‘আমার এই মেয়েটিকে আমি হারাতে চাই না’
Published: 2nd, October 2025 GMT
গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় ন্যান্সি আবু মাতরুদ ইতিমধ্যেই তিনটি সন্তান হারিয়েছেন। ২২ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি মা ক্যান্সার রোগী তার দুই বছর বয়সী সন্তান ইত্রাকে বাঁচানোর জন্য লড়াই করছেন। এই শিশু সন্তান গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। গাজা সিটিতে ইসরায়েলের সর্বশেষ আক্রমণের সময় গত মাসে তার চিকিৎসা দেওয়া শিশু হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যায়।
আবু মাতরুদ বলেন, “আমরা কেবল আশ্রয় চাইছি। আমার যে মেয়েটি এখনো আছে আমি তাকে হারাতে চাই না।”
প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের সময় রোগ, বাস্তুচ্যুতি, চিকিৎসা সেবার অভাব এবং অপুষ্টির এক মারাত্মক মিশ্রণ বেশিরভাগ গাজা পরিবারকে গ্রাস করেছে। তবে এই অস্থিরতা ইত্রার মতো ছোট শিশু এবং আবু মাতরুদের মতো গর্ভবতী মহিলাদের উপর একটি বিশেষ বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে।
গত মাসে গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছয় মাসের গর্ভবতী ছিলেন আবু মাতরুদ। যমজ সন্তান পেটে নিয়ে তিন দিন পায়ে হেঁটে স্বামী এবং মেয়ে ইত্রাকে নিয়ে কেন্দ্রীয় গাজা উপত্যকায় পৌঁছান তিনি।
আবু মাতরুদ জানান, পুরো পরিবার আল নুওয়াইরি এলাকায় পৌঁছানোর পর, তার পেটে ব্যথা শুরু হয় এবং তার পানি ভেঙে যায়। এর ফলে তিনি তার যমজ সন্তানের অকাল জন্ম দেন। যমজদের মধ্যে একজন নিকটবর্তী নুসাইরাতের আল-আওদা হাসপাতালে মারা যায়। দ্বিতীয় শিশুটিকে আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের শিশু বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। দুই দিন পর, সেই শিশুটিও মারা যায় বলে আল-আকসা হাসপাতালের মুখপাত্র খলিল আল-দাকরান জানান।
গাজায় অকাল জন্মগ্রহণকারী শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে খলিল রয়টার্সকে বলেন, “শিশুকে একটি সুরক্ষামূলক পরিবেশে রাখার জন্য ইনকিউবেটরের প্রয়োজন ছিল.
শিশুদের বাবা, ৫৩ বছর বয়সী ফারাজ আল-ঘালাইনি, রাস্তার পাশে মাটিতে বসে দুই বছর বয়সী ইত্রার জন্য আগুনে ছোলার একটি ক্যান গরম করছিলেন।
তিনি বলেন, “আমাদের দোষ কী? এর সাথে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের সন্তানদের দোষ কী? আল্লাহ আমাকে একটি মেয়ে দিয়েছেন, তার বয়স এখন দুই বছর এবং আমি এই দুটি যমজ সন্তানের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।”
ফারজ আর তার স্ত্রী এখন জানেন না তাদের কোঁকড়ানো চুলের মেয়ের কী হবে। রয়টার্স সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় রাস্তার ধারে একটি কম্বলের উপর একটি নোংরা ডোরাকাটা টি-শার্ট পরা শিশুটি ন্যাকড়া দিয়ে তৈরি পুতুল নিয়ে খেলছিল।
ফারজ বলেন, “আমরা জানি না কী করব, কেউ আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে না - কোনো দেশ বা আমাদের কাছের ব্যক্তিরাও নয়।”
নিরবচ্ছিন্ন ইসরায়েলি গোলাবর্ষণের ফলে সম্পদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গাজার হাসপাতালগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ছিটমহলের ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৪টি কাজ করছে এবং তাও কেবল আংশিকভাবে।
যুদ্ধের সময় প্রায় ২২ লাখ জনসংখ্যার এই ছিটমহলের বেশিরভাগই উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে বেশ কয়েকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যথাযথ যত্ন ছাড়াই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত নারীদের অকাল জন্মের ঝুঁকি বেশি, অপুষ্টি পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তুলেছে।
আবু মাতরুদ জানান, যুদ্ধের শুরুতে তার পূর্ববর্তী বিবাহের চার বছরের ছেলে নিখোঁজ হয়ে যায়। যমজ সন্তানদের হারানো আরেকটি অসহনীয় ট্র্যাজেডি।
ঢাকা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ই বছর আম দ র র জন য ম তর দ
এছাড়াও পড়ুন:
এটাই ‘শক্তিশালী’ স্কোয়াড, সুযোগ দেখছেন জামাল
২০১৩ সালে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯২ ম্যাচ খেলেছেন জামাল ভূঁইয়া। এর মধ্যে ভারতের বিপক্ষে খেলেছেন ৬ ম্যাচ। কিন্তু এই ৬ ম্যাচের কোনোটিতেই জেতেনি বাংলাদেশ। এবার অন্তত সেই গেরো খুলতে চাইছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
জামালের চোখে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী স্কোয়াড। তাই এবার ভারতকে হারানোর সুযোগও দেখছেন তিনি, ‘আমরা যে অবস্থায় আছি এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী স্কোয়াড। তাই অবশ্যই আমাদের একটা বড় সুযোগ আছে।’
২০২৫ সালে সাত ম্যাচ খেলে শুধু ভুটানের সঙ্গে জিতেছে বাংলাদেশ। আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে হারিয়ে বছরটা অন্তত জয় দিয়ে শেষ করার প্রত্যাশা জামালের, ‘এটা অনেক আবেগের ম্যাচ, উত্তেজনার ম্যাচ। এই ম্যাচের পর জাতীয় দলের জন্য অনেক লম্বা বিরতি আছে। বছরটা যদি জয় দিয়ে শেষ করতে পারি, তা শুধু আমাদের জন্য নয়, সমর্থক ও আপনাদের জন্যও ইতিবাচক হবে।’
জয় দিয়ে বছর শেষ করতে চান জামাল