গলের ব্যাটিং স্বর্গেও রানের দেখা পেলেন না এনামুল হক বিজয়। রান অবশ্য আরও অনেকেই পাননি। বিজয়ের মতো এতটা যন্ত্রণাদায়ী ব্যাটিং সম্ভবত গত কয়েক বছরে লঙ্কান এ মাঠে কেউ করেনি। ব্যাটে বল লাগাতে পারছিলেন না, আত্মিবশ্বাসের সঙ্গে বল ছাড়তেও পারছিলেন না, বারে বারে খোঁচা মারছিলেন, পা তো বলের লাইনে যাচ্ছিলই না। টিকে থাকার জন্য টেলএন্ডারদেরও এতটা সংগ্রাম করতে দেখা যায় না। শেষ পর্যন্ত তাঁকে এ অবস্থা থেকে মুক্ত করেন প্রভাত জয়সুরিয়া। টেস্ট ক্যারিয়ার থেকেও কী মুক্ত হয়ে গেলেন বিজয়!
১৩ বছর আগে বিশাল এক আশার বেলুন ফুলিয়ে জাতীয় দলে আবির্ভাব ঘটেছিল বিজয়ের। এত হাঁকডাক দিয়ে আসা ব্যাটার এক যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে মাত্র ৭টি টেস্ট খেলেছেন। এত অল্প টেস্ট খেলার পেছনে অনেকেই তাঁর টেকনিক্যাল দুর্বলতার কথা বলেন। গলে প্রথম ইনিংসে ১০ বল খেলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খোঁচা দিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে আসার পরই তাঁকে টেস্টে নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসে ২০ বলে ৪ রান করে ক্যাচ দিয়ে সে প্রশ্নকে আরও জোরালো করলেন তিনি।
অবশ্য বিজয়ের কী দোষ? ৫০ ওভারের টুর্নামেন্ট প্রিমিয়ার লিগে ভালো করেছিলেন তিনি। এর পুরস্কার হিসেবে নির্বাচকরা তাঁকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে ডেকে বসলেন। তিন বছর পর ফিরে টেস্ট ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ৩৯ রানের ইনিংসটা খেলে ফেলেন চট্টগ্রামে। তাতেই শ্রীলঙ্কা সফরের লিস্টে নাম উঠে যায়। কিন্তু লাল বলে তিনি যে স্বচ্ছন্দ না এবং ব্যাটিংয়ের সময় তাঁর পা যে নড়াচড়া করে না সেটি শ্রীলঙ্কা সফরের শুরুতেই নগ্নভাবে আবারও বেরিয়ে এলো।
তাঁর এই দুবর্লতা মোটেই নতুন কিছু নয়। ২০১২ সালে তাঁর ওয়ানডে অভিষেক হলেও টেস্টে সুযোগ দেওয়া হচ্ছিল না এই দুবর্লতার জন্য। বছরখানেক পর তাঁকে টেস্টে নেওয়া হলেও বিরতি দিয়ে চার টেস্ট খেলানোর পর ২০১৪ সাল থেকে লম্বা সময়ের জন্য এই ফরম্যাট থেকে বাদ ছিলেন তিনি। ২০২২ সালে ৮ বছর পর দলে ফিরে উইন্ডিজে আবার সেই একই দুর্বলতা দেখা গেলে এক টেস্ট খেলিয়ে আবার তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। তিন বছর পর আবার ফেরানো হলেও কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিজয় যে সাদা বলের ব্যাটার সেটি নির্বাচক কবে বুঝবেন?
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আয়রনম্যান ইতালিতে সফল হলেন আরিফুর রহমান
মাত্র কয়েক দিন আগেই ১৪ সেপ্টেম্বর আয়রনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে সফল হয়েছেন বাংলাদেশের আয়রনম্যান মো. আরিফুর রহমান। আজ শনিবার আয়রনম্যান ইতালিতে অংশ নিয়ে সফল হলেন তিনি। কয়েক দিনের ব্যবধানে দু–দুটি আয়রনম্যান সম্পন্ন করেছেন তিনি। রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে সাতটায় ইতালির এমিলিয়া–রোমাগনায় শুরু হয় আয়রনম্যান ইতালি।
মো. আরিফুর রহমানের আয়রনম্যান ইতালি সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে ১০ ঘণ্টা ৫২ মিনিট ২৫ সেকেন্ড। আয়রনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর সময় লেগেছিল ১৩ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট ১৪ সেকেন্ড। পৃথিবীর কঠিনতম ট্রায়াথলন (সাঁতার, সাইক্লিং ও দৌড়ের সমন্বয়ে ক্রীড়া) প্রতিযোগিতা আয়রনম্যান। আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যক্তিগত সময় কম লেগেছে এবার। ফ্রান্সে আয়রনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও আয়রনম্যান ইতালির দিনের ব্যবধান কম ছিল। তবু সফল হতে পেরেছি, এটাই বড় কথা।’ আরিফুর এ পর্যন্ত আটটি আয়রনম্যান প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে আজকেরটাসহ সাতটি পূর্ণ দূরত্বের।
আয়রনম্যান ইতালিতে ৮ ঘণ্টা ১৪ মিনিট ১৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে প্রথম স্থান লাভ করেছেন স্লোভেনিয়ার টাইন ল্যাভরেনসিক। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমে জার্মানির ফন এরিক ক্লুনে (৮ ঘণ্টা ১৮ মিনিট) ও ইউক্রেনের জুলিয়ান দেমিয়ানভ (৭ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড)।
মো. আরিফুর রহমান ৪০-৪৪ বয়স গ্রুপে আয়রনম্যান ইতালিতে অংশ নিয়েছেন। তাঁর বয়স গ্রুপে ৩২৭ জনের মধ্যে তিনি ৯৮তম হয়েছেন তিনি। মোট ২ হাজার ৩৬৬ জনের মধ্যে ৫৩৪তম হয়েছেন। আয়রনম্যান প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেককে ১৭ ঘণ্টার মধ্যে ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সাঁতার, ১৮০ কিলোমিটার সাইক্লিং এবং ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটার দৌড় সম্পন্ন করতে হয়।
পেশায় জনতা ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আরিফুর রহমান কক্সবাজারের ১০০ কিলোমিটার আলট্রা ম্যারাথনে ৯ ঘণ্টা ৩২ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে রেকর্ড করেছেন। এ ছাড়া একবার ওশেনম্যান এবং দুবার বাংলা চ্যানেল সাঁতার সম্পন্ন করেন। আয়রনম্যান ইতালিতে আরিফুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতা করছে নেক্সট স্পেসেস লিমিটেড ও জনতা ব্যাংক পিএলসি।