ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যা চলতি বছরে একদিনে সর্বোচ্চ ভর্তি। এ সময়ে ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩৩ জন, খুলনা বিভাগ ১২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৮৯ ডেঙ্গুরোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৬৯৮ জন।

গত দুই দশকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জুলাইয়ের শেষে কিংবা আগস্টের শুরু থেকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। তবে এ বছর জুনের শুরুতেই পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। বাইরে থেকে বেশি আসছে সংকটাপন্ন রোগী। বরিশাল ও বরগুনায় রোগীর বিপরীতে পর্যাপ্ত শয্যা সংকটের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রোগীদের অভিযোগ, স্যালাইন ও ওষুধের সংকট রয়েছে। প্লাটিলেট সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা.

সায়েদুর রহমান বলেন, মশক নিধন কার্যক্রম প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি। এ জন্য ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। একা কোনো সংস্থার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। ভাইরাসটি প্রতিরোধে জাতীয়ভাবে কর্মসূচি নেওয়া দরকার। তবে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষ টিম কাজ করছে বলে জানান তিনি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভূতের ট্রেন

তামিম ও মুনা। ওরা দুই ভাইবোন। একটু ছুটি পেলেই ঘুরে বেড়ায়। বাবা-মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘুরতে বের হয়ে যায় গ্রামের আশপাশে। ওদের গ্রামের নাম বকুলপুর।
বকুলপুরে একটি পুরোনো রেলস্টেশন আছে। সে অনেক আগে সেখানে ট্রেন আসা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আর কেউ সেখানে যেতে সাহস করে না। বেশ রহস্যময় রেলস্টেশন!
একদিন বিকেলে সেখানে ঘুরতে গেলো তামিম ও মুনা। ওরা দেখলো, ধুলো জমে থাকা একটি বেঞ্চ, তার ওপরে পড়ে আছে চকচকে টিকিট। মুনা টিকিটটা তুলে নিলো। তাতে লেখা, ‘ভূতের ট্রেন! আজ রাত বারোটায় ছাড়বে।’
মুনা চোখ বড় বড় করে বললো, ‘ভূতের ট্রেন!’
তামিম হেসে বললো, ‘আজ রাতে দেখবো, সত্যিই ভূতের ট্রেন বলে কিছু আছে কিনা।’
ওরা অপেক্ষা করতে লাগে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত নামলো। অন্ধকারে ঢেকে গেছে পুরো স্টেশন। কোথাও কারও সাড়াশব্দ নেই। চারপাশে কেবল ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। হঠাৎ দূর থেকে ভেসে আসে হুইসেলের শব্দ!
মুনা ফিসফিস করে বললো, ‘তামিম, শুনতে পাচ্ছো?’
তামিম মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো। তবে কথা বললো না। একটু পর ঝিকঝিক শব্দ করে ট্রেন ঢুকলো স্টেশনে। ট্রেনের রং নীল। রাতের অন্ধকারে জ্বলজ্বল করছিলো। তামিম ও মুনার কাছে সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগছে।
ট্রেনটা স্টেশনে থামলো। তারপর দরজা খুলে গেলো। তখন একজন লম্বা লোক বেরিয়ে এলেন। তাঁর পরনে অনেক আগের পুরোনো পোশাক। লোকটার চোখ দুটো জ্বল জ্বল করছে! তিনি গম্ভীর গলায় বললেন, ‘তোমাদের ভূতের ট্রেনে স্বাগতম! আমি এই ট্রেনের কন্ডাক্টর।’
লোকটিকে দেখে ভয়ে কাঁপছে তামিম ও মুনা। তবুও তারা দুরুদুরু বুকে ট্রেনে ওঠে।
ট্রেনের ভেতরটা একেবারে অন্যরকম! দেওয়ালগুলো ধোঁয়ার মতো দুলছে, আর বাল্ব থেকে সবুজ আলো বের হচ্ছে!
সিটে বসে থাকা যাত্রীদের দিকে তাকিয়ে দুই ভাইবোন চমকে উঠলো!
একজন পুরোনো তলোয়ার পরিষ্কার করছে। আরেকজন পায়ের কাছে বসানো কাঠের বাক্স থেকে চকচকে মুদ্রা বের করছে। তিনি দেখতে জলদস্যুর মতো। আর একটি ছেলে জানালার বাইরে তাকিয়ে হাসছে। মুনা ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করলো, ‘ওরা কি ভূত?’
