টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের মানতে হবে ১২ নির্দেশনা
Published: 21st, June 2025 GMT
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য ১২টি নির্দেশনা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। সংকটাপন্ন এই হাওরের জীববৈচিত্র্য, প্রকৃতি, পরিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষায় পর্যটকদের সচেতন করতে আজ শনিবার এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এদিকে টাঙ্গুয়ার হাওরের অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনকে শৃঙ্খলায় নিয়ে আসাসহ পরিবেশবান্ধব পর্যটন নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। শনিবার বিকেলে হাওরের জয়পুর এলাকায় ‘হাওরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এই দাবি জানানো হয়। পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা এই সভার আয়োজন করে।
সুনামগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে জেলার তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলায় টাঙ্গুয়ার হাওরের অবস্থান। এই হাওরের আয়তন ১২ হাজার ৬৫৫ হেক্টর। হাওরে ছোট–বড় ১০৯টি বিল আছে। হাওরের ভেতরে জালের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য খাল ও নালা। বর্ষায় সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। হাওর এলাকার ৮৮টি গ্রাম রয়েছে। হাওরের উত্তরে ভারতের মেঘালয় পাহাড়। এই পাহাড় থেকে ৩৮টি ঝরনা নেমে এসে মিশেছে টাঙ্গুয়ার হাওরে।
জেলা প্রশাসনের নির্দেশনাজেলা প্রশাসনের নির্দেশনাগুলো হলো—হাওরে পর্যটকদের জন্য ব্যবহৃত নৌযানের প্রশাসন নির্ধারিত নৌপথ ব্যবহার; পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য লাইফজ্যাকেট ব্যবহার; স্থানীয় গাইড ও পরিষেবা গ্রহণ; প্লাস্টিক পণ্য বর্জন; দূর থেকে পাখি ও প্রাণী পর্যক্ষেণ করা; ক্যাম্পফায়ার বা আগুন জ্বালানো থেকে বিরত থাকা; হাওরে উচ্চ শব্দে গানবাজনা না করা বা শোনা; হাওরের পানিতে অজৈব বা প্লাস্টিক–জাতীয় পণ্য ও বর্জ্য না ফেলা; মাছ ধরা, শিকার বা পাখির ডিম সংগ্রহ না করা ও পাখিদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে কোনো ধরনের বিঘ্ন নাœঘটানো; ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু বা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার না করা; গাছ কাটা, গাছের ডাল ভাঙা বা বনজ সম্পদ সংগ্রহ না করা; হাওরে সংরক্ষিত (কোর জোন) অংশে প্রবেশ না করা; মনুষ্যসৃষ্ট বর্জ্য হাওরে না ফেলা।
এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো.
শনিবার বিকেলে টাঙ্গুয়ার হাওরের জয়পুর এলাকায় এলাকাবাসীর সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পীযূষ পুরকায়স্থের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন টাঙ্গুয়ার হাওর সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. নূরে আলম, সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খসরুল আলম ও আহমদ কবির প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, পরিবেশের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকা ও স্বার্থ দেখতে হবে। পর্যটনের কারণে স্থানীয় মানুষ কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না বরং নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। হাওরের সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে। মূল হাওরে ইঞ্জিনচালিত নৌকার প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। সেখানে পর্যটকেরা যাবেন হাতে চালানো নৌকায় করে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট ঙ গ য় র হ ওর পর ব শ ও হ ওর র জ ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
দেবতাখুম ভ্রমণে ৮ দিনের নিরুৎসাহিতকরণ
টানা ভারি বষর্ণের ফলে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় বান্দরবানে রোয়াংছড়ি উপজেলায় পর্যটনকেন্দ্র দেবতাখুম সাময়িকভাবে ভ্রমণের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বুধবার (১৮ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ১৮ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত পর্যটকদের দেবতাখুমে ভ্রমণ থেকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে নদী, ছড়া ও ঝিরিতে পানির প্রবাহ বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এলাকাটিতে পাহাড় ধসের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই কেন্দ্রটি সাময়িকভাবে ভ্রমণের নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক সনাতন কুমার মন্ডল জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিবলয় আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
ঢাকা/চাইমং/এস