শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি এক বছর আগে তার শ্যালকের স্ত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ঘুমের ওষুধ সেবন, আত্মহত্যার হুমকি দেন আশরাফ। পরে নানা কৌশলে ওই গৃহবধূর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। একপর্যায়ে স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য হন ওই গৃহবধূ। তবে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিয়ে না করে উল্টো ওই গৃহবধূকে প্রাণনাশের হুমকি দেন আশরাফ। 

ওই গৃহবধূ টাঙ্গাইলের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তার এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। আগের সংসারে সুখেই ছিলেন তিনি। এক বছর আগে মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন তাকে দেখার পর নানা কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেন। বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ঘুমের ওষুধ সেবন ও আত্মহত্যার হুমকিসহ নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন। পরবর্তী সময়ে দফায় দফায় ওই গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে ধর্ষণ করেন আশরাফ। অনেক সময় ঘুমের ওষুধ বা নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে তাদের (গৃহবধূর) বাসার নিচে পড়ে থাকতেন আশরাফ।

তিনি বলেন, “আমার স্বামী প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে জানত না। পরে অন্যের মাধ্যমে জানতে পেরেছে। আশরাফ বলত, আমার ছেলে-মেয়ে নাই, তোমার সন্তানই আমার সন্তান। নানা কৌশলে আমার সঙ্গে ঢাকা ও টাঙ্গাইলে রিসোর্টসহ নানা জায়গায় শারীরিক সম্পর্ক করেছে। শারীরিক সম্পর্কে রাজি না হলে আত্মহত্যার হুমকি দিত, সামনে যা থাকত সব ভাঙচুর করত। রাতের পর রাত আমাকে নির্যাতন করেছে। মারধর করে আমার বাম কান নষ্ট করে দিয়েছে। বাম কানে এখন কিছুই শুনতে পাই না।”

ওই গৃহবধূ আরো বলেন, “অন্য নারীর মতো স্বামীর বাড়িতে আমার জীবনটাও রঙিন ছিল। আশরাফ আমার জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। সে ঠিক রাজার মতো আছে। আমার জীবনে ব্যাপক ঝুঁকি আছে। অ্যাসিড দিয়ে আমার মুখ পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এক্সিডেন্ট বা অন্য কোনো কারণে আমার মৃত্যু হলে এর দায় আশরাফ ও তার স্ত্রীর। তার স্ত্রী আমাদের বিষয় সবার কাছে প্রচার করে মান-সম্মান শেষ করে দিছে। আমার মেয়ে অনার্সে পড়ে, ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ে। আমি নতুন করে বাঁচতে চাই।”

এ বিষয়ে জানতে মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের মোবাইল নম্বরে কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরে জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন। ২৭তম বিসিএস ক্যাডারের এই কর্মকর্তা এখন প্রতিবন্ধী ট্রাস্টের পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ঢাকা/কাওছার/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন আশর ফ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন প্রভাব পড়বে না: শেখ বশিরউদ্দীন

ভারত আরও চারটি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি।

শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে, এমন কোনো বিষয়ে ছাড় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়নি। দুই দেশের মধ্যে খাদ্য ও কৃষিপণ্যের আমদানি বাড়িয়ে বাণিজ্য ঘাটতি মেটানো হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে দর–কষাকষি চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, সে বিষয়ে ১৫ শতাংশের ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ।

আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমস্যা থাকলেও এতটা অস্থিতিশীল নয় যে ব্যবসা–বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। তাই রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে তাতে সমস্যা হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের নতুন বিধিনিষেধের আওতায় সে দেশের ব্যবসায়ীরা এখন বাংলাদেশ থেকে চার ধরনের পাটের পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করতে পারবেন না। শুধু দেশটির মুম্বাইয়ের নভসেবা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য আমদানির সুযোগ আছে। এমন বিধিনিষেধ দিয়ে গতকাল সোমবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য মহাপরিচালকের কার্যালয় (ডিজিএফটি) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে গত কয়েক মাসে কয়েক দফায় অশুল্ক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত। এর আগে গত ১৭ মে স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয় দেশটি। তার আগে ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করে দেশটি।

এদিকে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা ভারত বাতিল করার এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করেছে। এর আগে বেনাপোল, ভোমরা, সোনা মসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