কন্ডাক্টর হেসে বললেন, ‘কেউ ভূত, কেউ আত্মা। এ ট্রেনে সব যাত্রী রহস্যময়!’
খানিকটা পথ চলার পর ট্রেনটা থেমে গেলো। জানালার বাইরে তাকিয়ে তামিম অবাক। বাইরে চকলেটের শহর! একটি ছোট্ট ভূত খুশিতে লাফাতে লাফাতে ট্রেন থেকে নামলো।
ছোট্ট ভূতটা বললো, ‘এখানে কত্তো চকলেট, আমি চকলেট খেতে যাই।’
মুনা বললো, ‘আমরা কি নামতে পারি?’
কন্ডাক্টর মাথা নেড়ে বললেন, ‘হ্যাঁ, নামতে পারবে। তবে সাবধানে থেকো, এটা ভূতের শহর।’
তারা চকলেট শহরে নেমে মজার মজার চকলেট খেলো। সেখানে আইসক্রিমের গাছ ছিলো। হঠাৎ আকাশে মেঘ ঘনিয়ে এলো। যে কোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে। তাই সবাই ট্রেনে ওঠে। ট্রেন আবার চলতে শুরু করে। তখনই ট্রেনের সব আলো উধাও! কুয়াশার মতো কিছু ট্রেনের মধ্যে ঢুকে পড়েছে!
কন্ডাক্টর ফিসফিস করে বললেন, ‘এই জায়গা বিপজ্জনক, এখানে ভূতের আত্মারা থাকে। ওরা তোমাদের নাম ধরে ডাকতে পারে। তবে তোমরা সাড়া দেবে না।’
তামিম ও মুনা শক্ত করে একজন আরেকজনের হাত ধরে রাখে।
তখনই ওরা ফিসফিস ডাক শুনতে পেলো, ‘তামিম, মুনা, আমাদের সাথে এসো।’ একটি সাদা ছায়া তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
কন্ডাক্টর হুইসেল বাজিয়ে বললেন, ‘দৌড়াও!’ ওমনি ট্রেন দ্রুতগতিতে ছুটতে শুরু করে।
একটু যেতেই ট্রেন থেকে কুয়াশা উধাও। আবার সবুজ আলো জ্বলে ওঠে। তখন একটি ছেলে এসে বসল ওদের পাশে।
‘তোমার নাম কী?’ মুনা জিজ্ঞেস করল।
ছেলেটি বললো, ‘আমি নীলু। অনেক আগে ঝড়ের রাতে হারিয়ে গিয়েছি। তারপর থেকে এই ট্রেনে ঘুরে বেড়াই।’
তামিম বললো, ‘তুমি কখনো বাড়ি ফিরতে পারবে না?’
কন্ডাক্টর বললেন, ‘এ ট্রেন হারানো আত্মাদের বাড়ি পৌঁছে দিতে পারে।’
কন্ডাক্টরের কথায় তামিম ও মুনা ভাবলো, তারা নীলুকে সাহায্য করবে।
তারপর কন্ডাক্টর একটি জাদুর দরজা দেখালেন। তিনি বললেন, ‘এই দরজা দিয়ে ঢুকলে নীলুর অতীত দেখা যাবে।’
ওরা দরজা পার হতেই একটি পুরোনো গ্রাম দেখতে পেলা। সেখানে ছোট্ট নীলু দাদুর সাথে খেলছে। এরপর হঠাৎ ঝড় উঠলো। বাতাসে উড়ে গেলো গাছের ডাল, চারদিকে ধুলা উড়ছে। সেই ঝড়ে নীলু পথ হারিয়ে ফেলে!
মুনার চোখ ছলছল করে ওঠে। ও বললো, ‘নীলু, সেদিন তুমি বাসায় ফিরতে পারোনি?’
নীলু বললো, ‘এখন মনে পড়েছে, আমি পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম। এবার আমি ফিরতে চাই।’
ট্রেন থামে পরবর্তী স্টেশনে। সেখানে হলুদ আলো ছড়িয়ে আছে। কন্ডাক্টর বললেন, ‘এটাই নীলুর বাড়ি ফেরার পথ।’
নীলু বললো, ‘আজ থেকে তোমরা আমার বন্ধু। অনেক ধন্যবাদ। আমি এবার যাই।’
তারপর সে ধীরে ধীরে আলোয় মিলিয়ে গেলো। মুনা চোখ মুছে বললো, ‘আর কি কখনো নীলুর সাথে দেখা হবে?’
কন্ডাক্টর হাসলেন। খুব রহস্যময় সেই হাসি। তিনি বললেন, ‘হয়তো দেখা হবে, আবার নাও হতে পারে। এখন তোমাদের বাড়ি ফেরার সময় হয়েছে।’
ট্রেন ধীরে ধীরে বকুলপুর রেলস্টেশনে ফিরে এলো। তামিম ও মুনা ট্রেন থেকে নামে। তারপর পেছন ফিরে তাকালো। কিন্তু ট্রেন, কন্ডাক্টর–সব অদৃশ্য হয়ে গেছে! n

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • করোনায় আরো ২ জনের মৃত্যু
  • বেরোবি শিক্ষকের মুক্তি চায় রাবির সাংবাদিকতা বিভাগ
  • চট্টগ্রামে করোনায় একজনের মৃত্যু, মোট আক্রান্ত ৬২ 
  • ডেঙ্গুতে এক দিনে ৩৫২ জন হাসপাতালে, মৃত্যু ১
  • মাহামুদুল হকের মুক্তি দাবি রাবির সাংবাদিকতা বিভাগের
  • নারী সহপাঠীকে হলের কক্ষে নিয়ে যাওয়ায় ছাত্রের আসন বাতিল
  • বিগ ব্যাশে রিশাদ কেন আবার দল পেলেন
  • মায়াপাশে বাঁধা প্রাণ
  • ভূতের ট্রেন