প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
Published: 2nd, October 2025 GMT
শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি উপলক্ষে প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, বিসর্জনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব শেষ করার জন্য পুলিশ, র্যাব, এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
আরো পড়ুন:
ছুটোছুটির মধ্যে কাটছে মিমের পূজা
বুড়িগঙ্গায় চলছে প্রতিমা বিসর্জন
পুলিশ জানায়, প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা এবং বিসর্জন স্থানসমূহে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে কয়েক হাজার পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। শুধু ঢাকাতেই প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পুলিশ সদস্য এবং অতিরিক্ত আরো প্রায় ২ হাজার ৪০০ ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া র্যাবের ৯৪টি টহল টিম সাদা পোশাকে নিরাপত্তা তদারকিতে নিয়োজিত রয়েছে।
বিশেষ নজরদারি
প্রতিমা বিসর্জনের মূল ঘাটগুলো, যেমন—পলাশীর মোড়, রায়সাহেব বাজার ও ওয়াইজঘাট এলাকায় অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। বিসর্জন শোভাযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ঘাটকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
বিশেষ ইউনিট প্রস্তুত
যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াত, বোম ডিসপোজালও কে-নাইন ইউনিটকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
নৌ-নিরাপত্তা:
নৌ-দুর্ঘটনা এড়াতে কোস্টগার্ড ও স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। সাঁতার না জানা ব্যক্তিদের নৌকায় উঠতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে এবং যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরার অনুরোধ করা হয়েছে। বিসর্জনস্থলে প্রশিক্ষিত ডাইভার (ডুবুরি দল) প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্যদের সমন্বয়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো বন্ধে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে। অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে একত্রিত হয়ে সেখান থেকে শোভাযাত্রা সহকারে বিনা স্মৃতি স্নান ঘাট, ওয়াইজ ঘাট ও নবাববাড়ি ঘাটে বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ:
শোভাযাত্রার পথ নির্বিঘ্ন রাখতে এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধান সড়কগুলোতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। শোভাযাত্রার সময় যান চলাচলের জন্য বিকল্প পথের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পূজা কমিটির প্রতি নির্দেশনা:
পূজামণ্ডপগুলোতে প্রবেশ ও প্রস্থান পথ পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, মণ্ডপে ব্যাগ, থলে বা পোঁটলা নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। সব নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত ও কঠোর তৎপরতায় প্রতিমা বিসর্জন উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হবে বলে আশা করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
ঢাকা/এমআর/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
তফসিলের আগেই লটারির মাধ্যমে মাঠ প্রশাসন ঢেলে সাজানো হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই লটারি প্রথার মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো হবে। নির্বাচন শুরু হওয়ার পাঁচ দিন আগ থেকে মাঠে প্রশাসন শক্ত অবস্থানে থাকবে। এরপর নির্বাচনের দিনসহ পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে আরও আর তিন দিন মাঠে প্রশাসনকে রাখা হবে।
আজ শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে স্থানীয় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন জাহাঙ্গীর আলম। নির্বাচন নিয়ে কোনো জটিলতা দেখছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি দেশের নির্বাচন নির্ভর করে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর। যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনমুখী হয়ে আসনগুলোতে প্রার্থী দেওয়া শুরু করেছে, তাই আর নির্বাচন নিয়ে সামনে কোনো জটিলতা দেখছি না। তবে জানুয়ারিতে নয়, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ত্রায়োদশ নির্বাচন সফল করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মাঠে ৩০ হাজার সেনাসদস্য কাজ করছেন। পর্যায়ক্রমে নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনীর ১ লাখ সদস্য মাঠে থাকবেন। এ ছাড়া কোস্টগার্ডের ৪০ হাজার সদস্য, নৌবাহিনীর ৫ হাজার সদস্য, র্যাবের ৮ হাজার সদস্য এবং সাড়ে পাঁচ লাখ আনসার সদস্য নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন।
আনসার সদস্যদের প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, যেকোনো নির্বাচনে আনসার সদস্যেরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তাই এবারের নির্বাচনে তাঁদের অস্ত্র দেওয়া হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী সোমবার। এ রায়কে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এ রায় ঘিরে সরকার বড় ধরনের কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছে না। ইতিমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। আশা করি সবকিছু ঠিকঠাকভাবে হবে।’
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন, পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. মঞ্জুর মোর্শেদ আলম, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী, পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদসহ স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা।
পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা শেষে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও নৌ-পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে কুয়াকাটার উদ্দেশে রওনা হন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এর আগে তিনি পটুয়াখালী শহরে পুলিশ লাইনস ও কোস্টগার্ড বেজ পরিদর্শন করেন।