আমিনুলের সমন্বিত ‘কৃষি ক্লিনিক’
Published: 3rd, October 2025 GMT
লাউগাছের পাতা হলদে হয়েছে, গোড়ায় ধরেছে পচন। পাতা কুঁচকে গেছে শিমগাছের, পুকুরের মাছ মরে যাচ্ছে। মুখ দিয়ে লালা ঝরছে গরুর। এমন নানা সমস্যা নিয়ে আমিনুল ইসলামের কাছে আসেন কৃষক ও খামারিরা। সব শুনে তিনি পরামর্শ দেন। কখনো কৃষকের সঙ্গে ছুটে যান খেতখামারে। তাঁর পরামর্শ ও সেবায় উপকৃত হচ্ছেন সবাই।
৪৯ বছর বয়সী আমিনুল ইসলামের বাড়ি দিনাজপুর সদর উপজেলার সুন্দরবন গ্রামে। সেই বাড়িতেই তিনি গড়ে তুলেছেন ‘সমন্বিত কৃষি ক্লিনিক’। সেখানে শুধু কৃষিসেবাই নয়, সাধারণ জৈব সার, কেঁচো সার, ট্রাইকো কম্পোস্ট, অণুজীব সার প্রস্তুত করেছেন। এসব সার নিজ জমিতে ব্যবহারের পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের কাছে বিক্রিও করছেন। যা থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি। ২৬ বছর ধরে সেবা দিয়ে কৃষক-খামারিদের ভরসা এবং আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে আমিনুলের কৃষি ক্লিনিক।
সেই সেবা দিতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অর্ধশতাধিক প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক পরিহার করে জৈব বালাইনাশক ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন।
সম্প্রতি এক সকালে আমিনুলের বাড়িতে ঢুকতেই প্রাচীরে সাঁটানো ‘সমন্বিত কৃষি ক্লিনিক’ সাইনবোর্ডটি চোখে পড়ে। বাড়ির একটি কক্ষে থরে থরে সাজানো দেড় সহস্রাধিক কৃষি, মৎস্য, হাঁস-মুরগি, গবাদিপশু পালন ও চিকিৎসাবিষয়ক বই ও ম্যাগাজিন। এ ছাড়া মাইক্রোস্কোপ, বীজ শোধনযন্ত্র, মাটি-পানি পরীক্ষার সরঞ্জাম, পশুচিকিৎসার যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন রকম ওষুধ, জৈব বালাইনাশক সরঞ্জামে ঠাসা কক্ষটি। আঙিনায় গবাদিপশু চিকিৎসার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যেভাবে শুরু আমিনুলেরশৈশবে বাবার কাছেই কৃষিতে হাতেখড়ি আমিনুলের। পড়ালেখা করেছেন নবম শ্রেণি পর্যন্ত। ১৯৯৫ সালে বাড়ির পাশে একটি রাসায়নিক সার ও বালাইনাশকের দোকানে কাজ নেন। সে সময় দোকানে আসা কৃষক-খামারিদের কাছে ফসল ও পশুর সমস্যার কথা শুনতেন। কীটনাশক কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছে জেনে পরে কৃষকদের পরামর্শ দিতেন। ধীরে ধীরে এসব বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন আমিনুল। ১৯৯৯ সালের কর্তৃপক্ষ দোকান বন্ধ করলে কর্মহীন হয়ে পড়েন তিনি।
একই বছরেই ঠাকুরগাঁও যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যোগাযোগ করেন আমিনুল। প্রাণী, মৎস্য, ফসল উৎপাদন ও প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে তিন মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে এলাকায় শুরু করেন পশুচিকিৎসা। এবার হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। কৃষক ও খামারিদের ডাকে ব্যস্ততা বাড়ে তাঁর। প্রতিদিন নিয়ম করে মোটরসাইকেলে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সরঞ্জাম নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। সরবরাহ করা ওষুধের দাম নেন। খুশি হয়ে অনেকে পারিশ্রমিকও দেন আমিনুলকে।
