অশ্রু আর ভালোবাসায় সমকালের ব্যুরো প্রধান মামুন রেজাকে চিরবিদায় দিয়েছেন তার সহকর্মী ও গ্রামবাসী। শনিবার জোহরের নামাজের পর খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার ব্রহ্মগাতী সুতীরকূল ঈদগাহ ময়দানে তার দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় মামুন রেজার বাবা ও ছোট্ট ছেলের চোখের পানি ও হাহাকার দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সবাই। জানাযা শেষে ব্রহ্মগাতী গ্রামের সরদার বাড়ি পারিবারিক কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। খুলনাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা জানাযা ও দাফনে অংশ নেন। 

শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় খুলনা সদরের তারের পুকুর মোড় এলাকার বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মামুন রেজা। তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। মামুন রেজা চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের খুলনার আঞ্চলিক প্রধান প্রতিবেদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। চারবার খুলনা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। ছিলেন খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের দু’বারের সভাপতি। তার আকস্মিক মৃত্যুর খবরে খুলনার সাংবাদিক মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। হাসপাতাল ও বাসভবনে ছুটে যান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাত ১২টা ১৫ মিনিটে আল হেরা জামে মসজিদের সামনে প্রথম জানাযায় শত শত মানুষ অংশ নেন। সবার চোখে মুখে ছিল বিষ্ময় ও অকালে প্রিয়জন হারানো বেদনা। জানাযা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় খুলনা প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে। সেখানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে শেষ শুভেচ্ছা জানানো হয়। 

রাতেই মরদেহ গ্রামের বাড়ি দিঘলিয়া উপজেলার ব্রহ্মগাতী গ্রামে নিয়ে যান স্বজনরা। শনিবার সকাল থেকেই মামুনকে শেষ বারের মতো দেখতে ভিড় জমান গ্রামের মানুষ। সবার মুখেই ছিল মামুনের পরোপকারী স্বভাবের বন্দনা।

সমকালের প্রধান কার্যালয় থেকে সহযোগী সম্পাদক হকিকত জাহান হকি, অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, চ্যানেল ২৪ এর ঢাকা অফিস থেকে জ্যেষ্ঠ বার্তা সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম তুহিন, ন্যাশনাল ডেস্ক ইনচার্জ নাদিম হোসাইন, সহযোগী বার্তা সম্পাদক তানিম রহমান, খুলনা বিভাগের অধিকাংশ জেলা প্রতিনিধিরা পরিবারকে সান্ত্বনা জানাতে ছুটে যান।
 
এ সময় তারা মামুন রেজার একমাত্র সন্তান চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র জাওয়াদ রেজার লেখাপড়ায় সব ধরনের সহযোগিতা এবং সব সময় পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। আগামী ২৫ জুন সমকাল ও চ্যানেল ২৪ পরিবার খুলনার উদ্যোগে খুলনা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে নাগরিক শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

সহ-উপাচার্যকে আটকে বিক্ষোভ, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

বিকেল চারটার দিকে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা জুবেরী ভবনে ঢুকতে চাইলে সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারসহ শিক্ষার্থীরা তাঁদের সামনে দু-হাত প্রসারিত করে বাধা হয়ে দাঁড়ান। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

এরপর সহ-উপাচার্যসহ কর্মকর্তারা জুবেরী ভবনের দোতলায় একটি কক্ষে যান। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবনের সিঁড়ি ও বারান্দায় অবস্থান নিয়ে সহ-উপাচার্যকে আটকে রেখে বিক্ষোভ করছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য ও সরেজমিনে দেখা যায়, আজ বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন থেকে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছিলেন সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাঁর গাড়ি আটকে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা সহ-উপাচার্যের গাড়ির ইঞ্জিনের ওপর প্রতীকী ‘ভিক্ষা’ হিসেবে খুচরা টাকা দেন। প্রায় ২০ মিনিট সেখানে সহ–উপাচার্যকে গাড়িতে আটকে বিক্ষোভ করা হয়। এরপর গাড়িচালকের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা গাড়ির চাবি কেড়ে নিলে সহ-উপাচার্য গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে তাঁর বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। তখন শিক্ষার্থীরা তাঁর পিছু নেন। একপর্যায়ে দৌড়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা তাঁর বাসভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে সেখানে আটকা পড়েন সহ-উপাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।

আরও পড়ুনরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ শর্তে ফিরল পোষ্য কোটা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ-উপাচার্যের গাড়ি আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। শনিবার বেলা তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পোষ্য কোটা নিয়ে রাবিতে ছাত্র-শিক্ষক হাতাহাতি
  • সহ-উপাচার্যকে আটকে বিক্ষোভ, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি
  • রাজধানীর ৩০০ ফুট সড়কে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বাইসাইকেল আরোহী নিহত
  • ‘মোটরসাইকেল আমার ছেলেটার জীবন নিল’