ইসরায়েল ‘জলদস্যুর কাজ’ করেছে: এরদোয়ান
Published: 2nd, October 2025 GMT
ইসরায়েলের গাজা অভিমুখী ত্রাণবাহী নৌযান আটককে ‘জলদস্যুর কাজ’ আখ্যায়িত করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। নিজের দল একে পার্টির এক সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক জলসীমায় এ ধরনের পদক্ষেপ প্রমাণ করে, এই গণহত্যাকারীরা গাজায় নিজেদের অপরাধ ঢাকতে পাগল হয়ে গেছে।
এরদোয়ান আরও বলেন, ‘গণহত্যাকারী (ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন) নেতানিয়াহু সরকার শান্তির ন্যূনতম সুযোগ আসুক, সেটাও সহ্য করতে পারে না। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আবারও বিশ্ববাসীর সামনে গাজায় নির্মমতা ও ইসরায়েলের খুনি চেহারা তুলে ধরেছে। আমরা আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের ছেড়ে যাব না। যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত এবং শান্তি ফিরিয়ে আনতে আমরা আমাদের সব ক্ষমতা দিয়ে কাজ করে যাব।’
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইসরায়েলের নৌ অবরোধ ভেঙে সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার একটি বৈশ্বিক প্রচেষ্টা। এই নৌবহরে ৪০টির বেশি বেসামরিক নৌযান অংশ নেয়। এ বহরে প্রায় ৪৪টি দেশের ৫০০ মানুষ যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আইনজীবী, অধিকারকর্মী, চিকিৎসক ও সাংবাদিক আছেন।
গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে ছেড়ে আসা এই নৌবহর বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে গাজার কাছাকাছি এলাকায় পৌঁছায়। ২০০৭ সাল থেকে ভূমধ্যসাগরের ওই জলসীমা অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। গতকাল মাধ্যরাতে নৌবহরের জাহাজে জাহাজে উঠে ত্রাণ নিয়ে গাজার উদ্দেশে যাত্রা করা অধিকারকর্মীদের আটক করে নিজেদের দেশের বন্দরে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি সেনারা।
আরও পড়ুনগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি বাদে সব নৌযান আটক করেছে ইসরায়েল৩ ঘণ্টা আগেইতিমধ্যে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি বাদে বাকি সব জাহাজ আটক করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ করা বা আইনসম্মত নৌ অবরোধ লঙ্ঘন করার চেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুনসুমুদ ফ্লোটিলার ২৪ জাহাজ এগিয়ে যাচ্ছে, একটি গাজার জলসীমায়: দেখুন লাইভ ট্র্যাকারে৮ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করতে ৫০ খেলোয়াড়ের চিঠি
খেলাধুলায় ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার দাবি দিন দিন আরও জোরালো হচ্ছে।
চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এ দাবি তুলেছিলেন। তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম হাজিওসমানোউলুও ফিফা, উয়েফা ও জাতীয় ফুটবল সংস্থাগুলোর প্রধানদের কাছে চিঠি লিখে ইসরায়েলকে ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এবার নতুন করে আওয়াজ তুলেছেন ৫০ জন সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়। তাঁরা সবাই মিলে সই করা একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফায়। দাবি একটাই—উয়েফার প্রতিযোগিতা থেকে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করা হোক।
এ তালিকায় আছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার মঈন আলী, ব্রিটিশ বক্সার জ্যাক চেল্লি, মোনাকোর ফরাসি মিডফিল্ডার পল পগবা, ব্রিটিশ ঘোড়দৌড়ে প্রথম হিজাবধারী জকি খাদিজা মেল্লা, ক্রিস্টাল প্যালেসের মালিয়ান মিডফিল্ডার চিয়েক ডৌকুরে, চেলসির সাবেক মরোক্কান উইঙ্গার হাকিম জিয়েশ, অ্যাস্টন ভিলার ডাচ উইঙ্গার আনোয়ার এল ঘাজি এবং লেস্টার সিটির সাবেক কোচ নাইজেল পিয়ার্সন।
আনোয়ারের গল্পটা আলাদা করে বলার মতো। ২০২৩ সালে তিনি যোগ দিয়েছিলেন জার্মান ক্লাব মেইঞ্জে। কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করায় নভেম্বরে তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ক্লাবটি। পরে জার্মান আদালত রায় দেন, মেইঞ্জ অন্যায় করেছে আনোয়ারের সঙ্গে। বর্তমানে তিনি খেলছেন কাতারের আল সাইলিয়ায়।
উয়েফাকে পাঠানো চিঠিতে ফিলিস্তিনের প্রয়াত ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবেইদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। ‘ফিলিস্তিনি পেলে’ নামে খ্যাত সুলেইমান গত আগস্টে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। চিঠিতে লেখা হয়, ‘বেঁচে থাকতে খেলাধুলার মাধ্যমে আশার সঞ্চার করেছেন তিনি। মৃত্যুর মাধ্যমে তিনি মনে করিয়ে দিলেন, কেন খেলাধুলার সংস্থাগুলোর এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’
আরও পড়ুনআলভারেজদের কাছে রিয়াল মাদ্রিদের বিধ্বস্ত হওয়ার ৪ কারণ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫চিঠিতে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনও যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর উদ্দেশ্য হলো গাজার ফিলিস্তিনিদের আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস করার গণহত্যামূলক অভিপ্রায় বাস্তবায়ন করা। ইসরায়েল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
অ্যাথলেটদের বক্তব্য, খেলাধুলার সংস্থাগুলোর দায়িত্ব হলো এমন দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, যাদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিশ্চিত করেছে যে তারা গণহত্যা চালাচ্ছে।
চিঠি পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করেছে ব্রিটেনভিত্তিক সংগঠন নুজুম স্পোর্টস। ‘অ্যাথলেটস ফর পিস’ ব্যানারে উয়েফায় জমা দেওয়া এ চিঠিতে বলা হয়েছে, মুসলিম, অমুসলিম কিংবা ধর্মবিশ্বাসহীন—ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে আগ্রহী নানা খেলোয়াড় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার মঈন আলী