছড়ি গ্রামে। ছোট্ট টিনের ছাউনির ঘরে স্ত্রী ঝিনু দাশকে নিয়ে থাকেন। স্ত্রীকে নিয়েই প্রতিদিন মাটির চুলায় এসব রসগোল্লা বানান। তবে আগাম ‘অর্ডার’ পেলে  রসমালাইও বানান তাঁরা। ১৫ কেজি রসগোল্লা বানাতে ২৫ কেজি দুধ থেকে প্রথমে ছানা তৈরি করেন। এরপর সেই ছানায় চিনি ও ময়দা মিশিয়ে বানান রসগোল্লা। এই রসগোল্লার সুনাম এখন লোহাগাড়া উপজেলাজুড়ে। প্রতিদিনই তাঁর বাড়িতে মিষ্টি নিতে আসেন অনেকে।

বর্তমানে দুধ ও চিনির দাম বেশি। এ ছাড়া বয়সও বেশি হয়েছে।  চোখেও কম দেখি, চিকিৎসক অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন। শক্তি কমে গেছে। তাই রসগোল্লা বানানোর পরিমাণও কমিয়ে দিতে হয়েছে। এভাবে কত দিন চালিয়ে যেতে পারব জানি না। অধীর দাশ

অধীর দাশ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামে হাঁটার সময় কেউ তাঁর কাছ থেকে একটি বা দুটি করে, কেউ আবার  কেজি দরে রসগোল্লা কিনে নেন। প্রতি কেজি তিনি বিক্রি করেন ৩৫০ টাকায়। সারা দিন বিক্রি করে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো লাভ থাকে তাঁর। এই আয় দিয়ে অনটনে সংসার চলে। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। এর মধ্যে এক ছেলে ও মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বড় ছেলে মিশক দাশ একটি ওষুধের দোকানে চাকরি করেন। আর ছোট ছেলে মিশু দাশ গত বছর মাধ্যমিক পাস করেছে। আর্থিক টানাপোড়েনে কলেজে ভর্তি করাতে পারেননি। তিনি বর্তমানে একটু সেলুনে কাজ শিখছেন।

নিজের হাতেই মাটির চুলায় রসগোল্লা বানাচ্ছেন অধীর দাশ। সম্প্রতি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সুখছড়ি গ্রামে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রসগ ল ল

এছাড়াও পড়ুন:

এটাই ‘শক্তিশালী’ স্কোয়াড, সুযোগ দেখছেন জামাল

২০১৩ সালে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯২ ম্যাচ খেলেছেন জামাল ভূঁইয়া। এর মধ্যে ভারতের বিপক্ষে খেলেছেন ৬ ম্যাচ। কিন্তু এই ৬ ম্যাচের কোনোটিতেই জেতেনি বাংলাদেশ। এবার অন্তত সেই গেরো খুলতে চাইছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

জামালের চোখে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী স্কোয়াড। তাই এবার ভারতকে হারানোর সুযোগও দেখছেন তিনি, ‘আমরা যে অবস্থায় আছি এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী স্কোয়াড। তাই অবশ্যই আমাদের একটা বড় সুযোগ আছে।’

২০২৫ সালে সাত ম্যাচ খেলে শুধু ভুটানের সঙ্গে জিতেছে বাংলাদেশ। আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে হারিয়ে বছরটা অন্তত জয় দিয়ে শেষ করার প্রত্যাশা জামালের, ‘এটা অনেক আবেগের ম্যাচ, উত্তেজনার ম্যাচ। এই ম্যাচের পর জাতীয় দলের জন্য অনেক লম্বা বিরতি আছে। বছরটা যদি জয় দিয়ে শেষ করতে পারি, তা শুধু আমাদের জন্য নয়, সমর্থক ও আপনাদের জন্যও ইতিবাচক হবে।’

জয় দিয়ে বছর শেষ করতে চান জামাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