মেয়ের বিয়ের জন্য তিলে তিলে সব জমিয়েছিলেন রহিমা, মুহূর্তেই ছাই
Published: 2nd, October 2025 GMT
নিজের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। সাময়িকভাবে টিনশেডের একটি ঘরে অসুস্থ স্বামী ও সন্তান নিয়ে প্রতিবেশীর জায়গায় থাকতেন। একটি মুরগির খামারে চাকরি করে তিলে তিলে জমিয়েছিলেন ৩৭ হাজার টাকা। কিনেছিলেন আসবাব ও তিন গরু। বড় মেয়ের বিয়ের পাকা কথা হয়েছে। তবে মুহূর্তের আগুনে পুড়ে সব শেষ রহিমা বেগমের (৩৫)।
রহিমার বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের রোসাইঙ্গা ঘোনা গ্রামে। গতকাল বুধবার রাতে তিনি খামারে ছিলেন। তাঁর ছেলে–মেয়ে ও অসুস্থ স্বামী ঘরে ছিল। দিবাগত রাত তিনটার দিকে খবর পান তাঁর বাড়িতে আগুন লেগেছে। ফিরে এসে দেখেন ঘরের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
রহিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ঘরে আলমারি, খাট, চেয়ার, টেবিলসহ প্রয়োজনীয় আসবাব ছিল। এগুলো সব শেষ। বসতবাড়ির সঙ্গে লাগোয়া গোয়ালে তিনটি গরু ছিল। সেগুলো আগুনে পুড়ে গুরুতর আহত। বড় মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বিয়েতে উপহার দেওয়ার জন্য কিছু জিনিসপত্র কিনেছিলেন। এখন আর কিছুই নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রহিমা মুরগির খামারে কাজ করে মাসে ১০ হাজার টাকা পান। এ টাকা দিয়েই সংসারের যাবতীয় খরচ চালান। এর বাইরে গরু পালন করে কিছু টাকা পান। তাঁর বড় মেয়ে মাধ্যমিক পাস করেছে। এখন বিয়ের কথাবার্তা চলছে। ছোট ছেলে পঞ্চম শ্রেণি ও ছোট মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আগুনে তাদের বইখাতা, ব্যাগ, ইউনিফর্ম সবকিছু পুড়েছে। কীভাবে বাকি দিন চলবেন এটি নিয়েই এখন দুশ্চিন্তা।
রহিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়ের বিয়ের জন্য টাকাগুলো তিলে তিলে জমিয়েছিলাম। আগুনে সব পুড়ে গেল। এখন কীভাবে চলব, কীভাবে বাঁচব কিছুই জানি না।’
চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো.
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির সঙ্গে দেখা করব। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক
এছাড়াও পড়ুন:
ন্যায়বিচার হয়েছে, এই রায় সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ: সালাহউদ্দিন আহমদ
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলায় যে রায় হয়েছে, তাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, এই বিচার, এই রায় সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ।
আজ সোমবার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে আসামিদের অপরাধের তুলনায় এই সাজা যথেষ্ট কম। কিন্তু আইনে এর ওপরে কোনো সাজা নাই।
আজ বেলা তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই প্রতিক্রিয়া জানান সালাহউদ্দিন আহমদ। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেক আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ সোমবার এই রায় ঘোষণা করেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে কয়েকটি জিনিস প্রমাণিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার যত শক্তিশালী হোক, যত দীর্ঘদিনই রাষ্ট্রক্ষমতা অবৈধভাবে পরিচালিত করুক, ক্ষমতা ভোগ করুক, একদিন না একদিন আদালতের কাঠগড়ায় তাঁদের দাঁড়াতেই হবে।
আরও যেসব মামলা আছে, সেই মামলাগুলোতেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
এক প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এই বিচার অপরাধের তুলনায় যথেষ্ট নয়। কিন্তু এটা শুধু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নয়, সামনের দিনের জন্য একটা উদাহরণ। ভবিষ্যতে যাতে এই রাষ্ট্রে কেউ আর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম না করতে পারে, ফ্যাসিস্ট না হয়ে উঠতে পারে, একনায়কতন্ত্র যাতে প্রতিষ্ঠা না হয়, তার একটি উদাহরণ। এটা ভবিষ্যতের জন্য একটা শিক্ষা। শুধু অতীতের জন্য বিচার নয়, এটা মনে রাখতে হবে।