উপাচার্য নিয়োগে মৃদু বিএনপি বা নিষ্ক্রিয় বিএনপিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে: ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
Published: 21st, June 2025 GMT
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, গত ৫ আগস্টের পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে মৃদু বিএনপি বা নিষ্ক্রিয়ভাবে বিএনপি করেন, এমন শিক্ষকদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর দায়িত্ব পালনকালে দেশের বেশির ভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ–উপাচার্য নিয়োগ হয়। আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তো একটা ট্যাগ (রাজনৈতিক পরিচয়) থাকেই; হয় সাদা দল, না হয় নীল বা অন্য কিছু। তবে আমি উপাচার্য নিয়োগের জন্য যাঁদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করেছিলাম, তাঁদের কিছু মানদণ্ডের কথা বলে দিয়েছিলাম।’
শিক্ষকের সাইটেশন সংখ্যা, সততা, দক্ষতা প্রভৃতি বিষয় দেখার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও মানদণ্ড ঠিক করে দিয়েছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ তো হওয়া যাবে না, কাজেই মৃদু বিএনপি হওয়া যাবে, অথবা নিষ্ক্রিয় বিএনপি হওয়া যাবে।
বিষয়টি নিয়ে বিএনপির মধ্যেও হাসাহাসি হয় বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘বিএনপির লোকজন বলে যে উনি (উপদেষ্টা) তো আমাদের (বিএনপি) লোক নেন না। এত দিন ধরে বঞ্চিত লোকজন রয়েছে, তাদের কাউকেই নেন না; উনি (উপদেষ্টা) শুধু নিষ্ক্রিয় বা মৃদু বিএনপি নেন। এই কথাটা কিন্তু খুব প্রচলিত আছে।’
উপাচার্য নিয়োগ দিতে গিয়ে যোগ্য লোক খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়েছিল বলে অনুষ্ঠানে জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা। ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, সবচেয়ে অসুবিধা হচ্ছে এতগুলো পদ খালি রয়েছে, কিন্তু এই পদে আমি কাকে নিয়োগ দেব, তা খুঁজে পাই না। কারণ, রাজনৈতিক দল না হওয়ায় আমরা লোকজন বেশি চিনি না।’
আজ রাজধানীর এক হোটেলে ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য ন য় গ উপদ ষ ট সরক র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান সংস্কার ও বিচার দেখতে চায় খেলাফত মজলিস
আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। তবে দলটি মনে করে, নির্বাচনের আগে সংস্কার, বিচার ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সম্প্রতি প্রকাশিত জুলাই ঘোষণাপত্রে বেশ কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে উল্লেখ করে সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে দলটি।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের নির্বাহী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দলটির পক্ষ থেকে এসব দাবি তোলা হয় বলে আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সভায় খেলাফত মজলিসের নেতারা বলেন, নির্বাচনের আগেই দৃশ্যমান সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি। গণহত্যাকারী পতিত ফ্যাসিস্টদের বিচারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রয়োজন। পেশিশক্তি, কালোটাকার প্রভাবমুক্ত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করতে হবে। জন–আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বৈঠকে বলা হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত জুলাই ঘোষণাপত্রে বেশ কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এগুলোর উল্লেখ করে বলা হয়, জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৩তম দফায় এক-এগারো সরকার ও ২০০৮ সালে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানোর পাতানো নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। ১৭তম দফায় অভ্যুত্থানের শহীদের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার উল্লেখ করা হয়েছে, যা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখিত সংখ্যা থেকে অনেক কম।
এ ছাড়া ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে রাতের আঁধারে আলেম-উলামা ও ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা, ২০১৮ সালে ছাত্রদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে ব্যাপক দমন-নিপীড়ন, ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে ২১ জন মানুষকে হত্যা—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো জুলাই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়নি বলে জানান খেলাফত মজলিসের নেতারা। অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র সংশোধনের দাবি জানিয়ে তাঁরা বলেন, এসব বিষয় সংশোধন করে জুলাই ঘোষণাপত্রে সংযুক্ত করা না হলে তা অপূর্ণাঙ্গ, অভ্যুত্থানের চেতনা পরিপন্থি ও জাতির জন্য হতাশাজনক হবে।
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, মাওলানা সাইয়্যেদ ফেরদাউস বিন ইসহাক, যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী প্রমুখ।