শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে তার সাথে এক নারীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। এই ঘটনার পর জেলা জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। 

শুক্রবার (২০ জুন) সকালে প্রবাসী সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ছবি ও টেলিগ্রামে ভিডিওটি পোস্ট করেন। 

ফেসবুক ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, “শরিয়তপুরের ডিসি মো.

আশরাফ উদ্দিন। একজন জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারি ব্যক্তি। উনি এই ছবিগুলো নিজেই খুশি মনে তুলেছেন। ভিডিও করেছেন। ছবির ওনাকে বিয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। এখন বিয়ে না করে ‍হু/ম/কি দিচ্ছেন। ওনার কোলে তোলার গল্পের খানিকটা কমেন্টের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেয়া আছে।”

এছাড়াও টেলিগ্রামে পোস্ট করা ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন শার্টের বোতাম খুলে বুক খোলা অবস্থায় লাল-হলুদ রঙের জামা ও সালোয়ার পরা এক নারীকে কোলে নিয়ে চুম্বন করছেন। এছাড়াও ভিডিটিওর মাঝেখানে রয়েছে মোবাইলের ভিডিও কলে থাকা অবস্থায় ওই নারীকে তার বিশেষ অঙ্গ প্রদর্শন করছেন জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন। 

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হয়ে যোগদান করেন। 

এর আগে তিনি ২৭ তম বিসিএস ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে পূর্বে নিউরো ডেভলপমেন্ট, প্রতিবন্ধী ট্রাস্ট-এর পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে জেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, “ডিসি তার সৎচরিত্র ধরে রাখতে পারেনি। জাওয়াদ নির্ঝর নামের এক প্রবাসী সাংবাদিক ডিসি এবং এক নারীর কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করেছেন। তা থেকে আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। ডিসির কাছ থেকে এধরণের কাজ কেউ প্রত্যাশা করে না। তার এমন অপ্রত্যাশিত ভিডিও বা ছবি ভাইরাল হবে এটা আমরা বা জনগণ কেউ প্রত্যাশা করে না।” 

তবে এখন পর্যন্ত ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে নাম্বারে কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/আকাশ/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের পর ইসরায়েলের নিশানা কি তুরস্ক

ইরানে গত শুক্রবার হামলা চালানোর ঠিক এক দিন আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পার্লামেন্টে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন।

সেদিন পার্লামেন্টে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘আর্জেন্টিনা একসময় হাজারো ইহুদির জন্য এক নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছিল; যখন অর্থনৈতিক সংকট ও বিদ্বেষমূলক নিপীড়ন থেকে বাঁচতে তাঁরা শুধু পূর্ব ইউরোপ নয়, অটোমান সাম্রাজ্য থেকেও পালিয়ে আশ্রয় খুঁজছিলেন। একটি সাম্রাজ্য (অটোমান সাম্রাজ্য) আর শিগগিরই পুনর্গঠিত হবে বলে আমার মনে হয় না, যদিও কিছু মানুষ আমার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।’

এ মন্তব্যগুলো স্পষ্টভাবে তুরস্ক ও দেশটির দীর্ঘ সময়ের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে লক্ষ্য করে করা এবং বিষয়টি আঙ্কারার কর্মকর্তাদের দৃষ্টি এড়ায়নি।

‘আরব বসন্তের’ সময় ২০১০-এর দশক থেকে একটি ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে আসছে।

নতুন আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছেও আঙ্কারার গুরুত্ব ক্রমে বেড়েছে। এ গুরুত্ব এতটাই বেড়েছে যে ইরানে ইসরায়েলের হামলার আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রের যে গুটিকয় মিত্রকে সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে আগাম তথ্য দেওয়া হয়েছিল, সেসবের একটি তুরস্ক।

এর কয়েক ঘণ্টা পর (শুক্রবার ভোরে) ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা শুরু এবং শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা, গোয়েন্দা ও সামরিক কমান্ডারদের পাশাপাশি কয়েকজন পরমাণুবিজ্ঞানীকে হত্যা করে।

তুরস্ক এ উত্তেজনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ইসরায়েলের আক্রমণকে অপ্রয়োজনীয় বলে বর্ণনা করেছে, বিশেষ করে এমন সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী ইরান সক্রিয়ভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না।

ইসরায়েলের আক্রমণের নজিরবিহীন গতি দেখে তুরস্কের কর্মকর্তা ও জনগণ উভয়ই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

শুধু সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা নয়, ইসরায়েল ইরানের আবাসিক এলাকা ও বেসামরিক অবকাঠামোও লক্ষ্যবস্তু করেছে। হামলায় এখন পর্যন্ত কয়েক শ মানুষ নিহত এবং এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। হতাহতদের অধিকাংশই সাধারণ মানুষ।

হামলার জবাব দিতে ইসরায়েলের হাইফা, তেল আবিবসহ কয়েকটি বড় শহরে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান।

তুরস্ক এ উত্তেজনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ইসরায়েলের আক্রমণকে অপ্রয়োজনীয় বলে বর্ণনা করেছে, বিশেষ করে এমন সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী ইরান সক্রিয়ভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না।

তবে আঙ্কারা শুধু ইসরায়েলের বর্তমান সামরিক সক্ষমতার কারণেই উদ্বিগ্ন নয়। পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা চলাকালে ইসরায়েল এ হামলা চালানোর পরও ইউরোপের দেশগুলোর এতে সমর্থন দেওয়ার ঘটনা দেশটিকে হতাশ করেছে।

যদিও এ উত্তেজনা বৃদ্ধিকে অনেকেই হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনা হিসেবে দেখছেন, যা অনেক আঞ্চলিক রাষ্ট্রকে বিস্মিত করেছে।

আর্জেন্টিনা একসময় হাজারো ইহুদির জন্য এক নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছিল; যখন অর্থনৈতিক সংকট ও বিদ্বেষমূলক নিপীড়ন থেকে বাঁচতে তাঁরা শুধু পূর্ব ইউরোপ নয়, অটোমান সাম্রাজ্য থেকেও পালিয়ে আশ্রয় খুঁজছিলেন। একটি সাম্রাজ্য (অটোমান সাম্রাজ্য) আর শিগগিরই পুনর্গঠিত হবে বলে আমার মনে হয় না, যদিও কিছু মানুষ আমার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।—বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী

আঙ্কারা আগেই ইরানের ওপর ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলার ঘটনায় প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল যখন লেবাননের হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে, তখন তুরস্কের কর্মকর্তারা ইসরায়েলের বড় ধরনের আক্রমণ ও এর জেরে সম্ভাব্য আঞ্চলিক সংঘাতের পরিণতির বিষয়টি পর্যালোচনা করেছে।

এ জন্য তুরস্ক বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তুত করে রেখেছে; যার মধ্যে শরণার্থীদের সম্ভাব্য ঢেউ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত আছে।

গত বছরের অক্টোবরে আঙ্কারা কারাবন্দী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের সঙ্গেও আলোচনা শুরু করে; যাতে ইরান কিংবা ইসরায়েল, কোনো পক্ষই তাদের লড়াইয়ে পিকেকে যোদ্ধাদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে।

তেহরান থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ইরানের নাতাঞ্জ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র

সম্পর্কিত নিবন্ধ