আমিনুল এখন ‘দক্ষ কৃষি ডাক্তার’স্থানীয় প্রাণিসম্পদ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সঙ্গে ধীরে ধীরে আমিনুল ইসলামের যোগাযোগ তৈরি হয়। ২০১৪ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সমন্বিত কৃষি ক্লিনিক। এতে কৃষক-খামারিদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আরও নিবিড় হয়ে ওঠে। বর্তমানে গ্রামে গিয়ে পশুচিকিৎসা পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি পরিচালনা করছেন কৃষির রকমারি বিতান অ্যান্ড সিড ফার্ম, লাইভস্টক ফিশারিজ মেডিসিন শপ। উৎপাদন করছেন জৈব বালাইনাশক ও জৈব সার।
আমিনুল সঙ্গে রাখেন পিএইচ মিটার, অক্সিজেন মিটার, অ্যামোনিয়া পরীক্ষার কিট। ফলে পুকুরের পানি দেখলেই বলতে পারেন অ্যামোনিয়া গ্যাসের মাত্রা বেড়েছে কিংবা অক্সিজেন-স্বল্পতার কথা। এ ছাড়া মোটরসাইকেলে বিভিন্ন আকৃতির চারটি ব্যাগে সঙ্গে রাখেন সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, ওষুধসামগ্রী, পাটের দড়ি ও চিটাগুড়। আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘পশুর যত্নে মানুষ এখনো সচেতন না। এ জন্য ব্যাগে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের পাশাপাশি চিটাগুড়সহ নানা জিনিসপত্র সঙ্গে রাখি। অর্থ আয় নয়, সেবাটাই আমার কাছে মুখ্য।’
২০১৭ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লান্ট প্যাথলোজি বিভাগের প্লান্ট ডিজিজ ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকে বিভিন্ন বিষয়ে মোট ২১ দিন প্রশিক্ষণ নেন। সেখান থেকে সনদ ও স্বীকৃতিপত্রও দেওয়া হয় তাঁকে। বিভাগের তৎকালীন অধ্যাপক এম বাহাদুর মিয়া ও তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মেদ আলী হোসেন স্বাক্ষরিত স্বীকৃতিপত্রে বলা হয়, প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এলাকার কৃষি সমস্যার বাস্তবমুখী সমাধানে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ‘দক্ষ কৃষি ডাক্তার’ হিসেবে কাজ করে কৃষি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
এ ছাড়া জেলায় বিভিন্ন সময়ে আয়োজিত কৃষি মেলায় সফল উদ্যোক্তার পুরস্কারও পেয়েছেন। বর্তমানে প্রতিদিন ৮-১০ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন তাঁর প্রতিষ্ঠানে।
জৈব ও কেঁচো সারে বাড়তি আয়গোবর, গোমূত্র, চিটাগুড়, বেসন, বিশুদ্ধ মাটি দিয়ে আমিনুল বাড়িতেই তৈরি করেন সলিড অণুজীব সার। এ ছাড়া নিম, মেহগনি, বেল, আতা, ধুতরা, ভেন্নাসহ মোট ১০টি গাছের পাতা পেঁচিয়ে আমিনুল তৈরি করছেন ‘দশপাতা রস’। এই সার ও রস গাছ-ফসলের পুষ্টিজনিত সমস্যা দূর করে। আমিনুল নিজে তা ব্যবহার করছেন এবং প্রায় অর্ধশত কৃষককে এগুলো প্রস্তুত করতে উদ্বুদ্ধ করছেন।
আমিনুলের বাড়ি-সংলগ্ন চার হাজার স্কয়ার ফুট জায়গায় উৎপাদন করছেন কেঁচো সার। পাশেই গোবর, কচুরিপানা, শুঁটকি মাছের গুঁড়া, হাড়ের গুঁড়া, সবজির উচ্ছিষ্টের মিশ্রণে উৎপাদন হচ্ছে ট্রাইকো কম্পোস্ট। প্রতি কেজি ট্রাইকো কম্পোস্ট ১২ টাকা, ভার্মি কম্পোস্ট ১৫ টাকা ও প্রতি ড্রাম অণুজীব সার বিক্রি করছেন ৯০০-১০০০ টাকায়।
আমিনুলের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভুষিরবন্দর এলাকায় সার উৎপাদন করছেন নাঈম ইসলাম (৩৫)। আলাপকালে নাঈম বলেন, তিন বছর হলো এসব জৈব বালাইনাশক ও কেঁচো সার বিক্রি করছেন তিনি। এরই মধ্যে দিনাজপুর ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প থেকে নিবন্ধনও পেয়েছেন। খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে তাঁর গড়ে ৪০ হাজার টাকা আয় থাকছে।
