জাতীয় পার্টিতে সম্মেলন ঘিরে উত্তেজনা, আপস করবেন না জি এম কাদের
Published: 20th, June 2025 GMT
২৮ জুন জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় সম্মেলন আয়োজনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি অংশ। এ লক্ষ্যে সারা দেশে জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট নেতারা বলছেন, জাতীয় পার্টি থেকে বের হয়ে গঠিত দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সম্মেলনে উপস্থিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই সম্মেলন করার প্রস্তুতি চলছে। তবে সম্মেলনের জন্য এখনো প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া যায়নি।
এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সারা দেশে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি দেখা দিয়েছে। দলের নেতৃত্ব নিয়ে কী হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎকণ্ঠাও তৈরি হয়েছে।
সম্মেলন আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত একজন দায়িত্বশীল নেতা বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সর্বাত্মকভাবে সম্মেলন সফল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা আশা করছেন, আগামী রোববারের মধ্যে প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া যাবে। তখন সম্মেলন ঘিরে প্রেক্ষাপট পাল্টে যাবে।
এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সারা দেশে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্তি দেখা দিয়েছে। দলের নেতৃত্ব নিয়ে কী হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎকণ্ঠাও তৈরি হয়েছে।তবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রথম আলোকে বলেছেন, তিনি এই তৎপরতাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনি প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠা নেতাদের সঙ্গে কোনোভাবেই আপস করবেন না।
জাতীয় পার্টির সংশ্লিষ্ট নেতারা বলছেন, এবার দলের দশম জাতীয় সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০ ধারার (ক) উপধারার সংশোধন। এর মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টিতে বিদ্যমান ‘একক’ ও ‘কর্তৃত্ববাদী’ নেতৃত্বের বদলে যৌথ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
ওনাদের সঙ্গে আমি আর রাজনীতি করতে চাই না। তাঁরা শেখ হাসিনার সময়েও অনেক যন্ত্রণা দিয়েছেন, আবার এখনো সেটি শুরু করেছেন। তারা যা ইচ্ছা করুক। প্রয়োজনে রাজনীতি ছেড়ে দেব, নীতি ছাড়ব না।জি এম কাদের, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানজাতীয় পার্টির দুই জ্যেষ্ঠ নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এই সম্মেলনের উদ্যোক্তা। তাঁদের সঙ্গে দলের সাবেক ও বর্তমান জ্যেষ্ঠ নেতাদের বড় একটি অংশসহ বিভিন্ন জেলার নেতারাও রয়েছেন। এতে তারা ভালো সাড়া পাচ্ছেন বলে সম্মেলন আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতারা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ২৮ জুনের সম্মেলন স্থগিত করেছেন। কারণ, হিসেবে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের মিলনায়তনের হল বরাদ্দ বাতিল হওয়ার কথা বলেছেন। এরপর দলের অপর পক্ষ কাকরাইলে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সম্মেলন করার ঘোষণা দেয়। ফলে সম্মেলন ঘিরে দুই পক্ষে কিছুটা উত্তেজনার তৈরি করেছে।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এম ক দ র
এছাড়াও পড়ুন:
রয়েল টিউলিপে এনসিপি নেতাদের অবস্থান, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির
কক্সবাজারে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টে (পুরোনো নাম রয়েল টিউলিপ) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিবাদে সভা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, রয়েল টিউলিপে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে রয়েল টিউলিপের সামনে প্রতিবাদ সভা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান এনসিপির পাঁচ নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, সার্জিস আলম, ডা. তাসমিন জারা, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও খালেদ সাইফুল্লাহ।
প্রতিবাদ সভার নেতৃত্ব দেন উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক সেলিম সিরাজী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। যারা ভোটে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তারা এখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। খুনি শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। সেই আনন্দের মুহূর্তে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদের এখানে প্রতিবাদে আসতে হয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এনসিপির নেতারা মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার আসেন। পরে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টের (রয়েল টিউলিপ) ৫০০১, ৫০০২ ও ৫০০৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই রিসোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের স্ত্রীসহ তারা ঘুরতে এসেছেন।’’
ওই রিসোর্টের কক্ষ আগে থেকে বুকিং করা ছিল না বলেও জানান তিনি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনসিপির পাঁচ নেতার হঠাৎ কক্সবাজার আগমনের বিষয়টি প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করা হয়নি।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাংলাদেশস্থ রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করতে কক্সবাজারে গিয়েছেন এই পাঁচ নেতা।
এনসিপি নেতাদের বহন করে বিমানবন্দর থেকে রয়েল টিউলিপে নিয়ে যাওয়া গাড়ির চালক নুরুল আমিন জানান, তার গাড়িতে করে হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ দুইজন নারী- একজন সারজিস আলমের স্ত্রী এবং অপরজন সমন্বয়ক (তাসনিম জারা) রয়েল টিউলিপে যান।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফ উদ্দিন শাহীন বলেন, “এনসিপির পাঁচ নেতা রয়েল টিউলিপে অবস্থান করছেন। তবে, এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। পুরো হোটেলে মাত্র তিনজন বিদেশি আছেন, তারা সবাই চীনের নাগরিক।”এদিকে এনসিপি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ একটি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “আমরা এখানে পিটার হাস কিংবা অন্য কারো সাথে কোন মিটিং করিনি। এমনকি পিটার হাসের সঙ্গে আমাদের দেখাও হয়নি। আমরা কয়েকজন এখানে ঘুরতে এসেছি।”
তারেকুর//