শারীরিক সম্পর্কে রাজি না হলে আত্মহত্যার হুমকি দিতেন ডিসি আশরাফ
Published: 21st, June 2025 GMT
শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি এক বছর আগে তার শ্যালকের স্ত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ঘুমের ওষুধ সেবন, আত্মহত্যার হুমকি দেন আশরাফ। পরে নানা কৌশলে ওই গৃহবধূর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। একপর্যায়ে স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য হন ওই গৃহবধূ। তবে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিয়ে না করে উল্টো ওই গৃহবধূকে প্রাণনাশের হুমকি দেন আশরাফ।
ওই গৃহবধূ টাঙ্গাইলের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তার এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। আগের সংসারে সুখেই ছিলেন তিনি। এক বছর আগে মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন তাকে দেখার পর নানা কৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেন। বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ঘুমের ওষুধ সেবন ও আত্মহত্যার হুমকিসহ নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন। পরবর্তী সময়ে দফায় দফায় ওই গৃহবধূকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে ধর্ষণ করেন আশরাফ। অনেক সময় ঘুমের ওষুধ বা নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করে তাদের (গৃহবধূর) বাসার নিচে পড়ে থাকতেন আশরাফ।
তিনি বলেন, “আমার স্বামী প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে জানত না। পরে অন্যের মাধ্যমে জানতে পেরেছে। আশরাফ বলত, আমার ছেলে-মেয়ে নাই, তোমার সন্তানই আমার সন্তান। নানা কৌশলে আমার সঙ্গে ঢাকা ও টাঙ্গাইলে রিসোর্টসহ নানা জায়গায় শারীরিক সম্পর্ক করেছে। শারীরিক সম্পর্কে রাজি না হলে আত্মহত্যার হুমকি দিত, সামনে যা থাকত সব ভাঙচুর করত। রাতের পর রাত আমাকে নির্যাতন করেছে। মারধর করে আমার বাম কান নষ্ট করে দিয়েছে। বাম কানে এখন কিছুই শুনতে পাই না।”
ওই গৃহবধূ আরো বলেন, “অন্য নারীর মতো স্বামীর বাড়িতে আমার জীবনটাও রঙিন ছিল। আশরাফ আমার জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। সে ঠিক রাজার মতো আছে। আমার জীবনে ব্যাপক ঝুঁকি আছে। অ্যাসিড দিয়ে আমার মুখ পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এক্সিডেন্ট বা অন্য কোনো কারণে আমার মৃত্যু হলে এর দায় আশরাফ ও তার স্ত্রীর। তার স্ত্রী আমাদের বিষয় সবার কাছে প্রচার করে মান-সম্মান শেষ করে দিছে। আমার মেয়ে অনার্সে পড়ে, ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়ে। আমি নতুন করে বাঁচতে চাই।”
এ বিষয়ে জানতে মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের মোবাইল নম্বরে কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরে জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন। ২৭তম বিসিএস ক্যাডারের এই কর্মকর্তা এখন প্রতিবন্ধী ট্রাস্টের পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ঢাকা/কাওছার/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের যেকোনো আদালতের মানদণ্ডে এই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো উতরে যাবে: চিফ প্রসিকিউটর
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিদের যে সাজা দেওয়া হয়েছে, পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করলে একই শাস্তি পাবেন।
আজ সোমবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যে ধরনের সাক্ষ্যপ্রমাণ এই আদালতে উপস্থাপিত হয়েছে, বিশ্বের যেকোনো আদালতের স্ট্যান্ডার্ডে এই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো উতরে যাবে এবং পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হলে আজ যেসব আসামিকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই একই শাস্তি প্রাপ্ত হবেন।’
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ সব আন্তর্জাতিক নর্মস, আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করে ক্রাইমস এগেন্স হিউম্যানিটির মতো কমপ্লেক্স (মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো জটিল) অপরাধের বিচার করতে সক্ষম এবং বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে সেটা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘অপরাধী যতই ক্ষমতাশালী হোক, সে আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে যত বড় অপরাধীই হোক, তার অপরাধের জন্য তাকে জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে এবং তার প্রাপ্য শাস্তি পেতে হবে।’
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এই রায়ের প্রক্রিয়া সমাপ্ত হওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি হয়েছে। যদিও আরও অনেকগুলো মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘শহীদ পরিবার, যাদের ক্ষতি কোনো কিছু দিয়ে পূরণ হবে না, তাদের সামনে অন্তত একটা ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি। এ জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’