বাড়িজুড়ে বাহারি ওষধি গাছবাড়ির প্রধান ফটকের বাঁ পাশে বাগানে ঘৃতকাঞ্চন, লজ্জাবতী, কারিপাতা, তুলসী, নীলকণ্ঠ এবং ডান পাশে ঘরের দেয়ালে সঙ্গে অ্যালোভেরা, চুইঝাল, সর্পগন্ধাসহ নানা ওষধি গাছ দেখা গেল। বারান্দার পাশে বড় হচ্ছে করমচা, নিম, বহেড়া, হরীতকী, বাসক পাতা ও ঈশ্বরমূল। বাড়ির আঙিনাসহ চারপাশে ৭৫ রকমের ওষধি গাছ আছে বলে জানালেন আমিনুল। ছোট ছোট সাইনবোর্ডে প্রতিটি গাছের নামও লিখে রেখেছেন।
সংগৃহীত বিভিন্ন বই-পুস্তক ঘেঁটে এসব ওষধি গাছের গুণাগুণ রপ্ত করেছেন আমিনুল। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে অনেকে পাগল-ছাগল বলত। আমার সার ও বালাইনাশক কেউ কিনত না। এখন অনেকেই আগাম অর্ডার দিয়ে যাচ্ছেন। ফসল উৎপাদনে জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। নয়তো রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের কারণে ভবিষ্যতে ভয়ংকর স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়বে মানুষ।’
আমিনুলের বিষয়ে দিনাজপুর সদর উপজেলার (সদ্য বিদায়ী) কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি (আমিনুল) নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের একজন সফল চাষি ও একজন উদ্যোক্তা। বেশ কিছু জৈব বালাইনাশকও উদ্ভাবন করেছেন, যা ফসলের জন্য উপকারী। আশপাশের অনেক কৃষককে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সচেতন করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া এলাকায় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির চিকিৎসাসেবা দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম ন ল ইসল ম কম প স ট আম ন ল র ন আম ন ল ব যবহ র সমন ব ত কর ছ ন সমস য করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে ‘আমা দাবলাম’ জয় করলেন তৌকির
ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে হিমালয়ের অন্যতম পর্বত ‘আমা দাবলাম’ জয় করছেন পাবনার সন্তান আহসানুজ্জামান তৌকির (২৭)। গত ৪ নভেম্বর নেপাল সময় দুপর ১টার দিকে ৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার এই পর্বতের চূড়া স্পর্শ করেন তিনি।
পর্বতারোহণ বিষয়ক অর্গানাইজেশন রোপ ফোরের পৃষ্ঠপোষকতা ও তত্ত্বাবধানে এই অভিযানটি পরিচালিত হয়। তার এই অভিযানে সঙ্গী হিসাবে ছিলেন রোপ ফোরের আরেকজন তরুণ পর্বতারোহী আবরারুল আমিন অর্ণব।
আরো পড়ুন:
রঙ হারাচ্ছে অদম্য মেধাবীর ভবিষ্যতের স্বপ্ন
উপজেলায় এইচএসসিতে একমাত্র জিপিএ-৫ পেলেন অনুরাগ
আমা দাবলাম খাড়া বরফ দেয়াল, গভীর ক্রেভাস, ঝুলন্ত বরফ খণ্ড এবং কঠিন আবহাওয়ার জন্য পৃথিবীর অন্যতম চ্যালেঞ্জিং পর্বত হিসেবে পরিচিত। তৌকিরের এই অভিযানটি ছিল বাংলাদেশি পর্বতারোহণ ইতিহাসে এক গৌরবময় সংযোজন।
চূড়ায় পৌঁছার প্রতিক্রিয়ায় তৌকির বলেন, “আমা দাবলাম আমার কাছে শুধু একটা পর্বত নয়, এটা ছিল নিজের সীমা পরীক্ষা করার যাত্রা। পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর এই পর্বতের চূড়ায় দাঁড়িয়ে যখন লাল-সবুজ পতাকাটা তুলে ধরলাম, মনে হলো এটি শুধু আমার সফলতা নয়, এটি বাংলাদেশের সব তরুণের স্বপ্নের স্পন্দন।”
তিনি বলেন, “আমার এই অভিযানটা ছিল পৃথিবীর সব বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের জন্য, যাদের জীবনটা কেটে যায় অন্যের ওপর ডিপেন্ড (নির্ভর) করে এবং চার দেয়ালের আলোতে পৃথিবী দেখে। আমি বিশ্বাস করি, পৃথিবীতে আসা সব প্রাণী শক্তিশালী। আসুন, ডিপেন্ডেবল এই মানুষগুলোর ওপর আরো বিনয়ী হই, ভালোবাসা এবং সাহায্যে তৈরি করি তাদের নতুন পৃথিবী।”
যেভাবে ‘আমা দাবলাম’ জয় করলেন তৌকির
গত ১২ অক্টোবর দুঃসাহসিক এই অভিযানের জন্য দেশ ছাড়েন তৌকির। এরপর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে শুরু হয় তার মূল অভিযান। হিমালয়ের পাহাড়ি বন্ধুর পথ ধরে ট্রেকিং করে তিনি বেস ক্যাম্পে পৌঁছান ২২ অক্টোবর। বেস ক্যাম্পে পৌঁছে তৌকির শুরু করেন উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ায় কৌশল। যা এক্লিমাটাইজ রোটেশন নামে পরিচিত।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের ২৯ অক্টোবর সামিটের কথা থাকলেও ২৭ অক্টোবর থেকে হিমালয়ের শুরু হয় তীব্র তুষার পাত। এই তুষার পাতের মধ্যেই তৌকির অবস্থান করেন আমা দাবলাম ক্যাম্প-১ এ। যার উচ্চতা প্রায় ১৯ হাজার ফিট। ২৮ অক্টোবর আবহাওয়া আরো খারাপ হলে তাদের শেরপা লিডার সিদ্ধান্ত নেন বেস ক্যাম্পে ফিরে যাবার। তীব্র এই তুষার ঝড়ের মধ্যে লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে তাদের দল বেস ক্যাম্পে পৌঁছায়। বেস ক্যাম্পে পৌঁছে শুরু হয় নতুন দুশ্চিন্তার কারণ।
৬৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম পর্বত
তুষার পাতের কারণে ফিক্সড রোপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবহাওয়া ভালো হতে শুরু করলেও নতুন রুট ওপেন না করা পর্যন্ত সামিট পুশ সম্ভব হচ্ছিল না। এভাবেই কেটে যায় পাঁচদিন। তরপর সুখবর আসে রুট ওপেন হবার। নভেম্বরের ২ তারিখ শুরু হয় আবার সামিট বিট। এইদিনে তৌকির পৌঁছে যান ১৯ হাজার ফিট উচ্চতার ক্যাম্প-১ এ। এরপর ৩ তারিখ ইয়োলো টাওয়ার খ্যাত ১৯ হাজার ৬৮৫ ফিট উচ্চতার ক্যাম্প-২ এ পৌঁছান। বিশ্রাম নিয়ে শুরু করেন সামিট পুশ। তীব্র বাতাস, ফিক্সড রোপে অতিরিক্ত ট্রাফিক এবং আইস ফলকে উপেক্ষা করে ৪ নভেম্বর ২২ হাজার ৩৪৯ ফিট উচ্চতার ‘আমা দাবালাম’ চূড়ায় পৌছান তিনি।
তৌকির বিশ্বাস করেন, “স্বপ্ন যদি সত্যিকার অর্থে জ্বলে, তবে পাহাড়ও নত হয়। প্রতিটি শিখর আমাদের শেখায়, সীমা কেবল মনেই থাকে, সফলতায় নয়।”
তরুণ এই পর্বতারোহী এবারের স্বপ্ন পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়া ‘মাউন্ট এভারেস্ট’। এই লক্ষ্য নিয়েই তিনি এগোচ্ছেন। এখন প্রয়োজন তার সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তৌকির ২০২৬ সালেই পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় আবারো উড়াতে চান বাংলাদেশের পতাকা।
এর আগে, গত বছরের অক্টোবরে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নেপালের তিনটি ছয় হাজার মিটার পর্বত চূড়া স্পর্শ করেন পাবনার সন্তান আহসানুজ্জামান তৌকির। ২৭ দিনের অভিযানে গিয়ে কোন শেরপা সাপোর্ট ছাড়াই পর্বতগুলো আরোহণ করেন তিনি। পর্বতগুলো হলো ৬১১৯ মিটার উচ্চতার লবুচে পিক, ৬১৬৫ মিটার উচ্চতার আইল্যান্ড পিক ও ৬৪৬১ মিটার উচ্চতার মেরা পিক।
তারও আগে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে তৌকির খুম্বু রিজিওনের ৫০৭৬ মিটার উচ্চতার নাগা অর্জুন এবং ৬১১৯ মিটার উচ্চতার লবুচে পিক পর্বতের চূড়ায় আরোহণ করে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা উড়িয়েছেন।
তৌকির পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের বালুচর মহল্লার আকরাম হোসেন সাবু-সুলতানা সামিয়া পারভীন দম্পতি ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট তিনি। চাটমোহর রাজা চন্দ্রনাথ ও বাবু শম্ভুনাথ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা এবং অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্রিপল-ই তে বিএসসি সম্পন্ন করেছেন
ঢাকা/মাসুদ